Advertisement
১১ মে ২০২৪

প্রেমপর্ব

কলকাতায় এলেন। প্রেম নিয়ে আড্ডা মারলেন। বিয়ে-শাদির প্রসঙ্গও এল কথায় কথায়। বরুণ ধবন-আলিয়া ভট্ট। কিন্তু ‘শাদি’র লাড্ডু কি খেলেন? সাক্ষী থাকলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত ও অরিজিত্‌ চক্রবর্তী। প্রথম ছবিতে ছিল কলেজ প্রেম। দু’বছর পরেই একেবারে বিয়ের পিঁড়িতে! পরিচালক ডেভিড ধবন-পুত্র বরুণ ধবন আর মহেশ ভট্ট-কন্যা আলিয়া ভট্ট।

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

প্রথম ছবিতে ছিল কলেজ প্রেম।

দু’বছর পরেই একেবারে বিয়ের পিঁড়িতে!

পরিচালক ডেভিড ধবন-পুত্র বরুণ ধবন আর মহেশ ভট্ট-কন্যা আলিয়া ভট্ট।

তাঁদের প্রেম নিয়ে বলিউডে কানাঘুষোয় অনেক কথা শোনা গেলেও বাস্তবে দু’জনেই যে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন তেমন খবর নেই। কিন্তু পর্দায়? ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া’তে ‘কাভিয়্যা’ আলিয়া যে ‘হাম্পটি’ বরুণের ‘দুলহনিয়া’ই।

আর বাস্তবে কী খবর?

‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’য়ের সময় থেকেই আলিয়া আর বরুণ-এর প্রেম নিয়ে জল্পনার কমতি নেই। যদিও সে কথা স্বীকার করেননি কেউই। এই তো সে দিন ‘ডেট উইথ হাম্পটি অ্যান্ড দুলহনিয়া’ অনুষ্ঠানে কর্ণ জোহর তো বরুণকে খেপিয়েছেন এই বলে যে, দুনিয়াতে একটি মেয়েই আছে যে বরুণের জন্য পাগল। তারপর মুচকি হেসে বলেছিলেন সে কন্যা আলিয়া ভট্ট।

যদিও আলিয়া কিছুই স্বীকার করেননি। শুধু বরুণ নয়, ‘টু স্টেটস্‌’য়ের সহ-অভিনেতা অর্জুন কপূর ও তাঁকে নিয়ে কম গুজব ছড়ায়নি। অনেক বারই বলেছেন দু’বছর ধরে তাঁর ‘রিলেশনশিপ স্টেটাস’ সিঙ্গল।

আলিয়া ছাড়াও, বরুণের সঙ্গে অন্য নায়িকাদের লিঙ্ক আপের গুজব কম হয়নি। সে তালিকায় নাম ছিল শ্রদ্ধা কপূরেরও। আবার অনেকেই বলছেন বরুণ আসলে মোটেও সিঙ্গল নন।

‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া’তে বরুণ ও আলিয়া।

তাঁর প্রেমিকার নাম নাতাশা দালাল। সম্পর্ক বেশ গভীরও বটে। কিন্তু নাতাশার কথা উঠলেও তাঁদের প্রেম নিয়ে স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি বরুণের থেকে।

পর্দায় প্রেম থেকে বিয়ের পিঁড়িতে উত্তরণ হল কি না জানা নেই। কিন্তু আনন্দplus-এর দফতরে এসে দু’জনের অফ-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি যা চোখে পড়ল, তা ফুচকার তেঁতুল জলের মতোই খট্টা-মিঠা। নিজের হাতে করে বরুণকে ফুচকা খাইয়ে দিলেন আলিয়া। বরুণ ফুচকা তো খেলেনই, সঙ্গে আলিয়ার আঙুলের ডগা থেকে চেটে নিলেন তেঁতুল জল। হাম্পটি শর্মা তো দুলহনিয়া নিয়ে এসেছেন। শাদির লাড্ডুও তাই রাখা ছিল সেখানে। আর সেই লাড্ডু আলিয়াকে খাওয়ানো নিয়ে বরুণের কতই না চেষ্টা। তা নিয়েই শুরু হল ‘মক’ হাতাহাতি।

তবে সব ভাল যার শেষ ভাল। তাই ‘মক’ হাতাহাতির পর মেক আপ স্টেজে আনন্দplus-এর ক্যামেরার সামনেই আলিয়ার কপালে আলতো করে ছুঁয়ে গেল বরুণের ঠোঁট।

তার আগে অবশ্য প্রেম নিয়ে আড্ডা দিলেন দু’জনেই। পূর্বরাগ, অনুরাগ, অভিমান, বিচ্ছেদ, পুনর্মিলন প্রেমের এই পঞ্চপর্ব পর্দায় কেমন ভাবে পার করেছেন দু’জনে? ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমে পড়লে কেমনই বা রিঅ্যাক্ট করতেন তাঁরা?

পূর্বরাগ
পর্দায়

বরুণ: ‘লাকি তু লাকি মি’ বলে আমাদের ছবিতে একটা র‌্যাপ গান আছে। তখনই হাম্পটি এটা গেয়ে ‘উ’ করা শুরু করে। যেহেতু ছবির মুখ্য চরিত্র হাম্পটি-কাভিয়্যার লাভ স্টোরিটা ২০১৪র প্রেক্ষিতে বানানো, তাই সেখানে পূর্বরাগের সময় থেকেই দু’জন বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে।

আলিয়া: ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া’তে তো পুরো রোল রিভারশ্যল বলতে পারেন। এখানে হাম্পটি নয়, বরং কাভিয়্যা ছেলেটিকে ‘উ’ করতে বেশি তত্‌পর। তার মানে এই নয় যে, কাভিয়্যা সব সময় হাম্পটির পিছনে পিছনে ঘুরছে। কাভিয়্যার প্ল্যান টিজ করে হাম্পটিকে পটানো। অনেকটা স্কুল লাইফের মতো। কোনও ছেলেকে কোনও মেয়ের ভাল লাগলে, সে কিন্তু সব সময় ছেলেটার সঙ্গে ভাল বা ‘নাইস’ ব্যবহার করবে, তা নয়। বরং হয়তো চুল টানবে-চিমটি কেটেই টিজ করতে ওর ভাল লাগে।

বাস্তবে

বরুণ: আমার কোনও আপত্তি নেই যদি একটা মেয়েকে পটাতে হয়। সিনেমা দেখাতে নিয়ে গেলাম। খাওয়াতে নিয়ে গেলাম একসঙ্গে। এ সব আমার দারুণ প্রিয়। তবে একটাই শর্ত। ‘উ’ করতে গেলে এ সব কিছুই আমি মুম্বইতে বসে করতে চাই না। আমার প্রেমিকাকে অন্য শহরে নিয়ে গিয়ে এ সব করতে রাজি। আমচি মুম্বইতে নয়। আবার কোনও মেয়ে আমাকে পটালেও কোনও ক্ষতি নেই। পূর্বরাগের সময় এখন আর ছেলে-মেয়ের মধ্যে কে প্রথম পদক্ষেপটা নিল, সেটা কোনও বড় ব্যাপার নয়। অনুভুতিগুলোই বিচার্য। লিঙ্গটা নয়।

আলিয়া: না, আমি এখনই কারওকে ‘উ’ করছি না বা করতে চাইও না। তবে আমার কিন্তু ছবির প্লটটা খুব ভাল লেগেছে। বাস্তব জীবনেও তো সেটা হতে পারে। ‘পটানো’ শব্দের আগে কেন সব সময় ‘মেয়ে’ শব্দটাই বসবে? মেয়েরাও ছেলে পটাতে পারে। আমার তো মনে হয়, অনেক ভাল করে পারে। আর কেনই বা শুধু ছেলেরা ‘উ’ করার মজাটা পাবে? তবে আমাকে কোনও ছেলে যদি পটাতে চায়, তা হলে তাকে প্রথমেই আউট অব দ্য বক্স ভাবতে হবে। ছেলেটিকে আমার ভাল লাগা-খারাপ লাগার জিনিসগুলো মনে রাখতে হবে।

অনুরাগ
পর্দায়

বরুণ: প্রেম করার সময় ওদের সম্পর্কটা যে শুধু মানসিক স্তরে আটকে থাকে তা নয়। ২০১৪-র রোম্যান্স তাই শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয়। স্মুচিং-কিসিং সবই দেখানো হয়েছে ছবিতে। তবে অনুরাগের ফেজটা বেশি দিন চলে না। কারণ কাভিয়্যাকে দিল্লি ছেড়ে চণ্ডীগড় চলে যেতে হয়।

আলিয়া: আমাদের ছবিটা যদিও ‘ডিডিএলজে’র প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য, তবু কাভিয়্যা আর হাম্পটির মধ্যে প্রেমটা একেবারে ক্লিশে নয়। মানে আমি বলতে চাইছি, কোনও ‘চিজি’ ব্যাপার বা মেলোড্রামা নেই। এটা রিয়েল। বাস্তবে যেমন ঘটে, তেমনটাই। খানিকটা লাভ-হেট সম্পর্কের মতো। সব সময় হয়তো ঝগড়া চলছে নিজেদের মধ্যে। আবার নিজেদের মধ্যে সব সময় ঝগড়া নিয়েই ব্যস্ত থাকায় অন্যদের দিকে ফিরে তাকানোরও সময় নেই দু’জনের। সব এনার্জি তো ঝগড়া করতে খরচা হয়ে যাচ্ছে!

বাস্তবে

বরুণ: যত বার প্রেম করেছি, একটা ফ্যাক্টর কমন। প্রেম করতে এলে মেয়েরা কোনও দিন সময়ে আসে না। দে মেক ইউ ওয়েট। এটা আমার একেবারে না-পসন্দ!

আলিয়া: আমাদের ছবির মতো বাস্তবেও কিন্তু সেটা হওয়াই ভাল। সব সময় গদগদ প্রেম আমার একেবারে সহ্য হয় না। ছোটখাটো মজা না থাকলে অনুরাগের মানে কী?

পঞ্চতন্ত্র

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

অভিমান
পর্দায়

বরুণ: মান-অভিমানের পর্বটা ছবিতে বেশ সুন্দর করে দেখানোও হয়েছে। হাম্পটি সর্বক্ষণই ভাবতে থাকে যে, কাভিয়্যা হয়তো ওকে তেমন পাত্তা দেয় না। তারপর এমন কিছু একটা ঘটনা ঘটে যে সমীকরণগুলো পাল্টে যায়। মান-অভিমান পর্বে তারা বুঝতে পারে সম্পর্কটা কত গভীর।

আলিয়া: আমার মনে হয়, অভিমান সম্পর্ককে মজবুত করে। কাভিয়্যা আর হাম্পটি-র ক্ষেত্রে তো কথাটা একশ’ শতাংশ মেলে। অভিমান শুধু অভিমানে থেমে থাকে না, সেটা মারপিট পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। কিন্তু দেখবেন সেটা ওদের সম্পর্ককে আরও জোরদারই করবে।

বাস্তবে

বরুণ: প্রেম করতে গিয়ে আমি দেখেছি মান-অভিমান পর্বে মেয়েরা সারাক্ষণ মাইন্ড গেমস খেলে। অবশ্য ছেলেরাও যে খেলে না, তা নয়। এই খেলাটা চলতে থাকে।

আলিয়া: প্রেমে অভিমান তো আসতেই হবে। ওটা একটা সিমপ্যাথি কার্ড। ওটা মেয়েরাই ভাল খেলতে পারে। সব সময় সত্যি অভিমান না হলেও, আমার মনে হয়, সম্পর্কে কখনও কখনও সেটা দেখাতেও হয়। না হলে আর মজা কোথায়?

বিচ্ছেদ
পর্দায়

বরুণ: ছবিতে হাম্পটি-কাভিয়্যার মধ্যে বিচ্ছেদ আছে বৈকী। বরং এটাও বলে রাখা ভাল যে, বিচ্ছেদটা দু’বার করে আসে।

আলিয়া: বিচ্ছেদ তো কখনওই সহজ নয়। তাই কাভিয়্যার কাছেও ওটা বেশ বেদনাদায়ক।

বাস্তবে

বরুণ: প্রেমের এই স্টেজটার সঙ্গে আমি খুবই পরিচিত। অনেক বার বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি।

আলিয়া: কেউই চাইবে না, তার প্রিয় ব্যক্তির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে। কারণ আমার মনে হয়, হার্ট ইজ মোর পাওয়ারফুল দ্যান ইয়োর মাইন্ড। মস্তিষ্কের থেকে হৃদয়ের জোর বেশি। মস্তিষ্ক যতই কোনও ঘটনাকে অযৌক্তিক বলে এড়িয়ে যেতে চাক না কেন, শেষে দেখবেন আপনি হৃদয়ের কথাই শুনছেন। আর দূরত্ব বাড়লে হৃদয় তো ব্যকুল হবেই। তখন কার কথা শুনবেন? কথায় বলে না, দূরত্ব কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়। কথাটা কিন্তু সত্যি। তাই আমার মনে হয়, সম্পর্কে অনুরাগ যেমন দরকার, তেমনই বিচ্ছেদটাও দরকার। পুনর্মিলনের জন্য বিচ্ছেদটা দরকার। দ্যট’স দ্য বিউটি অব ইট।

পুনর্মিলন
পর্দায়

বরুণ: ছবিটার গল্প বলে দেওয়াটা ঠিক হবে না। এটুকু বলতে পারি যে, আগেকার দিনের সেই রোম্যান্টিক ছবির গতে বাঁধা ছকে হাম্পটি-কাভিয়্যা এগোয় না। আগেকার সিনেমায় দেখানো হত যে, দু’জনে হাতধরাধরি করে দিগন্তের দিকে হেঁটে চলেছে আর তারপর জীবনটা সাঙ্ঘাতিক মসৃণ হয়ে গেল। তেমনটা কিন্তু ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া’তে হবে না।

আলিয়া: দু’জনের মধ্যে টান অটুট থাকলে পুনর্মিলন হবেই। সে যত বিচ্ছেদই আসুক না কেন। হাম্পটি আর কাভিয়্যার কী হয়েছে, সেটা এখনই বলব না। ওটা ছবিটা দেখেই জানতে হবে। আমার মনে হয়, পুনর্মিলনের আগে একটা অ্যাসিড টেস্ট হয়। দেখা যাক, হাম্পটি আর কাভিয়্যা সেই অ্যাসিড টেস্ট পেরোতে পারে কি না!

বাস্তবে

বরুণ: একবার বিচ্ছেদ হলে মানসিকতার দিক থেকে এমনভাবে তৈরি যে, কারওকে ক্ষমা করে দিতে পারলেও ঘটনাটা ভুলতে পারি না। আবার সব ভুলে গিয়ে মেক আপ করা আমার দ্বারা হয় না।

আলিয়া: সম্পর্ক যদি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে থাকে তবে ক্ষণিকের বিচ্ছেদটা কোনও ব্যাপারই নয়। ওটা পেরিয়ে রিইউনিয়ন হবেই। কিন্তু সম্পর্কের ভিত যদি নড়বড়ে হয়, তবে পুনর্মিলন সম্ভব নয়।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল ও কৌশিক সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE