মা তাঁকে জীবনে লড়াইয়ের শিক্ষা দিয়েছিলেন। মায়ের অনুপস্থিতিতে মন ভারাক্রান্ত অভিনেত্রী-প্রযোজক নীলাঞ্জনা শর্মার। গত বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন নীলাঞ্জনার মা অঞ্জনা ভৌমিক। বুধবার মায়ের বাৎসরিক শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করলেন নীলাঞ্জনা।
অঞ্জনার প্রয়াণের পর বছর ঘুরতে চলেছে। কিন্তু মায়ের অনুপস্থিতি এখনও অনুভব করেন নীলাঞ্জনা। বললেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে মানুষ বাস্তবকে বুঝতে শেখে। আমিও সময়ের সঙ্গে নিজেকে বোঝনোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আজকে সেই শূন্যতা আরও বেশি করে আমার মনকে নাড়া দিয়ে গেল। আজকে মায়ের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোই বেশি করে মনে পড়ছে।’’
বুধবার নীলাঞ্জনার বড় মেয়ে সারা কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে। অন্য দিকে, ছোট মেয়ে জ়ারার স্কুলের পরীক্ষা চলছে। তাই মায়ের শ্রাদ্ধ প্রায় একা হাতেই করেছেন নীলাঞ্জনা। বললেন, ‘‘আমার ছোটমাসি, মেসোমশাই, মামিমা, মাসতুতো দাদা-বৌদিরা আমার সঙ্গে ছিলেন। মা গুড়ের রসগোল্লা খেতে খুব পছন্দ করতেন। মামিমা নিয়ে এসেছিলেন।’’
আরও পড়ুন:
শেষ জীবনে অঞ্জনার স্বাস্থ্যের অবনতি এবং তার পর প্রয়াণ— মায়ের অনুপস্থিতি জীবন সম্পর্কেও নতুন পাঠ দিয়েছে নীলাঞ্জনাকে। বলছিলেন, ‘‘এই রকম দিনে আরও বেশি করে বুঝতে পারি যে, আমি কতটা একা। সহানুভূতি অনেকেই জানাবেন। কিন্তু আমার দুঃখের সঙ্গে তো আমাকেই লড়াই করতে হবে।’’
নীলাঞ্জনা জানালেন, অঞ্জনা ছিলেন দৃঢ়চেতা। জীবনে লড়াইয়ের পাঠ তিনি মায়ের থেকেই পেয়েছিলেন। নীলাঞ্জনার কথায়, ‘‘সারা এবং জ়ারার জন্ম— মা আমার পাশে এমন ভাবে ছিলেন, তা ১০ জন পুরুষের সমান। মায়ের থেকেই শিখেছি যে, জীবনে পিছন ফিরে তাকাতে নেই। জীবনের কোনও সঙ্কট এলে তখন একমাত্র মাকেই মিস্ করি।’’
গত এক বছরে নীলাঞ্জনার নিজের জীবনও চর্চায় থেকেছে। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন, কঠিন সময়ে মা তাঁর পাশে থাকেন। নীলাঞ্জনা বললেন, ‘‘মা চলে যাওয়ার পর আমি যে যে ব্যক্তিগত সমস্যার মোকাবিলা করেছি, অঞ্জনা ভৌমিকের মেয়ে না হলে হয়তো পারতাম না। কোচবিহারের আরতি ভৌমিক (অঞ্জনার পূর্বনাম) এবং অঞ্জনা ভৌমিক— দু’জনে মিলে হয়তো আমাকে এই ভাবে তৈরি করে দিয়েছেন।’’ বুধবার কাজ থেকে ছুটি নিয়েছেন নীলাঞ্জনা। সারা দিনটা তিনি নিজের মতো করেই কাটাবেন।