আদালতে তারিখের পর তারিখের চক্কর। টলিপাড়ায় দিনের পর দিন! বুধবারেও মিলল না ডিরেক্টর্স গিল্ড-ফেডারেশন কাজিয়ার সমাধানসূত্র। এ দিনও নীরব ফেডারেশন। না পরিচালক, না সংবাদমাধ্যম-- কাউকে সাড়া দেননি সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। এ দিনও ছোট পর্দার পরিচালক শ্রীজিৎ রায়ের সেট তৈরির কাজে যোগ দেননি কর্মীরা। পূর্বনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেন গিল্ড-এর সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়, রাজ চক্রবর্তী, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচাৰ্য, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীজিৎ রায়-সহ সব মাধ্যমের পরিচালকেরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আরও একটি দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও ফেডারেশনের বক্তব্য শোনার জন্য অপেক্ষা করা হবে।
বুধবারও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া না পাওয়ায় ফের বৈঠকে বসেন পরিচালকেরা। সাড়ে তিন ঘন্টার বৈঠক সেরে সুব্রত, সুদেষ্ণা, অনির্বাণ, জয়দীপ, শ্রীজিৎ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রত্যেকের কথায় এ দিন ক্ষোভ ঝরে পড়েছে। অনির্বাণ বলেছেন,“ফেডারেশনের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, আমরা যেন অপ্রয়োজনীয়। একই ভাবে পাশে পাচ্ছি না প্রযোজক, চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে। আমরা কি এই আচরণের যোগ্য?” সাংবাদিকদের মাধ্যমে তাঁর অনুরোধ, “এটি শুধুই পরিচালক বা টেকনিশিয়ানদের সমস্যা নয়। এটি প্রযোজকদেরও সমস্যা। তাই তাঁদেরও এ বার এগিয়ে আসতে হবে।”

গিল্ড-এর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি অনির্বাণ ভট্টাচাৰ্য, সুব্রত সেন, সুদেষ্ণা রায়। —নিজস্ব চিত্র।
একই কথা সুব্রত এবং সুদেষ্ণার। তাঁদের কথায়, “পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ বা শ্রীজিৎ-- কেউই জানেন না, তাঁদের দোষ কী? কৌশিক, জয়দীপের কাজ বন্ধের প্রসঙ্গে অসঙ্গতি দেখানো হয়েছে। শ্রীজিৎ কোন দোষে দুষ্ট? কেউ জানেন না!” উভয়েই তাই ফেডারেশনের কাছে অনুরোধ রেখেছেন, তিন পরিচালকের শুটিং বন্ধের প্রকৃত কারণ যেন এ বার জানানো হয়।
বেশ কয়েক দিন ঘোরানোর পর বুধবার সন্ধ্যায় জয়দীপের ওয়েব সিরিজের যৌথ প্রযোজনা সংস্থার কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত কর্তা-ব্যক্তিরা। পরিচালকের অভিযোগ, কিছু অবান্তর প্রশ্ন করা ছাড়া কাজের কাজ কিছুই করেননি তাঁরা! বিরক্ত শ্রীজিৎ-ও। তাঁর দাবি, ফেডারেশনের এই অকারণ হেনস্থা, মিথ্যা অভিযোগ আর মেনে নিতে রাজি নন তিনি। এ বার সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চান তিনি।
অনির্বাণেরা যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি তখন বাইরে বাকি পরিচালকদের সঙ্গে ছিলেন রাজ, পরমব্রত। এ ভাবে আর কত দিন অপেক্ষা করবেন পরিচালকেরা? আনন্দবাজার অনলাইনের এই প্রশ্নে রাজ বলেন, “সমাধান খুঁজতে গেলে ধৈর্য ধরতে হয়। প্রয়োজনে আরও চার দিন আমরা অপেক্ষা করব। যাতে কর্মনাশা বন্ধ এড়ানো যায়।” গত বছরের শেষে যে দ্বন্দ্ব ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই কাজিয়া আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল কেন? এই প্রশ্নের জবাব অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, আগামীকাল দাসানি স্টুডিয়োতে নাকি ধর্ণায় বসতে পারেন পরিচালক-অভিনেতারা? পরমব্রতর জবাব, “গিল্ড এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা সংঘাত নয়, বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান চাই। আলোচনায় সমাধান খুঁজতে আগ্রহী।”