শুক্রবার উত্তর কলকাতার ‘মিনার্ভা’ থিয়েটারে মহড়া হয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবির। আর কিছু দিন পরেই শুরু হবে শুটিং। চলছে জোরদার প্রস্তুতি। সৃজিতের নতুন ছবিতে যেন তারকার মেলা। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, ব্রাত্য বসু, দিব্যজ্যোতি দত্ত— সহ অনেকের লুকই প্রকাশ্যে এসেছে। এখানেই শেষ নয়। এই ছবিতে রয়েছে আরও চমক। চেনা অভিনেতাদের এই লুকে আগে হয়তো কেউ কখনও দেখেননি। একটি ছবির জন্য অভিনেতাদের এত ধরনের লুক! আগে হয়তো এমনটাও দেখা যায়নি। কয়েক ঘণ্টার ছবিতে এক জন অভিনেতাই ধরা দেবেন নানা ধরনের অবতারে। এই ছবিতে তিনটি সময়কাল তুলে ধরার চেষ্টা করবেন পরিচালক। শ্রীচৈতন্যের সময়কাল, গিরিশ ঘোষের সময়কাল এবং বর্তমান সময়। প্রতিটি সময়ে এসেছে অনেক পরিবর্তন। সেই অনুযায়ী লুক তৈরি করা হয়েছে। কিছু দিন আগে আনন্দবাজার ডট কমই প্রথম জানিয়েছিল এই ছবিতে দেখা যাবে অভিনেতা দেবদূত ঘোষকে।
এই ছবিতে দেবদূতকে দেখা যাবে তিনটি ভিন্ন চেহারায়। এক দিকে তিনি রাজা, অন্য দিকে তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গী। আবার তিনিই আধুনিক কালের এক ‘ডিওপি’। রাজা প্রতাপরুদ্র হিসাবে তাঁকে দেখা যাবে এ কথা আগেই বলেছিলেন প্রযোজক রানা সরকার। সেই সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের বন্ধু হিসাবে দেখা যাবে তাঁকে। এই চরিত্রের জন্য তাঁকে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবী, মোটা পাকা গোঁফে সাজিয়েছেন পরিচালক। আবার অন্য একটি চরিত্রে তিনি আদ্যোপান্ত শহুরে মানুষ। চোখমুখে যার ছবি স্পষ্ট।
সৃজিতের ছবিতে দেবদূতের লুক। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার ‘মিনার্ভা’ থিয়েটারে শুভশ্রীর সঙ্গে মহড়ায় ব্যস্ত ছিলেন কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পুর এলাকার কাজ তো আছেই, সেই সঙ্গে ধারাবাহিক, সিনেমার কাজও সমান তালে সামলাচ্ছেন তিনি। এ ছবিতেও তাঁকে দেখা যাবে তিন ধরনের চরিত্রে। ছবিতে তিনি রানিমা, থিয়েটারের বিষ্ণুপ্রিয়া আবার শিল্প নির্দেশক।
অনন্যার তিনটি লুক কেমন লাগছে? নিজস্ব চিত্র।
যে হেতু ছবির মধ্যে একটা ছবি তৈরির গল্প রয়েছে, তাই চরিত্রগুলি সেই ছাঁদেই বুনেছেন পরিচালক। চরিত্রদের লুক ডিজ়াইনের দায়িত্বে ছিলেন সাবর্ণী দাস। এর আগে বহু ছবির লুক ডিজ়াইন করেছেন তিনি। সাবর্ণী বললেন, “বহু দিন ধরে সৃজিত এই ছবিটার পরিকল্পনা করেছেন। বহু দিন ধরে এই ছবিটা আমিও লালন করেছি। তাই একটা প্রস্তুতি ছিল। সে সময় কে কী ধরনের পোশাক পরতেন সবটা নিখুঁত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমরা।”
থিয়েটারে এই দুই চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে নীলকে। নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে নীল ওরফে সুজন মুখোপাধ্যায়কে দর্শক দেখবেন অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি রূপে। গিরিশ ঘোষের নাট্যদলের তিনিই ছিলেন হর্তাকর্তা। সে যুগের বড় অভিনেতা, অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। আবার শ্রীচৈতন্যদেবের যে কালপর্ব পরিচালক পর্দায় ফুটিয়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন, সেখানে নীলকে কাশী মিশ্র হিসাবে সাজিয়েছেন তিনি। পুরীর যে বাড়িতে চৈতন্য থেকেছিলেন সেই বাড়ির পণ্ডিত ছিলেন কাশী মিশ্র। তিনিই থাকতে দিয়েছিলেন চৈতন্যকে। আবার ২০২৫ সালে নীলের লুক দেখে স্পষ্ট সেটা এখনকার গল্পই বলবে। যেখানে ভিএফএক্স সুপারভাইজার হিসাবে দেখা যাবে তাঁকে।
তিন সময়কালে নীল মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
অভিনেতা সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা যাবে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। এক দিকে তিনি যেমন হয়েছেন থিয়েটারের বিদ্যাধর। আবার ২০২৫ সালের সময় কালে তাঁকে দেখা যাবে সহকারী পরিচালকের চরিত্রে। ছবিতে রূপটান শিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন সোমনাথ কুণ্ডু। এখন যিশু সেনগুপ্তর লুক দেখার অপেক্ষায় সবাই।
সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন লুক। নিজস্ব চিত্র।