স্ক্রিনিং কমিটিতে তাঁর সমর্থন নেই! শনিবার কমিটির বৈঠকে ঘোষণা হতেই টলিউড স্তব্ধ। সংবাদিকেরা উদ্গ্রীব। তা হলে কি কমিটির সঙ্গ ছাড়বেন দেব? তাঁর সহ-প্রযোজকেরা কি আর তাঁর সঙ্গে ছবি বানাবেন? গুঞ্জন, তিনি নাকি স্কুলের ‘ফার্স্ট বয়’-এর মতোই হিংসুটে। ভাগ করে নিতে জানেন না! সত্যিই কি তা-ই? আনন্দবাজার ডট কম-এর কাছে প্রথম অকপট প্রযোজক-অভিনেতা।
প্রশ্ন: দেব নাকি ‘প্রজাপতি’র মতো উড়ছেন?
দেব: (হা হা হাসি) , আমি উড়ছি না। দু’বছরের পরিশ্রম কতটা সফল, সেটাই এক প্রেক্ষাগৃহ থেকে অন্য প্রেক্ষাগৃহে ঘুরে ঘুরে দেখছি। ভাল লাগছে, ‘ধুরন্ধর’-এর মতো ছবির সামনে বাংলা ছবি দাঁড়িয়ে গেল। আমি একা নই, তিনটি বাংলা ছবি হিন্দি ছবির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। যাঁরা বলেন, হিন্দি ছবির সামনে কোনও ছবি দাঁড়াতে পারে না, তাঁদের উত্তর দিচ্ছে ‘প্রজাপতি ২’। (একটু থেমে), আমার তো মান-সম্মান আছে! পরিবেশকেরা বড় মুখ করে হিন্দি ছবির শো কমিয়ে আমায় দিয়েছেন। ওঁদের যদি ব্যবসা ফিরিয়ে দিতে না পারি, মুখ দেখাব কী করে? ওঁদের মানরক্ষার দায় আমারও। দর্শকেরা আমাদের ছবি দেখতে আসছেন। অভিনেতা এবং প্রযোজক দেবের এর থেকে খুশির কারণ আর কী হতে পারে?
প্রশ্ন: শনিবার স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকের পর থেকে অনুরাগীরা দেবকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। আপনি কমিটিকে সমর্থন করছেন না। আপনার কী হবে?
দেব: (একটু থেমে), কী বলি বলুন তো? সত্যিই আমার কিচ্ছু বলার নেই। এ টুকুই জানি, আমায় অনেক কাজ করতে হবে। ভাল ছবি বানাতে হবে। আমার কাঁধে অনেকটা দায়িত্ব। সকলেই জানেন, এ বারের লড়াইটা সহজ ছিল না। তার পরেও আমি কি অন্য কোথাও মাথা ঘামিয়েছি? কাউকে কিছু বলেছি? মন দিয়ে ছবির প্রচার করার চেষ্টা করেছি। সেটাই করে যাচ্ছি। আর পরের ছবি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছি। আর একটা কথা বলতে চাই...
প্রশ্ন: অবশ্যই বলুন...
দেব: কালকে আমার কাছে যখন কমিটির ফোন এসেছিল, তার আগে জানতামই না যে শনিবার ভোটাভুটি হবে।
প্রশ্ন: মানে, আপনাকে আগাম জানানো হয়নি?
দেব: এটা এজেন্ডায় ছিল না। আমি ছবির প্রচারে ব্যস্ত। এক হল থেকে আর এক হলে দৌড়োচ্ছি। আমার হল ভিজিটে বেরোনোর ছিল। কমিটি থেকে ফোন আসে। স্পষ্ট জানাই, আমি কিছু বিষয়ে সহমত, কিছু বিষয়ে নয়। দেখুন, একটা কমিটি তৈরি হওয়া মানে আরও গুছিয়ে কাজ হবে। এখন তো দেখছি, কমিটি হওয়ার পর থেকে ঝগড়াই বেশি হচ্ছে! এর আগে আমার সঙ্গে তো শ্রীকান্ত মোহতা, নিসপাল সিংহ রানে, রানা সরকারের এত ঝগড়া হত না! এটা কাম্য নয়। এটা কেন হবে? আরও একটা কথা, দেব কিন্তু ভোট দিয়েছে। আমি নোটায় ভোট দিয়েছি। একবারও বলিনি, কমিটিকে সমর্থন করছি না। আমি নিরপেক্ষ সদস্য। হ্যাঁ-না— কিছুতেই নেই।
শিশুশিল্পী অনুমেঘা কাহালির সঙ্গে দেব। ছবি: ফেসবুক।
প্রশ্ন: সংবাদপত্রে আপনাকে নিয়ে খবর। তার শিরোনাম, ‘সুপারস্টারের মতামত ১২-১ ভোটে খারিজ। এই প্রথম ইম্পার বৈঠকে সমালোচিত হলেন দেব’।
দেব: (মৃদু হেসে) সেটা ঠিক আছে। বাস্তবে আমার কিন্তু কোনও দাবি নেই। এটাও চাইছি না, আমায় এটা করে দাও বা ওটা করে দাও। আমি ছবি বানিয়েছি। সেটা দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছি। সেটাও চাইব না! ছবিমুক্তির আগে বলেছিলাম, ‘প্রজাপতি ২’ প্রথম দিন থেকে ব্যবসা দেবে। সেই কথা সত্যি হয়েছে কি না? সোমবার থেকে ছবির শো বাড়ছে। এসভিএফ সিনেমাচেনের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমে আমাদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। কারও ছবি সরিয়ে দিয়ে নয়, কষ্টের কাজ শহর থেকে শহরতলিতে পৌঁছে দিতে চাওয়া অন্যায়? যে নিয়মিত ব্যবসা দেয়, সে হল বা শো চাইতে পারে না? এ বার আমার এক বছরের কাজের পরিসংখ্যান কত জানেন?
প্রশ্ন:কত?
দেব: আগে, ছবির পিছনে কত টাকা ঢেলেছি তার হিসাব দিচ্ছি। গত শীতের ছবি ‘খাদান’-এর বাজেট ছিল আট কোটি টাকা। ‘ধূমকেতু’র বাজেট ছয় কোটি, ‘রঘু ডাকাত’-এর বাজেট আট কোটি, ‘প্রজাপতি ২’-এর বাজেট সাত কোটি। তা হলে মোট ইনভেস্টমেন্ট ২৯ কোটি টাকা। বদলে কতটা ব্যবসা দিয়েছি? ‘খাদান’ ব্যবসা করেছে ২৫ কোটি। বাকি ছবির ব্যবসা যথাক্রমে ২২ কোটি (ধূমকেতু), ১৩ কোটি (রঘু ডাকাত)। ১০ কোটির বেশি আয় করবে ‘প্রজাপতি ২’। তা হলে যোগফল কী দাঁড়াল? দেব বছরে ব্যবসা দিচ্ছে ৭০কোটি টাকা। এটা আমি বলছি না। তিনটি ছবির প্রযোজক টাকার এই অঙ্ক সবাইকে জানিয়েছিলেন। অর্থাৎ, নিসপাল সিংহ রানে, রানা সরকার, শ্রীকান্ত মোহতা-মহেন্দ্র সোনিই ব্যবসার হিসাব জানিয়েছিলেন। অঙ্ক বলছে, ৩০ কোটি লাভ আমার ছবি থেকে। আমার ২০ বছরের অভিনয় জীবনের অনুষ্ঠানে সাড়ে চার লক্ষ টাকা উঠেছিল। সেই টাকা টেকনিশিয়ানদের জন্য ফেডারেশনের হাতে তুলে দিয়েছি। আমার পকেটে তো একটা টাকাও ঢোকাইনি।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার করেছি, যাতে গ্রামের পরিবেশক ছবি দেখান। গ্রামের মানুষ যাতে ছবি দেখতে আসেন। এত কিছুর পরে আমিই কাঠগড়ায়! এখানে আমার অন্যায়টা কোথায়, একটু বলবেন? যখন রানেদার সঙ্গে কাজ করেছি, তিনি শো বেশি চেয়েছেন। রানাদা, শ্রীকান্তদাও তা-ই। কারণ, তাঁদের কাছে দেব আছে। আর আজ আমার ছবির জন্য একটা শো বেশি চেয়েছি। তাই নিয়ে এত কথা! এত ঝগড়া?
প্রশ্ন: এই প্রযোজকেরাই কিন্তু বলেছেন, আপনি ব্যবসার অঙ্কে জল মেশাচ্ছেন। ভুয়ো তথ্য দিচ্ছেন। এত ব্যবসা নাকি হয়নি আপনার ছবি থেকে...
দেব: (হেসে ফেলে), আমি কিন্তু সমাজমাধ্যমে কিচ্ছু লিখিনি। পরিসংখ্যান প্রযোজকদের এক্স হ্যান্ডেল থেকে সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে।
লন্ডনে ‘প্রজাপতি ২’-এর শুটিংয়ে দেব, মিঠুন চক্রবর্তী, অতনু রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সেন। ছবি: ফেসবুক।
প্রশ্ন: অভিযোগ, আপনি নাকি নিজের ছবির রেটিং চার্ট প্রযুক্তির সাহায্যে বাড়িয়ে অন্যদেরটা কমিয়ে দিচ্ছেন?
দেব: এই বিষয়ে ২৬ ডিসেম্বর ফোনে কথা হয়েছে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সে দিন আমার জন্মদিনে পরের দিন। সৃজিতদা-ই প্রথম এ কথা সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন। জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তো আমার সঙ্গে কাজ করেছ। জানো, আমি কী করতে পারি, কতটা করতে পারি। চাইলে হয়তো অনেক কিছুই করতে পারি। কিন্তু সে সব করতে গেলে ছবি বানানোর কাজটা করব কখন? সৃজিতদা জানালেন, তিনি আমার উদ্দেশ্যে লেখেননি। নামটাও বললেন। সেটা এখন বলব না। পরে সমাজমাধ্যমে লিখেওছে, ‘দেব এর মধ্যে যুক্ত নয়’। তার স্ক্রিনশট আমায় তুলে পাঠিয়েছে। শ্রীকান্তদা, রানেদার সঙ্গেও কথা বলেছি। বারবার একটাই কথা বলেছি, ছোট্ট ইন্ডাস্ট্রিতে কেন আমরা একে অন্যের সঙ্গে ঝগড়া করে মরছি! আগামিদিনেও তো এঁদের সঙ্গেই কাজ করব।
প্রশ্ন: আগামিদিনে ‘খাদান ২’ না-ও হতে পারে? বৈঠকের পর শোনা যাচ্ছে, রানে নাকি আপনাকে ফাইন্যান্সার খুঁজতে বলেছেন। দেবকে নিজের ছবির জন্য অর্থলগ্নিকারী খুঁজতে হবে!
দেব: রানেদা তো এ কথা বলেননি! গত কাল আমার সঙ্গে ওঁর এ রকম কোনও কথা হয়নি। যাঁরা বিষয়টি জানতে চাইছেন, তাঁদের বলব, কোনও চিন্তার কারণ নেই। এখন আমরা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সবাই একটু যেন বদলে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে আবার একই কথা বলব, কমিটি তৈরির আগে কিন্তু এত সমস্যা হত না। ঝগড়া হত, মিটেও যেত। এখন সেটা হচ্ছে না। তার মানে কমিটির কাজের মধ্যে কোথাও ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আর একটা ব্যাপার, কেউ কিন্তু সরাসরি ডেকে কিচ্ছু বলছেন না। অথচ কথা ছড়াচ্ছে। এটাই বেশি খারাপ লাগছে। এই জন্যই আমি চুপ। কাউকে কিচ্ছু বলছি না। জানি, সব ঠিক হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: কথায় কথায় মনে পড়ল, কিছু দিন আগে ফেডারেশনের একটি অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে আপনি আর শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আপনারা পরস্পরকে জড়িয়েও ধরলেন...
দেব: বিশ্বাস করুন, আমি এ রকমই। কিচ্ছু মনে রাখি না। শিবুদাকে আমার ছবি দেখতে আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছিলাম।
প্রশ্ন: এই পুজোয় শিবপ্রসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ‘ভিকটিম কার্ড’ খেলছেন। এই শীতে নাম না করে একই অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধে...!
দেব: আমি কী ‘ভিকটিম কার্ড’ খেললাম?
প্রশ্ন: যেমন, নবীনায় আপনি শো পাবেন না, জানতেন। বদলে প্রিয়া-সহ দক্ষিণ কলকাতার অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহে একাধিক শো পাবেন। রাজি হয়েও পরে সাক্ষাৎকারে শো না পাওয়ার কথা ফলাও করে জানিয়েছেন।
দেব: ভুল কথা। আমার সঙ্গে এ রকম কোনও কথা হয়নি। আপনি হেডলাইন করতে পারেন, নবীনা নিয়ে আমার সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি। আমিও তো নবীনা নিয়ে কিছু বলছি না! নবীন চৌখানিদা বলুন, আমি কিছু বলেছি ওঁকে। একবার ফোন করেছিলাম। ব্যস্ত থাকায় দাদা ধরতে পারেননি। আর একবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম, যদি একটা শো পাই আমরা। কোনও সংবাদমাধ্যমে নবীনার নাম উল্লেখ করে কিচ্ছু বলিনি। আমি খুব খুশি। যা হয়েছে ভালর জন্যই হয়েছে।
প্রশ্ন: আপনার ফ্যানক্লাব থেকে নাকি প্রেক্ষাগৃহের টিকিট কাউন্টার আটকে দিয়েছিল। অন্য ছবির টিকিট কাটতে দেওয়া হচ্ছিল না।
দেব: লিয়োনেল মেসিকে দেখতে না পেয়ে পুরো কলকাতা খেপে উঠেছিল। সমাজমাধ্যমে চোখ রাখা যাচ্ছিল না। ভক্তেরা রাগে ফেটে পড়েছিলেন, সেটা ঠিক। ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান দলের বিরুদ্ধে কিছু বলা হলে দুই দলের সমর্থকেরা রে-রে করে ওঠেন। মাঠে ভাঙচুর হয়, আগুন জ্বলে, সেটা ঠিক। অনুষ্ঠানে জিৎদাকে সামনাসামনি দেখতে না পাওয়ার রাগে ভাঙচুর হয়েছে, সেটাও ঠিক। আমার ভক্তেরা অভিমানে নবীনার সামনে গিয়ে যদি একটা শো পাওয়ার অনুরোধ জানায়, তা হলেই দোষ? যে হলে আমার ছবির পোস্টার পড়েছিল, গেট বানানো হয়েছিল সেখানে ছবির শো না পেলে তাঁদের খারাপ লাগবে না! ওঁরাও তো বাকিদের মতো ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে। বাকি খ্যাতনামী বা সংগঠনের ভক্তদের কিছুতেই কোনও দোষ নেই। আমার ভক্তদের অনুভূতির কি কোনও দাম নেই? বাহ্! ওঁরা কিন্তু বাকি দুটো বাংলা ছবি সরানোর কথা বলেননি। ভাঙচুরও করেননি। ওঁরা ভালবাসেন আমায়। এত বছরের পরিশ্রমে এটুকুই তো আমার অর্জন।
স্বরূপ বিশ্বাস তার পর ফোন করেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ওঁদের বললাম, আপনারা দয়া করে সরে যান। কোনও ছবির টিকিট বিক্রিতে বাধা দেবেন না। ওঁরা কথা রেখেছেন। ফ্যানেরা এটুকু পাগলামি তো করবেনই।
অনুরাগিণীদের সঙ্গে দেব। ছবি: ফেসবুক।
প্রশ্ন: তা হলে সমাজমাধ্যমে কাহিনিকার-চিত্রনাট্যকার জ়িনিয়া সেনের বিকৃত, নগ্ন ছবি দেওয়াটাও ফ্যানেদের ‘পাগলামো’!
দেব: যে বা যাঁরা করেছেন, খুব অন্যায় করেছেন। একটুও সমর্থন করছি না আমি। আর আমি কি কাউকে এই ধরনের অন্যায়ের ইন্ধন জোগাই বলে মনে হয়? জ়িনিয়া কোনও সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, দেব এটা করিয়েছেন? কেউ এ রকম কথা বলতে পারবেন? আমিও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, বিষয়টি যেন গুরুত্ব নিয়ে দেখা হয়। তার পরেও একটা কথা বলব, কটাক্ষ এখনকার জীবনধারার অঙ্গ। রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, আমি— আরও অনেকে প্রতি দিন কটাক্ষ করে। সবাই আমাদের ভালবাসবেন, এটা হওয়ার নয়। প্রত্যেকে কোনও না কোনও কারণে তাই কটাক্ষের শিকার। যত কম গায়ে মাখবেন, ততই ভাল।
আপনারা সাংবাদিকেরাও তো কটাক্ষের শিকার। অপছন্দের সাংবাদিকদের অভিনেতারা সাক্ষাৎকার দিতে চান না। অনুষ্ঠানে ডাকেন না। এটাও তো এক ধরনের ট্রোলিং! অথচ, আপনারা তো আপনাদের কাজটাই করেন।
প্রশ্ন: ছবির প্রচারের সময় আপনিও এই প্রতিবেদককে ডাকেননি...
দেব: (হেসে ফেলে), আমি সাক্ষাৎকার কমই দিই। আর রাগ থাকলে আপনাকে এই সাক্ষাৎকার দিতাম?
আসলে ‘দেব’ নামটা সবাই এত ভালবেসে ফেলেছেন যে , সবেতেই নাম জুড়ে যাচ্ছে! একটি কমিটির একটি বৈঠকে একটা মানুষের উল্টোদিকে ১৩ জন দাঁড়িয়ে গেলেন! তা হলে শক্তিশালী কে? কার বিরুদ্ধে ১৩ জন জোট বাঁধলেন? নামটা সেই দেব। বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক হল। সংবাদমাধ্যমে খবর বেরোল। সেখানেও শিরোনামে কে? দেব। আর ‘দেব’ মানেই রসালো হেডিং। বিশ্বাস করুন, একটা ছবির পিছনে প্রচুর খাটি। সেই ছেলেটা অন্যের রেটিং কমাতে প্রযুক্তির সাহায্য নেবে! ছোটপর্দা, মঞ্চের অনেক নতুন প্রতিভাকে ছবিতে কাজ দিয়ে সামনে আনার চেষ্টা করেছি। তাঁরা এখন ভাল কাজ করছেন। করেছি তো এই কাজগুলো! আমি কি ইন্ডাস্ট্রির জন্য কিচ্ছু করিনি? এ বার সব ছবি সমান সংখ্যক শো পেয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি অন্যদের থেকে এগিয়ে...
দেব: সেটা শহরতলি, গ্রামে আমার ছবি মুক্তি পেয়েছে বলে। বাকিরা সেটা করেননি।
প্রশ্ন: স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকে ‘নিউট্রাল’ থাকলে আগামী দিনে কাজে সমস্যা হবে?
দেব: যিনি পরিশ্রম করেন, ব্যবসা দেন, কাজ জানেন, তাঁকে কে আটকাবে! এটা যে কোনও মাধ্যমের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমাদের বন্ধু-বান্ধবের ব্যাপার। আজ অসন্তোষ, কালকেই মিটমাট। সব ঠিক হয়ে যাবে। সবাই একসঙ্গে কাজ করব আবার।
প্রশ্ন: কিছু দিন আগেও আপনার সমর্থনে কত মানুষ। এখন একা। কষ্ট হচ্ছে?
দেব: (বেশ কিছু ক্ষণ চুপ) জানেন, মানুষ চিনলাম। আপনারাও চিনলেন। গোটা বাংলা চিনছে। যাঁদের একরকম জানতেন, তাঁদের নতুন রূপ দেখছেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমার জীবনে সব কিছুই একটু তাড়াতাড়ি পেয়েছি। এই শিক্ষাটা ৫০ বছর বয়সের পরে গিয়ে পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না। এখন পেলাম, ঠিক সামলে নিতে পারব। আমার চিন্তা শুধু দু’জনকে নিয়ে। শ্রীকান্তদা, যিনি আমায় ইন্ডাস্ট্রিতে এনেছেন। আর রানেদা, যিনি আমার নিজের দাদার সমান। রানা সরকারদা-ও ‘কাছের মানুষ’। এঁদের পাশে থাকা আমার কাছে বেশি জরুরি। এঁরা থাকলে সব পারব। দর্শক ভয় পাবেন না। আমরা এক আছি। নতুন কমিটি হলে পরস্পরকে চিনতে, জানতে একটু সময় লাগে। এটাও হয়ে যাবে। আরও ভাল ছবি হবে, আরও বড় ছবি হবে।
মা-বাবার সঙ্গে দেব। ছবি: ফেসবুক।
প্রশ্ন: আগামদিনে স্ক্রিনিং কমিটির থেকে আর কী আশা করেন?
দেব: প্রাইম ডেটে ক’টা ছবি মুক্তি পাবে, কে, ক’টা ছবি বানাবেন বা কে ক’টা শো পাবেন—এ গুলো তো কমিটি দেখছেই। পাশাপাশি, নতুন হল তৈরি করা, পুরনো হলের সংস্করণ এবং যত নতুন হল তৈরি হয়েছে তার পরিবেশ রক্ষা করা— এ গুলোও স্ক্রিনিং কমিটি দেখলে খুবই ভাল হয়।
প্রশ্ন: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাকে ভালবাসেন। সেই জোরেই নাকি কাউকে পাত্তা দেন না?
দেব: কে বলেছে এ কথা? (বড় শ্বাস নিয়ে), শ্রীকান্ত মোহতা, নিসপাল সিংহ রানে, রানা সরকার ঠিক ততটাই ভালবাসেন, যতটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালবাসেন আমায়।