ভিটামিন, খনিজের মাত্রা যাতে ঠিক থাকে, দৈনন্দিন খাবার থেকে তার অভাব পূরণ না হলে, অনেকেই সাপ্লিমেন্ট নেন। সেই তালিকায় ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন থাকে, তেমনই থাকে পটাশিয়ামের মতো জরুরি খনিজও। শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিটি উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে শরীরের জন্য উপকারী তিন সাপ্লিমেন্টের মাত্রা সামান্য বেড়ে গেলেই ঘটতে পারে অঘটন।
ভিটামিন ডি: হাড় গঠনে, ক্যালশিয়াম শোষণে, বিপাকহার ঠিক রাখতে ভিটামিন ডি-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সূর্যালোকের সংস্পর্শে ত্বক এই ভিটামিন ডি তৈরি করে। ভিটামিন ডি-র অভাব হলে পায়ে, হাঁটুতে ব্যথা হয়। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিপূরণেও ওষুধ খান। তবে সেই মাত্রা যদি বেশি হয়, ক্ষতি হতে পারে হার্টেরও। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতি মিলিলিটারে ২০ ন্যানোগ্রাম ভিটামিন ডি থাকা দরকার। কিন্তু তা যদি মাত্রার চেয়ে অনেকটা বেড়ে যায়, শরীরে ক্যালসিয়াম জমা হতে থাকে। তা থেকেই হতে পারে হাইপারক্যালসেমিয়া। এর ফলে ধমনীতে সেই ক্যালসিয়াম জমে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের মতো হার্টের অসুখ হতে পারে।
পটাশিয়াম: শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল পটাশিয়াম। সমস্ত রকম পেশির কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে খনিজটি জরুরি। হৃদ্পেশির কার্যক্ষমতাও কমে যেতে পারে পটাশিয়ামের অভাব হলে। পটাশিয়ামের অভাব দূর করতে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যায়, আবার নির্দিষ্ট খাবার খেয়েও সেই অভাব পূরণ করা যায়। তবে কোনও কারণে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট খেলে সেই মাত্রা বেড়েও যেতে পারে। আর তা থেকেই দেখা দিতে পারে হাইপারক্যালেমিয়া যা অ্যারিদমিয়ার মতো হার্টের সমস্যা। এতে অনিয়মিত হয়ে যায় হৃৎস্পন্দন। কখনও তা বেড়ে যায়, কখনও কমে যায়।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড: হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে শুধু ত্বক নয়, চুলের জেল্লা বজায় রাখতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জরুরি। এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ট্রাইগ্লিসেরাইডের মাত্রা কমাতে, হৃৎস্পন্দন নিয়মিত রাখাতে সাহায্য করে এটি। তেলযুক্ত মাছ, বাদাম, বেশ কিছু ফল এর উৎস। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব দূর করতে কড লিভার অয়েল, ফিশ অয়েল খাওয়ার চল আছে। তবে তা মাত্রাতিরিক্ত হলেই বিপদ। দৈনিক ৩ গ্রামের বেশি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেলে সমস্যা হতে পারে নানা রকম। প্রথমত, এটি রক্তকে অতিমাত্রায় তরল করে দিতে পারে, দ্বিতীয়ত তা হার্টের পক্ষেও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, স্ট্রোক হওয়াও অসম্ভব নয়। সে কারণে দিনে ১ থেকে ২ গ্রাম ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডই যথেষ্ট।