সম্প্রতি এক পডকাস্টে শৈশবের সেই দুর্বিষহ স্মৃতি তুলে ধরলেন ‘বিগ বস্’ খ্যাত উরফি। ছবি: সংগৃহীত।
পোশাক নির্বাচন এবং সপাট কথা বলার জন্য উরফি জাভেদকে নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। বর্তমানে খ্যাতি পরিবেষ্টিত হয়ে থাকলেও তাঁর বড় হওয়ার পথ মসৃণ ছিল না। অনেকের মতো আনন্দমুখর শৈশব পাননি তিনি।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে শৈশবের সেই দুর্বিষহ স্মৃতিই তুলে ধরলেন ‘বিগ বস্’ খ্যাত উরফি। লখনউয়ের কট্টর মুসলিম পরিবারে বড় হয়েছেন তিনি। স্বচ্ছল ছিলেন না তাঁর অভিভাবক। উরফি জানালেন, তাঁর মা অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। খুব গোঁড়া ছিলেন তাঁর বাবা, প্রায়ই মারধর করতেন তাঁকে। সব মিলিয়ে বাড়িটাই যেন বিভীষিকা হয়ে গিয়েছিল উরফির কাছে।
উরফি স্পষ্ট বলেন, “আমার আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকে গিয়েছিল। ভয়ে ভয়ে থাকতাম। আমার কোনও বন্ধুবান্ধব ছিল না। কী করব বুঝতে পারতাম না।”
এখনও প্রতি তিন মাসে অন্তত এক বার করে তাঁকে হেনস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, আদালতে উরফির নামে মামলা ঠোকে বিভিন্ন লোকে। এ সব গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে মডেল-তারকার। কারণ, তিনি জানান, যন্ত্রণার অধ্যায় পেরিয়ে এসেছেন আগেই। ২৬ বছর বয়সেই জীবনের অনেকটা দেখে ফেলেছেন তিনি, তাই এখন ফুরফুরে থাকতেই ভালবাসেন। যা প্রাণ চায় তা-ই করেন।
উরফির বক্তব্য, “লোকে হয়তো ঠিকই বলে। মহিলা হিসাবে আমি ততটা ঠিকঠাক নই। সমাজের কাছে হয়তো আমি একটা দাগের মতো। নতুন প্রজন্মের কাছে হয়তো খারাপ উদাহরণ রাখছি। সমাজমাধ্যমে নানা কথা বলা হয়, ট্রোল করা হয়। কিন্তু আমি নিজেকে সরিয়ে নিলেও এগুলো সমাজমাধ্যমে চলতেই থাকবে।”
উরফির দাবি, তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা পরিবেশ কলুষিত হওয়ার একমাত্র কারণ নয়। আক্ষেপ করে বলেন, “আমি কি এতটাই খারাপ? কেউ আমাকে গ্রহণ করে না, কোনও পরিবারের কাছে আমি গ্রহণযোগ্য নই। এটাই কি হওয়ার ছিল?” কেউ যে তাঁর বন্ধু হতে চায় না— এ নিয়েও তাঁর খারাপ লাগা গোপন করেননি উরফি।
মাকে খুব অল্প বয়সেই পাঁচ সন্তানের জননী হতে হয়েছিল বলে জানান উরফি। সংসারে লেগেই থাকত অশান্তি। বেদম প্রহার করতেন উরফির বাবা। ভাগ করে নেন সেই বেদনাময় অভিজ্ঞতাও। উরফি জানান, যত ক্ষণ না পর্যন্ত তিনি অজ্ঞান হয়ে যেতেন, বাবা মারতেন তাঁকে।
উরফির দাবি, “আমি কখনওই বাবার ঘনিষ্ঠ ছিলাম না। কোনও বাচ্চাকে আপনি মেরেধরে শেখাতে গেলে যদি সে মার খেয়ে অজ্ঞানই হয়ে যায়, তা হলে কী বোঝাবেন তাকে? ” বাবার প্রতিহিংসা কখনওই মিটত না, জানান তিনি।
শিশুর গায়ে ক্রমাগত হাত তুললে গভীর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তার উপরে— এমনটাই মনে করেন উরফি। তাই খুব অল্প বয়স থেকে উরফির সামনে লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানো। রোজগার করতে শুরু করেছিলেন নানা ভাবে। কখনও অভিনয়, কখনও ফ্যাশন। ফাঁকে ফাঁকে রিয়্যালিটি শো বদলে দেয় উরফির জীবন। নিজেরই চেষ্টায় ঘর ছাড়েন তিনি, মা আর বোনের হাত ধরে। বাবার সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ রাখেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy