Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ঠিক জমল না!

একটা গোটা ছবি দেখে যদি বোঝা না যায় ছবির পাল্লা কোন দিকে ভারী, তবে তার ভালগুলো খুঁজতেও কসরত করতে হয় বইকি! সৌমিক সেনের ‘হোয়াই চিট ইন্ডিয়া’র প্রথমার্ধ মন্দ ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধের আরোপিত টুইস্ট ও দিকশূন্য সমাপ্তি দর্শককে ধোঁকা দিল।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

একটা গোটা ছবি দেখে যদি বোঝা না যায় ছবির পাল্লা কোন দিকে ভারী, তবে তার ভালগুলো খুঁজতেও কসরত করতে হয় বইকি! সৌমিক সেনের ‘হোয়াই চিট ইন্ডিয়া’র প্রথমার্ধ মন্দ ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধের আরোপিত টুইস্ট ও দিকশূন্য সমাপ্তি দর্শককে ধোঁকা দিল।

লখনউয়ের মধ্যবিত্ত সত্তুর ধ্যান-জ্ঞান ইঞ্জিনিয়ারিং। বাবার স্বপ্ন ও টাকার মান রাখতে সে দিন-রাত এক করে পড়াশোনা করে। এবং অবশেষে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাল কলেজে পড়ার সুযোগ পায়। কিন্তু চার বছর শেষে মোটা মাইনের চাকরির অপেক্ষা না করে সে পা বাড়ায় নকল পরীক্ষার্থী সেজে টাকা রোজগারের ফাঁদে। যে চক্রের মাথা রাকেশ (ইমরান)। পরীক্ষার চাপ সামলাতে মাদকের আশ্রয় নেয় সত্তু এবং কলেজ তাকে বহিষ্কার করে দেয়। পরীক্ষাব্যবস্থার অমানবিক চাপ, ইঞ্জিনিয়ারি‌‌‌ং-ডাক্তারিতে ভর্তি হওয়া নিয়ে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লড়াই, উচ্চমধ্যবিত্ত বাবা ও তার সন্তানের অসৎ পথে সিট দখল... প্রথমার্ধে অনেক প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছিল ছবিতে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ছবির সেই ভরকেন্দ্র ঘুরে গেল রাকেশের ব্যবসা বিস্তার ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে। সেখানেই ছবি যেন তার প্রাসঙ্গিকতা হারাল। শেষে আবার সত্তুরই দিদির হানি ট্র্যাপে রাকেশের পদস্খলন!

রাকেশের চরিত্রে ইমরান নজরকাড়া নন। অনেক বেশি স্বতঃস্ফূর্ত লেগেছে সত্তুর চরিত্রে স্নিগ্ধদীপ চট্টোপাধ্যায়কে। সত্তুর দিদির চরিত্রে শ্রেয়া ধনওয়ানথারিও বেশ ভাল।

হোয়াই চিট ইন্ডিয়া পরিচালনা: সৌমিক সেন অভিনয়: ইমরান হাশমি, স্নিগ্ধদীপ চট্টোপাধ্যায়, শ্রেয়া ধনওয়ানথারি ৪/১০

নকল পরীক্ষার্থী ও সেই সম্পর্কিত চক্র বাস্তবে অনেক বেশি সুসংগঠিত। তবে ছবিতে রাকেশ ওয়ান-ম্যান-আর্মি। অনায়াসেই সে ফোনে ফোনে কাজ গুটিয়ে ফেলে! তার চেয়েও বড় গলদ, ইমরানের চরিত্রের নৈতিক মানদণ্ড ঠিক স্পষ্ট নয়। আদালতে আইনজীবীর প্রশ্নের মুখে সে যা যা যুক্তি দেয়, তা ধোপে টেকে না। নিজেকে রাকেশ ভাল বা ভিলেন বলে না। ‘খিলাড়ি’ হলেও তার খেলার ধরনে কোনও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নেই। বিশেষত, ভিলেনদের উত্তরপত্র হাইজ্যাক করে তা ফিরিয়ে দেওয়া বেশ হাস্যকর।

পরিচালক হয়তো স্যাটায়ার হিসেবে পুরো ব্যাপারটিকে দেখাতে চেয়েছেন। কিন্তু ছবি দেখেও তার টাইটেলে ‘হোয়াই’-এর মাহাত্ম্য বোঝা গেল না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE