শতাধিক বছর আগে ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ তাঁর ‘আলিবাবা’ নাটকে গান লিখেছিলেন, ‘মার ঝাড়ু মার, ঝাড়ু মেরে ঝেঁটিয়ে বিদায় কর..!’ এ বার গ্রুপ থিয়েটারের কর্মীদের দিয়ে সেই কাজটাই করিয়ে নিতে চায় নরেন্দ্র মোদীর সরকার!
কেন্দ্রীয় অনুদান পেতে গেলে এ বার নাট্য সংস্থাগুলিকে সামিল হতেই হবে প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের আন্ডার সেক্রেটারি আই এ কমল সম্প্রতি চিঠি দিয়ে বাংলার ৬৮টি গ্রুপ থিয়েটারকে এই শর্তের কথা জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তির ১৪ নম্বরে থাকা ওই শর্তে বলা হয়েছে, ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ভাবনা রূপায়ণ ও প্রচারের দায়িত্ব নিতে হবে অনুদান প্রাপকদের। ২০১৯ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্কুল, হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশনে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। তার ছবি ও সংশ্লিষ্ট শংসাপত্র (কেন্দ্রকে) জমা দিতে হবে।’ চিঠিতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শর্ত পূরণ করলে তবেই মিলবে অনুদান।
অনুদান পেতে নানা শর্ত মানতেই হয়, মানছেন বাংলার নাট্যকর্মীরা। কিন্তু স্কুল, হাসপাতাল বা বাসস্ট্যান্ড পরিষ্কারের ছবি তুলে পাঠানোর উপরেও সেই অনুদান পাওয়া-না পাওয়া নির্ভর করছে জেনে বাংলার নাট্যব্যক্তিত্বদের একটা বড় অংশই অসন্তুষ্ট! রাজ্যের মন্ত্রী তথা নাট্যকার-নির্দেশক ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার থিয়েটারে অনুদান বন্ধ করে দিতে চাইছে। সাদা বাংলায় কেন্দ্র বলছে, ‘অনুদান দেব, যদি মোদীর নামে জয়ধ্বনি দাও। না হলে অনুদান বন্ধ।’ এ তো তালিবানি ফরমান!’’ অভিনেতা-নির্দেশক কৌশিক সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেন্দ্রের এই শর্ত অসম্মানজনক। আপত্তিকরও বটে! চলচ্চিত্রের মতো নাটকে টাকা-পয়সা আসে না, সরকার এটা জানে। আর জানে বলেই এমন শর্ত আরোপ করেছে।’’ কৌশিকের অভিযোগ, বিজেপি সরকার আসার পর থেকেই অনুদানের টাকা দেওয়া নিয়ে নানা টালবাহানা শুরু হয়েছে।