ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ গড়ার পরিকল্পনা থেকে আপাতত পিছিয়ে আসছে নয়াদিল্লি।
প্রস্তাব ছিল, উত্তরবঙ্গের হাসিমারা থেকে ভুটানের ফুন্টশোলিং কিংবা হাসিমারা থেকে তোরিবাড়ি পর্যন্ত পণ্য চলাচলের জন্য রেল লাইন বসবে। কিন্তু হাসিমারা থেকে তোরিবাড়িই হোক বা ফুন্টশোলিং রেল লাইন নিয়ে যেতে হবে চা বাগান কিংবা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। পরিবেশ রক্ষার প্রশ্ন তো হয়েছেই। অন্য দিকে চা বাগানের মালিকদেরও আপত্তি রয়েছে এতে। রুটিরুজি হারানোর ভয়ে বাগানের শ্রমিকরাও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন। উত্তরবঙ্গের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে অশান্তি তৈরির ঝুঁকি কেন্দ্র নিতে চাইছে না। তাই তারা আর এ ব্যাপারে এগোচ্ছে না।
দু’দিনের সফরে এসে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ভুটান সরকারকে জানিয়েছেন, “প্রস্তাবিত দু’টি লাইনই চা বাগান বা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ওই এলাকায় পরিবেশ রক্ষা এবং জীবন জীবিকার প্রশ্নকে অবহেলা করা যায় না। সীমান্তের দু’দিকের যোগাযোগ বাড়াতে ভুটান অন্য কোনও পথের প্রস্তাব দিলে, আমরা তা ভেবে দেখব।” ভুটানের সরকারি নেতৃত্বও সমস্যার গুরুত্ব বুঝেছেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বলেন, “সমস্যা যে রয়েছে, তা আমরা বুঝতে পারছি। আসলে কলকাতা বন্দর থেকে ভুটানে যাবতীয় পণ্য আসে সড়ক পথে। রেল যোগাযোগ তৈরি হয়ে গেলে ওই সব পণ্য অনেক সহজে ভুটানে পৌঁছতো। ভারত যদি অন্য কোনও দিকে রেল সংযোগের প্রস্তাব দেয়, তাকে আমরা স্বাগত জানাব।”
২০০৮ সালে মনমোহন সিংহ সফরে এসে ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৫৮ সালে নেহরুর ঐতিহাসিক ভুটান সফরের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছিল, স্বর্ণজয়ন্তী রেল যোগাযোগ।
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভুটান এবং তার রাজ-পরিবারের সম্পর্ক বহু পুরনো। রেল সংযোগের সমস্যার কথা তিনি খোলাখুলি বলায় ভুটান তা মেনে নিয়েছেন। ভুটানের বর্তমান রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের পিতা, ভুটানের চতুর্থ রাজার সঙ্গে প্রণববাবুর ব্যক্তিগত সম্পর্ক বহু পুরনো। শুক্রবার প্রণববাবু পারো বিমানবন্দরে পৌঁছলে রীতি ভেঙে নিজেই বিমানবন্দরে পৌঁছে যান রাজা ও রাণী। পারো থেকে থিম্পু, গোটা রাস্তার দু’দিকে মহিলা, কিশোর-কিশোরী, শিশুরা ভারতের পতাকা হাতে প্রণবকে অভ্যর্থনা জানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy