সিকিমে টিম ‘কৃষ্ণকলি’।
স্টুডিও ছেড়ে ধারাবাহিকের পুরো টিম মাঝে মাঝে পাড়ি দেয় আউটডোর। দর্শকরা দেখতে পান চেনা চরিত্রেরা পৌঁছে গিয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক লোকেশনে। সেই নতুন লোকেশনেও জমে উঠছে ড্রামা। একই লোকেশনের দৃশ্য দেখতে দেখতে অভ্যস্ত দর্শকরাও নতুন লোকেশন দেখে স্বস্তি পান।
সম্প্রতি ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের টিম এক সপ্তাহের আউটডোর শুটিংয়ে চলে গিয়েছিল সিকিম। শুটিংয়ে গিয়ে কী করলেন শ্যামা ও নিখিল? কেনই বা কলকাতা ছাড়লেন শ্যামা? টিমের সদস্যরা শুটিংয়ের ফাঁকে কী করলেন?
ধারাবাহিকের গল্পে দেখা যাচ্ছে, শ্যামা নিলামে একটা প্রাসাদ কিনেছেন উত্তরবঙ্গে। সেই প্রাসাদের উদ্বোধন করতেই তিনি পুরো পরিবার নিয়ে কলকাতা ছেড়ে প্রাসাদে গিয়েছেন। প্রাসাদের উদ্বোধন ও পরিবারের সঙ্গে আউটিং, দুটোই হয়ে যাবে একসঙ্গে। সেই অংশের শুট করতেই ‘কৃষ্ণকলি’ টিমের সিকিম যাত্রা।
বরফের মধ্যে গ্যাংটকে শুটিং তো হল। কিন্তু ইউনিট সূত্রে জানা গেল, শ্যামা ওরফে তিয়াসা শুটিং শেষে পাহাড়ি রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে গান গাইছেন। ব্যাপারটা কী?
উত্তর দিতে গিয়ে হেসেই কুটিপাটি তিয়াসা। বললেন, ‘‘ব্যাপারটা আর কিছুই নয়, আমার লিপে একটা গান ছিল যেটা শ্যামার গুরুমা রুক্মিণীর মেয়ে রাধারানির হয়ে গাইতে হবে। সেই গানটাই মোবাইলে চালিয়ে প্র্যাকটিস করছিলাম।’’
আরও পড়ুন, মা নাকি বউ, কাকে বেশি ভয় পান অভিষেক?
একা একা রাস্তায় গান প্র্যাকটিস করছিলেন? তিয়াসা হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘না না, একা ছিলাম না। টিমের সবাই মিলে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। একা কিছু করিনি। সবসময় সবাই একসঙ্গে ছিলাম।’’
শ্যামা না হয় রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে বেড়াচ্ছিলেন। ‘কৃষ্ণকলি’র নায়ক নিখিল ওরফে নীল ভট্টাচার্য সিকিমে শুটিং ছাড়া কী করলেন?
নিখিল একেবারে আপ্লুত, ‘‘সেই কোন ছোটবেলায় বরফের মধ্যে ঘুরতে গেছি। তার পর এই আউটডোরে গিয়ে বরফ পেলাম। দারুণ একটা ব্যাপার! বরফের বল বানিয়ে খেলেছি। পুরো ইউনিট বরফের বল ছোড়াছুড়ি করেছি। বরফ নিয়ে আদিখ্যেতার চূড়ান্ত আর কি!’’
আর কী করলেন? তিনি উত্তেজিত, ‘‘ভাবতে পারিনি যে গ্যাংটকের এমজি মার্গে শুটিং দেখতে এত ভিড় হতে পারে! এত ভিড় হয়েছিল যে আধ ঘণ্টারও বেশি শুটিং বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বাঙালি, অবাঙালি পর্যটকরা আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ভিড় করে দাঁড়িয়েছিলেন। জানেন, মুম্বই থেকে আসা কিছু অবাঙালি পর্যটক ‘কৃষ্ণাকালি, কৃষ্ণাকালি’ বলতে বলতে আমাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চাইলেন? তো ছবি তোলা শেষ করে তবেই আমরা শুটিং করতে পারলাম সে দিন।’’
আবার কবে আসবে এমন একটা আউটডোর, ভাবছেন শিল্পীরা।
শুটিং প্যাক আপ হয়ে গেলে কী করতেন? নিখিল বললেন, ‘‘ওরে বাবা! ঘোরাঘুরি, খাওয়া, শপিং, পিকনিক, নাচ-গান, কিচ্ছু বাদ যায়নি। আমাদের বড়দা অরুণ (কৌশিক ভট্টাচার্য) দারুণ রান্না করেন। প্যাক আপ হলেই তিনি রান্না করতেন। চিকেন-টিকেন সহযোগে পুরো পিকনিক মোডে চলে যেতাম আমরা। তার মধ্যে অন্তাক্ষরি চলছে, এ ওকে পিঞ্চ করছি, নাচছি।টিকটক বলে একটা অ্যাপ আছে না? ওটাতে আমরা মজা করে প্রচুর ভিডিয়ো তুলেছি। অনেক দিন পরে একটা দুর্দান্ত আউটিং হল। অত শীতে ভোর চারটের সময় শুট করে সারা দিন কাজ করার পরেও আমরা কেউ ক্লান্ত হইনি। কি দারুণ লোকেশন! প্রকৃতি আমাদের সহায় ছিল। এক দিনও বৃষ্টিবাদলা কিচ্ছু হয়নি। নির্বিঘ্নে শুট করতে পেরেছি।’’
তিয়াসা যোগ করলেন, ‘‘প্রথম দু’দিন খুব ঠাণ্ডা লাগছিল। ছাঙ্গুতে শুট করছিলাম তো। খুব ঠাণ্ডা। তারপর শীত উপভোগ করেছি। কলকাতায় সাধারণত ভোরবেলা কল টাইম থাকে না। ওখানে শুটিংয়ের প্রেসার ছিল। ভোর চারটেয় কল থাকত। কিন্তু সব মিলিয়ে এত মজা হয়েছে যে শুটিংয়ে চাপ সে ভাবে বুঝতেই পারিনি। সঙ্গে কৌশিকদার অসাধারণ রান্না, আড্ডা...বুঝতেই পারছেন... কমপ্লিট আউটিং আর কি।’’
আরও পড়ুন, প্রেম বা বিয়ে করার জন্য কলকাতায় ছেলে পাওয়া মুশকিল: পায়েল
আপনারা প্রচুর শপিং করেছেন শুনলাম?
নিখিল বলে উঠলেন, ‘‘শপিংয়ের দায়িত্ব পুরোপুরি আমার নায়িকা নিয়ে নিয়েছিল। আমি নিজে একটা গ্লাভস ছাড়া কিছু কিনিনি। খুব ঠাণ্ডা লাগছিল তাই...।’’
কথাটা তিনি হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন। নায়িকা হাসছেন। হাসতে হাসতেই শ্যামা বললেন, ‘‘প্রচুর শপিং মানে ওখানে যা বেশি পাওয়া যায়...বাড়ির সবার জন্য গরম জামাকাপড় কিনলাম। আর মনাস্ট্রির বড় বড় ঘণ্টা হয় না? তার ছোট ছোট রেপ্লিকা কিনেছি। কিছু শো পিস কিনেছি। নিজের জন্যও কিছু শীতের পোশাক কিনেছি।’’
সিকিমে ‘রথ দেখা কলা বেচা’ সারা। টিম কৃষ্ণকলি বরফের স্পর্শ নিয়ে আবার কলকাতায়। আবার শহরের ধুলো, ধোঁয়া, উষ্ণতা মাখতে মাখতে ব্যস্ত সময়-সরণিতে ঢুকে যাওয়া। অপেক্ষা।
আবার কবে আসবে এমন একটা আউটডোর!
(টলিউডের প্রেম, টলিউডের বক্স অফিস, বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমার তরজা -বিনোদনের সব খবর আমাদের বিনোদন বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy