কুড়ি বছরের চেষ্টায় রুপোলি পর্দায় মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে ফিরিয়ে এনেছিলেন রিচার্ড অ্যাটেনবরো। আর্থিক চাপ তো ছিলই, ছবি তৈরিতে বাধা দিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইও। দশ দিনের চেষ্টার পর শ্যুটিংয়ের অনুমতি জোগাড় করেছিলেন অ্যাটেনবরো। এমন সব স্মৃতিই যেন ঘিরে ধরছে ‘গাঁধী ন্যাশনাল মেমোরিয়াল সোসাইটির’ (জিএনএমএস) প্রাক্তন কর্মীদের।
যেমন শোভনা রাণাডে। সে সময় জিএনএমএস-এর সচিব পদে কাজ করতেন। খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন পুণের ‘আগা খান’ প্রাসাদে শ্যুটিং করার জন্য কতটা বেগ পেতে হয়েছিল অ্যাটেনবরোকে। প্রথমেই মোরারজি দেশাই আপত্তি তুলেছিলেন, “মহাত্মার চরিত্রের জন্য ভুয়ো গাঁধীর প্রয়োজন কী?” আসল কারণ ছিল অবশ্য অন্য। কেন এক বিদেশি (বেন কিংসলে) গাঁধীর চরিত্রে অভিনয় করবেন, তা নিয়েই আপত্তি ছিল মোরারজির। শেষমেশ শ্যুটিংয়ের অনুমতি মিললেও কিছু কঠোর বিধিনিষেধ চেপেছিল। যেমন শ্যুটিং চলাকালীন প্রাসাদ চত্বরে আমিষ খাওয়া যাবে না। মদও পান করা যাবে না। শোভনার মনে পড়ে প্রতি দিন শ্যুটিংয়ের সময় তাঁকে ডেকে পাঠাতেন অ্যাটেনবরো। মজার ছলে দেখিয়ে নিতেন সমস্ত বিধিনিষেধ পালন করছে তাঁর দল। নির্দেশ মতো শ্যুটিং শেষ হলে প্রতি দিন নিয়মমাফিক এলাকা সাফ করত জমাদাররা। সে কাজ শেষ হলে তবেই হোটেলে ফিরতেন অ্যাটেনবরো। এ সব ঘটনাই হয়তো তাঁকে ভারতের কাছের মানুষ করে তুলেছিল। এ দিন তাঁর স্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতেও তাঁকে ‘ভারতের বন্ধু’আখ্যা দিয়েছেন সনিয়া গাঁধী।
শোভনা আরও জানালেন, কাজ নিয়ে খুঁতখুঁতে ছিলেন অ্যাটেনবরো। একটি ‘শটে’ ৫০টি ‘টেক’ দিতে হয়েছিল বেন কিংসলকে। পরে শোভনা প্রশ্ন করায় অ্যাটেনবরো উত্তর দিয়েছিলেন, “ওঁর হাঁটাটা মোটেও গাঁধীর মতো হচ্ছিল না।” নিজেই বলতেন, অন্তত ১০৮ বার গাঁধীর জীবনী পড়েছেন।
প্রতি ক্রিসমাসে শোভনাকে কার্ড পাঠাতেন অ্যাটেনবরো। একই স্মৃতি ‘গাঁধী’-র অভিনেত্রী রোহিণী হতাঙ্গড়িরও। তবে ২০০৮ সাল থেকেই কার্ড আসা বন্ধ হয়ে যায়। যোগাযোগটা ক্ষীণ হয়ে যায় তখনই।
রবিবারের পর পুরোটাই শেষ। রইল শুধু সুখস্মৃতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy