কুমার সাহনি। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত হলেন সমান্তরাল হিন্দি ছবির জনপ্রিয় পরিচালক কুমার সাহনি। শনিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১৮ ফেব্রুয়ারি শ্বাসনালীতে সংক্রমণ, হাইপার টেনশন নিয়ে কুমার সাহনিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। হিন্দি ছবির জগতে অন্য ধারার ছবির সূত্রেই পরিচিতি পান সাহনি। ছয় দশকের বিস্তৃত কেরিয়ারে ‘মায়া দর্পণ’, ‘তরঙ্গ’, ‘খেয়াল গাথা’ ও ‘কসবা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবি।
১৯৪০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিন্ধের লারকানায় (বর্তমানে পাকিস্তান) জন্ম কুমার সাহনির। স্বাধীনতার পরে তাঁর পরিবার মুম্বইয়ে পাকাপাকি ভাবে চলে আসে। পরবর্তী সময়ে পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে (এফটিআইআই) ভর্তি হন সাহনি। এই সময় ঋত্বিক ঘটক ছিলেন তাঁর শিক্ষক। পরবর্তী জীবনে তাঁর ছবিতে ঋত্বিকের প্রভাবের কথাও স্বীকার করেছেন সাহনি। ফরাসি সরকারের স্কলারশিপ পান সাহনি। ফ্রান্সে গিয়ে প্রখ্যাত পরিচালক রবার্ট ব্রেসঁর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। সেই ছবির নাম ‘আ জেন্টল উওম্যান’।
কুমার সাহনির প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘‘প্রখ্যাত পরিচালক কুমার সাহনি কলকাতায় প্রয়াত হয়েছেন জেনে আমি দুঃখিত। তিনি ছিলেন এক জন শক্তিশালী পরিচালক, ভারতীয় সমান্তরাল ঘরানার ছবিতে যাঁর উপস্থিতি ছিল গভীর। ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য এটা খুব বড় ক্ষতি। ওঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’’
ষাটের দশকে মূলত স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রের মাধ্যমে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় সাহনির। ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় তাঁর পরিচালিত প্রথম কাহিনিচিত্র ‘মায়া দর্পণ’। নির্মল বর্মার কাহিনি অবলম্বনে তৈরি ছবিটি সে বছর সেরা হিন্দি ছবির জাতীয় পুরস্কার জিতে নেয়। কিন্তু তার পরেও দ্বিতীয় ছবি পরিচালনার জন্য সাহনিকে ১২ বছর অপেক্ষা করতে হয়। শোনা যায়, তাঁর ছবির জন্য তিনি প্রযোজক পাননি। ১৯৮৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ও সাহনি পরিচালিত ‘তরঙ্গ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ওম পুরী, স্মিতা পাটিল, গিরিশ কারনাড ও অমল পালেকর। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় সাহনি পরিচালিত ছবি ‘চার অধ্যায়’। কুমার সাহনির প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া। অনুরাগীরা ছাড়াও বলিউড ও টলিপাড়ার একাধিক তারকা পরিচালককে সমাজমাধ্যমে স্মরণ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy