নীতিবোধ নিয়ে প্রশ্ন শ্রীলেখার
এই যে সিংহের মুখ, এই-ওই… এ সব নিয়ে কথা বলব কেন? আমি তো পশুপ্রেমী। অন্য অনেক কিছু নিয়ে আমার বলার আছে। যাঁরা ছবি করার স্বপ্ন নিয়ে চাকরি ছেড়ে ইন্ডাস্ট্রিতে এলেন তাঁদের হাতে কাজ নেই। কেন? না তাঁরা রাজনৈতিক ছাতার নীচে আসতে চাননি, কাজটুকু করতে চেয়েছিলেন। কলকাতায় এক শ্রেণির পরিচালক এবং প্রযোজক রয়েছেন, যাঁরা টাকা করতে এসেছেন। তাঁদের হাতে কাজ, রাজনৈতিক ভরসা, নন্দন সবই রয়েছে। সব সিন্ডিকেট। যত কিছুর ফায়দা নেওয়া যায়, তাঁরা লুটেপুটে খাচ্ছেন। আর এক শ্রেণি যাঁরা কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে রয়েছেন, তাঁদের হাতে কাজ আসে না। এর পর আবার লোকে বলে, ‘কেন ভাল বাংলা ছবি হয় না!’
যে বাংলা নিয়ে আগে আমরা গর্ব করতাম, সেই পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যান্য রাজ্যের কাছে এখন হাসির খোরাক হয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে বিহার, উত্তরপ্রদেশের তফাত কোথায়? আগে মানুষকে আত্মসমালোচক হতে হবে। আমরা নিজেরা কতটা সেয়ানা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি! কেবল নিজেরটুকু নিয়ে থাকব, নিজের ঘর পরিষ্কার রাখব, আশপাশের কিছু দেখব না, আর আশা করব সব ঠিক থাকবে তা তো হয় না। আমি এ কথা বলতে পারি না, যে আর তো কেউ নেই তাই খুনিকে সমর্থন করছি।
আমাদের চামড়াটা আসলে পুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যায় দেখলে আমরা হাসছি, মজা নিচ্ছি। কেউ প্রতিবাদ করছি না। আমরা মধ্যবিত্ত মানসিকতা ছেড়ে বেরোতে পারছি না। এটাই আমাদের মেরে ফেলছে। এটাই আমাদের কেকে-র মৃত্যুর পর রূপঙ্কর বাগচীকে কোণঠাসা করিয়েছে। আমাদের নীতিবোধ, আদর্শ, সৌজন্য কিংবা মানবিকতা বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। সেইটা আমাকে ভাবায়। আমায় একা করে। এই শহরে মেশার মতো মানুষ পাই না। হয় তাঁরা অন্তঃসারশূন্য, নয়তো দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে আছেন। তাই আমি আমার মতো থাকি।
বামপন্থী হয়ে আমি জীবনে হয়তো আখের গোছাতে পারিনি, তবে দিনের শেষে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখেছি। রাজনৈতিক নেতার কাছে গিয়ে আমায় হাত কচলাতে হয় না। কাজ না আসলে যা আছে আমার তাই দিয়ে চলে যাবে। এবং আগে থেকেই বলে যেতে চাই, মৃত্যুর পর যেন আমার দেহ নিয়ে ন্যাকামি না করা হয়। মরণোত্তর সম্মান আমি চাই না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy