কর্মনাশা বন্ধের পথেই কি এগোচ্ছে টলিউড? গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাকিয়ে টলিউড। সময় যত এগোচ্ছে ততই রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা বাড়ছে। পরিচালক গিল্ড বনাম ফেডারেশন দ্বন্দ্বের ফয়সালা কী? যুযুধান দুই পক্ষ কি মুখোমুখি আলোচনায় বসবে? না কি আলোচনার অভাবে টেকনিশিয়ানদের মতোই পরিচালকেরাও অসহযোগিতার পথেই হাঁটবেন? আপাতত এই প্রশ্ন ঘুরছে টলিপাড়ার অন্দরে। খবর, যাতে সমস্যার সমাধান হয় এবং কর্মনাশা বন্ধের দিকে বিষয়টি না গড়ায়, সেই ভাবনা নিয়ে গিল্ডের অফিসে পরিচালক সংগঠনের সমস্ত সদস্য বৈঠকে বসতে চলেছেন।
এ দিকে, টলিপাড়ায় সোমবার থেকে শুরু হওয়া অচলাবস্থা এখনও কাটেনি। বুধবার সকালেও ছোট পর্দার পরিচালক শ্রীজিৎ রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, এত আবেদনের পরেও আর্ট সেটিং-এর কর্মীরা তাঁর আগামী ধারাবাহিকের সেট তৈরির কাজে আসেননি। পরিচালক সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন জানিয়েছেন, সকলেই সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাকিয়ে। যদিও প্রত্যেকে এখনও আশা করছেন, মীমাংসা হবে। টলিউড আবার কাজের পুরনো পরিস্থিতি ফিরে পাবে। পাশাপাশি, আতঙ্ক ছড়িয়েছে পরিচালকদের মনে, এর পর কার পালা? কার কাজের উপর ফেডারেশনের কোপ পড়বে? এই ভয়ে তটস্থ সকলে। যার জেরে একাধিক ছবি, সিরিজ় ও ধারাবাহিক পরিচালনার ভাবনা থাকলেও শুটিং শুরু করতে ভয় পাচ্ছেন পরিচালকেরা। যদি পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীজিৎ রায়ের মতো তাঁদের কাজেও ফেডারেশনের কোপ পড়ে!
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাইয়ে প্রকাশ্যে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের বাংলাদেশে কাজ করা নিয়ে বিরোধ শুরু। দাবি, সংগঠনের নীতি মানছেন না তিনি। ওঁকে ‘সাসপেন্ড’ করতে হবে। সেই সময় রাহুলের পাশে দাঁড়ান পরিচালক গিল্ডের সদস্য পরিচালকেরা। প্রতিবাদ জানান ফেডারেশনের পদক্ষেপের। রাহুল পুজোর ছবি পরিচালনা করতে গেলে অসহযোগিতার পথে হেঁটে শুটিং বাতিল করেন টেকনিশিয়ানেরা। পাল্টা ধর্মঘটের পথে যাওয়ার কথা ভাবেন পরিচালকেরাও। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বিরোধ মেটে। কিন্তু সেটা যে সাময়িক, তা কেউ বুঝতে পারেননি।
২০২৫ শুরু হতেই ফেডারেশনের যূপকাষ্ঠে কৌশিক। প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে তাঁর পুজোর ছবি ‘জংলা’র শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। তালিকায় দ্বিতীয় পরিচালক জয়দীপ। তাঁর সিরিজ় ‘অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ’-এর পরের পর্বের শুটিং একই কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তৃতীয় শ্রীজিৎ। তাঁর নতুন ধারাবাহিকের সেট তৈরির কাজ সবে শুরু হয়েছিল। সেই কাজ বিনা কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার তাই নিয়ে দাসানি স্টুডিয়োয় সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন গিল্ডের সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়, কার্যকরী কমিটির সদস্য রাজ চক্রবর্তী, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এই বৈঠকেই সুদেষ্ণা অনুরোধ জানান, আগের বারের মতো এ বারেও পরিচালক গৌতম ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব যেন এগিয়ে আসেন। বিষয়টির হাল ধরেন।
যদিও প্রশ্ন, আদৌ কি দ্বিতীয় বার এটি সম্ভব? কারণ, গিল্ড সভাপতি ইতিমধ্যেই আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “গত কয়েক মাস ধরে সমানে মুখ্যমন্ত্রীর কান ভারী করা হয়েছে, আমরা নাকি আরজি কর-কাণ্ডে শাসকদলের বিরোধিতা করতেই পথে নেমেছিলাম। সংগঠনের পরিচালক সদস্যেরা হয় বামপন্থী, নয় পদ্মশিবিরের!” তাঁর দাবি, পরিচালকদের নিয়ে এ রকম ভুয়ো ধারণা তৈরি হওয়ার ফলেই নাকি এত সহজে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তবে তিনি ফোনে অধরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy