Advertisement
E-Paper

ফ্যাটি লিভার বলে পেঁপে খেয়ে দিন কাটছে? বাদাম-চকোলেটও খাওয়া যায়, বলছেন চিকিৎসকেরা

ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকলে কোনটি খাওয়া যায়, কোনটি নয়, তা নিয়ে অনেকের সংশয় থাকে। কোন চার খাবারে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বশে থাকতে পারে, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ১৫:৪৬
ফ্যাটি লিভারের জন্য ভাল কোন কোন খাবার?

ফ্যাটি লিভারের জন্য ভাল কোন কোন খাবার? ছবি: সংগৃহীত।

হার্ট বা কিডনি নিয়ে লোকের যত মাথাব্যথা, ততটা লিভার নিয়ে সকলে ভাবেন না। অথচ লিভার নষ্ট হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। খাবার হজম, খাদ্য থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ সংশ্লেষ এবং সঞ্চয়, শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি লিভারই করে। অথচ অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জেরে ক্রমশই বাড়ছে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। এতে অতিরিক্ত মেদ জমে যায় লিভারে। তার ফলে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি ক্রমশ তার কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। ফ্যাটি লিভারের বিষয়টি লঘু ভাবে নিলে, ভবিষ্যতে বিপদ ঘটতে পারে বলে সাবধান করছেন চিকিৎসকেরা।

লিভারে মেদ জমলে, খাওয়াদাওয়ায় বিধিনিষেধ এসে যায়। পেঁপে থেকে, সব্জি সেদ্ধ থেকে ফলমূল, অল্প তেল-মশলায় রান্না করা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। একই সঙ্গে শুরু হয় সংশয়। কোনটি খাবেন, কোনটি নয়। কেউ বলেন বাদাম খেলেই ফ্যাট বাড়বে দ্রুত। চকোলেটের তো প্রশ্নই নেই। কোন ফল ভাল, কোনটি নয় তা নিয়েও বাড়ির লোকে নানা পরামর্শ দেন।

তবে চিকিৎসকেরা বলছেন অন্য কথা। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, বাদাম থেকে ডার্ক চকোলেট, বেরি জাতীয় ফল-সহ অনেক খাবারই ফ্যাটি লিভারে খাওয়া চলে। বরং এগুলি সুস্থ থাকতেই সাহায্য করে। হাভার্ডে পড়াশোনা করা ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট, সমাজমাধ্যম প্রভাবী সৌরভ শেট্টি জানাচ্ছেন, চার ধরনের খাবার তালিকায় রাখলে সুস্থ থাকা সহজ হবে।

খেজুর এবং আখরোট: খেজুর এবং আখরোট কিন্তু ফ্যাটি লিভারেও খাওয়া চলে। খেজুরে রয়েছে সলিউবল ফাইবার। আখরোটে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। খেজুরের সলিউবল ফাইবার লিভারে ফ্যাট সঞ্চয়ের মাত্রা হ্রাস করে। খাবার থেকে পুষ্টি এবং শর্করা শোষণের পদ্ধতি শ্লথ করে দেয়। এর সঙ্গে যদি আখরোট যোগ করা যায়, ফল মেলে আরও বেশি। আখরোটে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারের প্রদাহ কমাতে এবং উৎসেচকের ক্ষরণ বৃদ্ধিতে সহায়ক বলছে একটি গবেষণা।

সৌরভ জানাচ্ছেন, দুটো খেজুর এবং কয়েকটি আখরোট সপ্তাহে দু’-তিন দিন খাওয়া যেতেই পারে। সুবর্ণ গোস্বামীও বলছেন, ‘‘ফ্যাটি লিভার হলেও বাদাম খাওয়া চলে। তবে মাত্রা থাকা দরকার। দিনে দু’-তিনটি বাদাম ঠিক আছে। তার বেশি হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’’

ডার্ক চকোলেট এবং বাদাম: ডার্ক চকোলেট নিয়ে একাধিক গবেষণায় এর উপকারিতার কথা উঠে এসেছে। মেজাজ ভাল রাখা থেকে ওজন বশে রাখা সংক্রান্ত অনেক উপকারই মেলে ডার্ক চকোলেট খেলে। ডার্ক চকোলেট মেলে পলিফেলনলস। উচ্চ মাত্রার ডার্ক চকোলেটে (অন্তত ৭০ শতাংশ ) রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। দৈনন্দিন বিপাকক্রিয়ায় শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস বা অণু তৈরি হয়। এই ফ্রি র‌্যাডিক্যাল কোষের ক্ষতি করে। তৈরি হয় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এই ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে বাঁচায়। লিভারকেও রক্ষা করে। বাদামে থাকে ভিটামিন ই, সি এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। অতীতের গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার লিভারের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।

তবে এই দুই খাবার সপ্তাহে একদিন বা দু’দিন খাওয়া যেতে পারে। সুবর্ণ সতর্ক করছেন, ডার্ক চকোলেটের উপকারিতা থাকলেও ছোট্ট একটা টুকরোই একবারে খাওয়া যেতে পারে।

আপেল এবং দারচিনি গুঁড়ো: আপেলের উপর মধু এবং দারচিনি গুঁড়ো ছড়িয়ে খেয়েছেন কখনও? আপেলে থাকা পেকটিন নামক ফাইবার পেটের জন্য ভাল। ফ্যাট গলাতেও তা পরোক্ষে সাহায্য করে। মধুও পেটের পক্ষে উপকারী অণুজীবদের জন্য ভাল। আপেল, মধু এবং দারচিনির গুঁড়ো লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আপেল অবশ্য নিয়মিত খাওয়া চলে।

টক দই এবং বেরি জাতীয় ফল: টক দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক যা পেটে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অন্য দিকে বেরি জাতীয় ফল বিভিন্ন রকম ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। স্ট্রবেরি, ব্লুবেরিতে থাকা পলিফেনলস এবং ভিটামিন সি লিভারের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘যে কোনও বেরি জাতীয় ফলই ফ্যাটি লিভারের জন্য ভাল। বিশেষত ব্লু বেরি। নিয়মিত ফল খাওয়া খুবই ভাল।’’

Fatty Liver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy