‘রাজা’র সঙ্গে দেখা হয়েছিল ‘গজা’র, অনেক দিন পর। আর সেই আনন্দ-মুহূর্তের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে ‘রাজা’ সৌরভ চক্রবর্তী লিখলেন, “আমি তো দৌড়বই, না হলে তুই জিতবি কেমন করে?”
২০০৬-০৭ সাল থেকে ছোট পর্দায় দেখা দিতে শুরু করে ‘রাজা অ্যান্ড গজা’। দুই বন্ধুর আপাত নির্বোধ কাণ্ডকারখানার মধ্যে ছিল মনুষ্যত্ববোধের জয়গান। তাই জনপ্রিয়তাও বেড়েছিল হু হু করে। গজারূপী অম্বরীশ ভট্টাচার্যকে তার পর আর কখনও ভুলতে পারেননি দর্শক। কিন্তু ‘রাজা’ কি হারিয়েই গেলেন, যাকে ছাড়া ‘গজা’ চলতেই পারত না! আনন্দবাজার ডট কমকে অভিনেতা সৌরভ চক্রবর্তী জানালেন অভিনয়, বন্ধুত্ব থেকে রাজনীতির সব কথা।
সৌরভ-অম্বরীশের হৃদ্যতা আজও অটুট। ২০০৬ সালে হঠাৎই অডিশন দিয়ে সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। তার পর থেকেই বন্ধু। এখনও যোগাযোগ রয়েছে দু’জনের। সৌরভ বলেন, “যখনই এ দিকে কোনও কাজে আসে অম্বরীশ, তখনই আমার বাড়ি চলে আসে। এমনও হয়, আমি বাড়ি নেই। ও মায়ের সঙ্গে দেখা করে, গল্পগুজব করে ফিরে যায়। সে দিন দেখা হয়ে গেল আমাদের।”
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে যে সংলাপ তুলে ধরেছিলেন সৌরভ তা ধারাবাহিকের এক বিশেষ পর্বের। অভিনেতাই মনে করিয়ে দেন, স্কুলশিক্ষকের চিকিৎসার জন্য অর্থের জোগাড় করতে দৌড় প্রতিযোগিতায় নাম দিতে হয়েছিল গজাকে। কিন্তু ওই চেহারায় দৌড়ে সে পুরস্কারমূল্য জিতে নেবে, এ কথা কেউ ভাবেননি। আসলে রাজাই আগে আগে দৌড়ে পথ নির্দেশিকাগুলি ঘুরিয়ে বাকি প্রতিযোগীদের বিভ্রান্ত করে দিয়েছিল সে দিন। সেখানেই ছিল এই সংলাপ, “আমি তো দৌড়বই, না হলে...”
সৌরভ কি ছিটকে গিয়েছেন জনপ্রিয়তার দৌড় থেকে?
এমনটা মনে করেন না অভিনেতা। তাঁর দাবি, কোনও দিনই তিনি পরীক্ষা বা নম্বরের কম-বেশি নিয়ে মাথা ঘামাননি। বরং মনুষ্যত্বই তাঁর কাছে অধিক মূল্যবান। তিনি বলেন, “এই তো সে দিন এক ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে দেখা হল, সঙ্গে তার শিশুপুত্র। আমায় দেখিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করল, ‘বল তো কে?’ প্রথমে ভেবেছিলাম আমার অভিনয়ের প্রসঙ্গে তুলছে বোধহয়। কিন্তু বন্ধু তার ছেলেকে মনে করিয়ে দিল, ছোটবেলায় কবে কোন পরীক্ষার সময় ওর কলমের কালি ফুরিয়ে যাওয়ায় আমি সাহায্য করেছিলাম।” সৌরভ মনে করেন, সকলে তাঁকে এ ভাবে মনে রাখলেই তিনি খুশি।
সেই কারণেই কি রাজনীতির পথে পা বাড়িয়েছিলেন এক দিন? সৌরভ দাবি করেন, রাজনীতি তিনি করতে চাননি কোনও দিনই। কারণ সেখানে তাঁর কোনও দক্ষতা নেই। তবে তিনি চেয়েছিলেন এক বিশেষ লক্ষ্য পূরণ করতে। অভিনেতার কথায়, “আশপাশের পরিস্থিতি দেখে আমার মনে হয়েছিল মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রয়োজন। তাই একটি রাজনৈতির দলের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেছিলাম। তবে মূলধারার রাজনীতি নয়। বরং দু’টি প্রচারমূলক ছবি বানিয়েছিলাম আমি। একটি রোড শো-ও হয়েছিল আমার পরিকল্পনায়।” কিন্তু এক বছরের বেশি সেই রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ রাখতে পারেননি, চাননি। কেন?
সৌরভ বলেন, “কিছু দিন পরেই বুঝলাম আমি যা চাইছি, তা ওখানে সম্ভব নয়। আমার মতো করে হয়তো আশপাশের মানুষেরা ভাবছেন না। তাই সরে আসাই সমীচীন বোধ করেছি।”
আপাতত সৌরভ ব্যস্ত তাঁর ছোট পর্দার কাজ নিয়ে। পাশাপাশি হাত দিয়েছেন ওয়েব সিরিজ়ের কাজে। এ বছরই একটি ছবি পরিচালনার কথাও ভাবছেন সৌরভ। শীঘ্রই শুরু হবে তার কাজ, জানিয়েছেন অভিনেতা।