Advertisement
E-Paper

অভিনেত্রী তিলোত্তমা জড়িয়ে ধরলেন ‘ফেলুদা’কে! আবীরের হাতে এক বাটি মাংস, আর কী হল ‘বছরের বেস্ট’-এ?

কে কার দিকে কত ক্ষণ তাকালেন? এ দিনের আসরে কে মধ্যমণি? কিংবা কোন নায়িকার সাজের জৌলুসে ম্লান অন্য নায়িকা?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ২০:১৬
তিলোত্তমা সোম মুগ্ধ টোটা রায়চৌধুরীর অভিনয়ে।

তিলোত্তমা সোম মুগ্ধ টোটা রায়চৌধুরীর অভিনয়ে। নিজস্ব চিত্র।

তখন সন্ধ্যা মিশছে রাতের আলোকজ্জ্বল নৈঃশব্দ্যে। আনন্দবাজার ডট কম-এর আয়োজনে ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে যেমন মিশে যায় ঐতিহ্য আর আধুনিকতা। রাজনীতির সঙ্গে বিনোদনের ভাব বিনিময়, সমাজের নানা ক্ষেত্রের সেরা মানুষেরা পরস্পরের মুখোমুখি। তাঁদের মেধা, মনন আর সৌন্দর্যের ছটায় চারদিক আলোকিত।

খ্যাতনামীরা কেউ ধুতি-পাঞ্জাবিতে ‘বাঙালি বাবু’, কেউ শাড়ি-গয়নায় অনন্যা। কালো বেনারসি পরে কোয়েল যখন এলেন তখন পাশ থেকে কে যেন ডেকে উঠলেন ‘মিতিন মাসি’ বলে। চরিত্র-নামে ডাক শুনে খুশি কোয়েল। উড়ে এল প্রশ্ন— আবার নতুন কোনও রহস্য সমাধানে কি ফিরবেন ‘প্রজ্ঞা পারমিতা’? স্বভাবসুলভ হাসিতে সে প্রশ্নকে প্রশ্রয় দিয়েই এগিয়ে গেলেন মূল সভার দিকে। তার ঠিক পরেই এলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কালো পোশাকের যুগলবন্দিতে যেন অমলিন তাঁদের জুটি। সোনালি জরিতে বোনা ঢাকাই জামদানির আঁচল সামলাতে সামলাতে হাসিমুখে বৈশাখী বললেন, “তোমাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে পারি?”

সুগন্ধী সম্ভাষণ শেষ হতে না হতেই গাড়ি থেকে নামলেন টোটা রায়চৌধুরী। ধুতি-পাঞ্জাবিতে তাঁকেও দিব্য দেখায়। বিশেষত যখন বাঙালির বর্তমান ‘ফেলুদা’ তিনিই। কিন্তু এ দিন তাঁকে দেখা গেল ফর্মাল পোশাকে। “অনুষ্ঠান শুরু হয়নি তো! আমি দেখব বলে দৌড়ে দৌড়ে এলাম”, বলেই কালো বুটে আওয়াজ তুলে এগোতে লাগলেন তিনি। পরিচালক-সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত সব বিষয়ে ভারী খুঁতখুঁতে। আসরে ঢোকার আগে গুরুগম্ভীর গলায় জানালেন, ফোন বন্ধ করে দিচ্ছেন। নইলে যখন-তখন তাঁকে বিরক্ত করবেন কেউ। সোনালি শাড়িতে দেখা দিলেন ‘সোনার মেয়ে’ তৃণা সাহা। পথ দেখিয়ে দিতেই হাসিমুখে আপ্যায়নকারীদের বললেন, “আজ আপনাদের অতিথি। যেখানে যেতে বলবেন, যাব।”

তত ক্ষণে লবিতে পৌঁছে গিয়েছেন সস্ত্রীক পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। অপেক্ষা করছেন তাঁর সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘ডিয়ার মা’ ছবির নায়িকা জয়া আহসানের জন্য। “জয়া এসেছে?” ভিতরে ঢুকেই প্রশ্ন পরিচালকের। তখনও আসেননি শুনে সহাস্য ঘোষণা, “আসুক। ওকে নিয়ে উপরে যাব। তত ক্ষণ নীচেই অপেক্ষা করি।” এ দিকে জয়া আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, আসতে একটু দেরি হবে। চুল শুকোতে নাকি খানিক দেরি হয়ে গিয়েছে তাঁর।

তবে খুব দেরি করেননি পদ্মাপারের সুন্দরী। হালকা হলুদ ঢাকাই শাড়িতে লাল ফুলকি তুলে হাসি হাসি মুখে এলেন তিনি। কিন্তু তাঁর দীঘল চোখ চঞ্চল, কার খোঁজে? এ দিকে অনিরুদ্ধ যে তাঁর প্রতীক্ষায়! সে কথা জানাতেই ব্যস্ত পায়ে এগিয়ে গেলেন পরিচালকের দিকে। মুখে-চোখে বিড়ম্বনার কারুকাজ যেন। অপ্রস্তুত হেসে মৃদু স্বরে বললেন, “সেই দেরি হয়েই গেল!”

রাত যত গড়িয়েছে অতিথিদের আনাগোনা বেড়েছে। এগিয়েছে ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠান। মঞ্চ তখন সঞ্চালিত হচ্ছে পাওলি দামের নিজস্ব বিভঙ্গে। ‘বেস্ট’-সন্ধ্যায় কেউ কেউ মঞ্চে উঠেছেন, কেউ কেউ ছিলেন নীচেই। কিন্তু তারাদের মেলায় আলোকিত চার পাশ।

অনুষ্ঠান শেষের পর শুরু হয়েছে পার্টির হুল্লোড়। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় খোশমেজাজে আড্ডা জুড়েছেন আমন্ত্রিত বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে। বন্ধু দেবাশিস দাস কিন্তু কাছছাড়া করছেন না তাঁকে। পার্টির অমোঘ আকর্ষণ যথারীতি জয়া। তাঁর মুঠোমাপের কোমর আড়নজরে দেখে নিয়েছেন পাওলি। পায়ে পায়ে মুখোমুখি নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘কণ্ঠ’ ছবির দুই নায়িকা। খুনসুটি করে পাওলি বলে বসলেন, “আজকের সব আলো শুষে নিল জয়া।”

তারই সঙ্গে শুরু হয়েছে খাওয়াদাওয়া। ঘটনাচক্রে এ দিন নিরামিষ খান ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। তাই কিছু তন্দুরি রুটি আর নিরামিষ নানা পদ নিয়ে তিনি খানিক আড়াল রেখে যেই না বসতে গিয়েছেন অমনি হাজির আবীর চট্টোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিলেন, “ইন্দ্রদা যতই নিরামিষ খেতে বসুন, আমি ওঁর পাশে বসেই খাব।” তাঁর পাতেও রুটি। সঙ্গে এক বাটি পাঁঠার মাংস।

আড্ডায় দর্শনা বণিক, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, তৃণা সাহা।

আড্ডায় দর্শনা বণিক, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, তৃণা সাহা। নিজস্ব ছবি।

অনুষ্ঠান যখন প্রায় শেষের দিকে হন্তদন্ত হয়ে হাজির ছোটপর্দার সুপুরুষ রণজয় বিষ্ণু। নীল-সাদা চাইনিজ় শার্টের সঙ্গে তিনি বেছে নিয়েছিলেন সাদা ঢোলা পাজামা। অন্য প্রায় সব খ্যাতনামীর পোশাকে বাঙালিয়ানা থাকলেও, রণজয়ের পাজামায় ছিল হিন্দি বর্ণমালার ব্লকপ্রিন্ট।

লবিতে পা রাখতেই অভিনেতাকে ঘিরে ধরলেন এই প্রজন্মের কিছু ছেলেমেয়ে। তাঁদের সঙ্গে নিজস্বী তুলে জানতে চাইলেন, “পার্টি শুরু হয়ে গিয়েছে? আমি ওই কারণেই আসি।” তাঁর কথা ফুরোতেই প্রজাপতির মতো উড়তে উড়তে এসে অভিনেতার বাহু জড়ালেন বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, “রণ, আমার সঙ্গে সেলফি তুলবি না?” এমন আবদার ফেরাবেন! ততখানি সাহস বোধ হয় নেই অভিনেতার। ফলে দেদার উঠল নিজস্বী। পাশে দাঁড়িয়ে দুই বন্ধুর খুনসুটি হাসিমুখে উপভোগ করছিলেন দর্শনা বণিক। বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তিনি, রণজয় এতই দেরি করে ফেলেছেন।

ঠিক এই সময়ে লবিতে মুখোমুখি সম্মানিত অভিনেতা-প্রযোজক তিলোত্তমা সোম এবং টোটা রায়চৌধুরী। ‘ফেলুদা’কে দেখে আবেগে তাঁর হাতদুটো জড়িয়ে ধরলেন তিলোত্তমা! বললেন, “আপনার অভিনয় কী যে ভাল লাগে!” টোটার মুখেচোখে তৃপ্তির হাসি। পাল্টা প্রশংসা তাঁর মুখেও। সৌজন্য বিনিময় মিটতেই যে যার বাড়ির পথে।

Tota Roy Chowdhury Koel Mallick Jaya Ahsan Paoli Dam Abir Chatterjee Rupa Ganguly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy