ছোট পর্দায় রামের চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অভিনেতা গুরমিত চৌধুরী। কিন্তু এখন তিনি তাঁর সামাজিক কাজের মাধ্যমে ভক্তদের হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আগের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতি করছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা। হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা থেকে অক্সিজেনের বন্দোবস্ত, সবেতেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত এক গর্ভবতী মহিলার সঙ্কটজনক অবস্থায়, জীবনদায়ী ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। এই উদ্যোগের পিছনে কোনও বিশেষ ভাবনা কাজ করছিল? ‘‘আসলে আমরা সবাই মিলে এগিয়ে না এলে, এত বড় বিপদ থেকে বেরোতে পারব না। মিডিয়া থেকে একজন আমাকে ফোন করে একটি ব্যাপারে সাহায্য চান। অন্য প্রভাবশালী তারকাদের বদলে সে আমাকে ফোন করছে দেখে অবাকই হয়েছিলাম। সেই প্রথম, তার পর ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম কত লোকের সাহায্য দরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের হাহাকার দেখে মন বিষণ্ণ হয়ে গিয়েছিল,’’ বলছিলেন গুরমিত।
এখন তিনি একটা টিম বানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাপারটা কল সেন্টারের চাকরির মতো। সারাক্ষণ ফোন বাজতে থাকে। ক্রমাগত কথা বলে যেতে হয়। ভক্তরা আমাকে পর্দার হিরো বানিয়েছেন। এ বার আমার বাস্তবে হিরো হয়ে দেখানোর সময়।’’ অভিনেতা নিজের এই উদ্যোগকে উৎসর্গ করেছেন সোনু সুদের নামে। গুরমিত সম্প্রতি টুইট করেছিলেন পটনা, লখনউয়ে হাজার বেডের হাসপাতাল খুলবেন বলে। সে ব্যাপারে কতটা কাজ এগোল? ‘‘এটা অনেক বড় প্রজেক্ট। সবচেয়ে আগে জমি দেখতে হবে। তার পর চিকিৎসকদের টিম বানাতে হবে। আপাতত স্কুল-কলেজগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা বলছি, যাতে সেখানে কোনও অস্থায়ী ব্যবস্থা করা যায়,’’ বক্তব্য গুরমিতের। ইতিমধ্যে নাগপুরে তিনি একটি অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল খুলেও ফেলেছেন। কাজে নেমে বুঝতে পেরেছেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ফাঁকফোকরগুলো। সে প্রসঙ্গে গুরমিতের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দেশে রোগী পিছু চিকিৎসকের সংখ্যা কম। সেই ঘাটতি পূরণ করতে আমরা যদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করি, তা হলে দ্রুত কাজ হবে।’’
মহারাষ্ট্রে এই মুহূর্তে শুটিং বন্ধ। গুরমিতকে শেষ দেখা গিয়েছিল জ়ি ফাইভের ওয়েব মুভি ‘ওয়াইফ’-এ। তবে অভিনেতা এখন পর্দার কাজ নিয়ে ভাবছেনও না। দিনে দু’ঘণ্টার বেশি ঘুমোচ্ছেন না। বলছিলেন, ‘‘শুধু মনে হয়, কেউ সাহায্যের জন্য ফোন করল আর আমি সেটা মিস করে গেলাম। সারাক্ষণই তদারকি করে যাচ্ছি আমি।’’ প্রসঙ্গত, গত বছর গুরমিত ও তাঁর স্ত্রী দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন।