Advertisement
E-Paper

শহর থেকে মফস্‌সল, ‘আরোহ’-র ডাকে বৃন্দগানের আন্তঃবিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় শামিল পড়ুয়ারা

কোনও ব্যান্ডের ফেস্টিভাল নয়, বৃন্দগানের প্রতিযোগিতা। বাংলা সংস্কৃতি ও বাঙালির ঐতিহ্য ছিল ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের মতো গানের দল। সেই বিস্মৃতপ্রায় পরম্পরাকেই বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ শ্রীকান্ত আচার্যের।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ২১:৪৪
Srikanta Acharya

শ্রীকান্ত আচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

যে কোনও সমাজের সংস্কৃতিই তার ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক। বিশেষত শিল্পের ক্ষেত্রে, চর্চা ও অভ্যাসের মাধ্যমেই বেঁচে থাকে পরম্পরা। বাঙালির ক্ষেত্রে, দুর্ভাগ্যবশত, সেই পরম্পরার সিংহভাগই আজ বিস্মৃতপ্রায়। ছোটবেলায় স্কুলে পড়াকালীন বার্ষিক অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত গাওয়ার মাধ্যমে হাতেখড়ি যে অভ্যাসের, সেই বৃন্দ গায়নের রেওয়াজ আজ প্রায় নেই বললেই চলে। আধুনিকতা ও প্রতিযোগিতার যুগে ব্যক্তি প্রতিভায় শান দেওয়ার প্রবণতা যতটা বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে সমষ্টিগত প্রয়াসের গুরুত্ব। বাংলা বৃন্দগানের চর্চায় এখন জমেছে ধুলোর পুরু স্তর। সেই ধুলো ঝেড়ে ফেলে বৃন্দগানের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন বাংলার অভিজ্ঞ সঙ্গীতশিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য। তাঁর সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্র ‘আরোহ’-র উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে ‘বাংলা গানের আন্তঃবিদ্যালয় বৃন্দ গায়ন প্রতিযোগিতা’। প্রতিযোগিতামূলক এই অনুষ্ঠানের নাম ‘ঐকতান’।

একটু একটু করে প্রতিযোগিতার আয়োজন শুরু হয়েছিল মাসখানেক আগে থেকেই। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিযোগিতার ভাবনা পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতায় গান নির্বাচন— সব মিলিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই ‘ঐকতান’ নিয়ে ব্যস্ত শ্রীকান্ত আচার্য ও তাঁ স্ত্রী ও গীতিকার অর্ণা শীল। প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডের জন্য নির্বাচিতের তালিকায় যেমন রয়েছে শ্রী শিক্ষা আয়তন, নব নালন্দা শিক্ষায়তনের মতো শহুরে বিদ্যালয়, তেমনই জায়গা করে নিয়েছে অমৃত বিদ্যালয়ম, বৈদ্যবাটি চারুশিলা বোস বালিকা বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। আগামী ২৬ অগস্ট রাজডাঙা ক্লাব সমন্বয়ের প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘ঐকতান’-এর ফাইনাল পর্ব।

আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রতিযোগিতার আয়োজক শ্রীকান্ত আচার্য বলেন, ‘‘বৃন্দগানের চর্চা আজকাল অনেক কমে গিয়েছে। সমবেত সঙ্গীত বলতে শুধুই রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া। আলাদা করে অন্য ধরনের গানও কিন্তু সমষ্টিগত ভাবে গাওয়া যায়, যে চর্চাটা ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার’ তৈরি করেছিল। ওই পরম্পরাটা এখন আর নেই। আমরা সমবেত সঙ্গীতটাকেই তুলে ধরতে চাইছি।’’ বিদ্যালয় স্তরে কচি বয়স থেকেই সমষ্টিগত প্রয়াসের শিক্ষা পায় পড়ুয়ারা। সমবেত সঙ্গীতের চর্চা হোক বা দলগত নাটক— ইত্যাদির মাধ্যমেই সেই বোধ তৈরি হয় তাদের মধ্যে। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষা ও সাফল্যের ভিড়ে সেই মহড়ার সুযোগ অনেক কম। তার ফলে, পড়ুয়াদের বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও কোথাও না কোথাও খামতি থেকে যাচ্ছে বলে ধারণা শ্রীকান্ত আচার্যের স্ত্রী ও গীতিকার অর্ণা শীলের। তিনি জানান, ‘ঐকতান’ পড়ুয়াদের মধ্যে সেই বোধকে জাগিয়ে তোলার একটা প্রয়াস। তাঁর কথায়, ‘‘বৃন্দগানের চর্চা তো পরে হবে, আগে পড়ুয়ারা ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে পারফর্ম করার ভাবনা নিয়ে বড় হোক। তবেই তো পরবর্তী কালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবে।’’ আগামী ২৬ অগস্ট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্ব। রাজডাঙা ক্লাব সমন্বয়ের প্রেক্ষাগৃহে প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্বে বিচারকের আসেন দেখা যাবে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণ সেন বরাট, গায়িকা অন্তরা চৌধুরী, ‘সা রে গা মা পা’ খ্যাত রথীজিৎ ভট্টাচার্যকে।

Srikanta Acharya Singer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy