সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন বা মৃত্যুদিন স্মরণের জন্য কোনও সরকারি সভাগৃহ পাচ্ছেন না প্রয়াত অভিনেতার কন্যা পৌলমী বসু! শুধু তা-ই নয়, গত দেড় বছর ধরে সৌমিত্রবাবুর ৩০ বছরের পুরনো নাট্যদল ‘শ্যামবাজার মুখোমুখি’র সমস্ত নাটক সরকারি প্রেক্ষাগৃহে ‘নিষিদ্ধ’।
এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে কথা বলেছেন সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী এবং নাট্যদলের সম্পাদক বিলু দত্ত। বিস্মিত পৌলমী বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু যে বাবাকে ভালবাসতেন তা-ই নয়, তিনি এখনও নিয়মিত আমাদের খোঁজ নেন। তাই তো এই ঘটনা অবাক করছে।” বিলুর দাবি, প্রতি বছর পুজোয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শাড়ি উপহার পান পৌলমী, সৌমিত্রবাবুর ছেলে সৌগত চট্টোপাধ্যায় পান পাঞ্জাবি। দশমীতে মিষ্টির বাক্স আসে। অথচ সরকারি মঞ্চ বা সভাগৃহ পান না তাঁরা!
কেন সৌমিত্রবাবুর পরিবারের সঙ্গে এই আচরণ? সবিস্তার জানিয়েছেন বিলু। তাঁর কথায়, “আরজি কর-কাণ্ডের সময় বাকিদের মতো পথে নেমেছিলাম আমরাও। আমাদের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার পর থেকেই সরকারি কোপ।” তিনি জানিয়েছেন, একা তাঁদের নাট্যদল নয়, যে যে নাট্যদল সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল সেই প্রত্যেক দলের সঙ্গে যুক্ত সব অভিনেতা এবং নাট্যকর্মী সরকারি মঞ্চে ‘নিষিদ্ধ’। প্রসঙ্গত, একই অভিযোগ এর আগে জানিয়েছিলেন সুদীপ্তা চক্রবর্তীও। তাঁর ছবি, নাটক ‘নন্দন’, ‘মধুসূদন মঞ্চ’-সহ সমস্ত সরকারি প্রেক্ষাগৃহ এবং সভাগৃহ বা মঞ্চে নিষিদ্ধ।
এ প্রসঙ্গে পৌলমীর আক্ষেপ, “নাটক এমনিতেই বাণিজ্যসফল বিনোদন নয়। তার উপরে বেসরকারি মঞ্চে মঞ্চস্থ করতে গিয়ে খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে। জানি না, এ ভাবে কত দিন চলতে পারব।” সৌমিত্রবাবুর এই নাট্যদলের সঙ্গে কাজ করছেন সুমন মুখোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার, চন্দন সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তাবড় নাট্যব্যক্তিত্ব। সেই নাট্যদল অন্যায় আচরণের শিকার।
আরও পড়ুন:
এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নজর আকর্ষণ করার চেষ্টা করবেন পৌলমী বা বিলু? বিলুর কথায়, “আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছোতে পারিনি।” তাঁর আরও দাবি, “আমার ধারণা, বিষয়টি উপরমহল থেকে ঘটানো হচ্ছে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি জানেন না।” বিলুর দৃঢ় বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রীর অজান্তেই পুরো বিষয়টি ঘটছে। তিনি জানলে এই ধরনের অরাজকতা ঘটতে দিতেন না।