একটিই খাবার। তাতে ওজন কমানোর শক্তি যেমন আছে। তেমনই আছে, শরীরক প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানোর ক্ষমতাও। স্বাস্থ্যসচেতনদের দুনিয়া তাই এখন পাখির চোখে দেখছে ওই খাবারকে। মিলেট।
মিলেট মানে জোয়ার, বাজরা, রাগির মতো দানা শস্য। ভারতে তা বহু বছর ধরেই খাওয়া হয়ে আসছে বেশ কিছু রাজ্যে। গুণাগুণের পরোয়া না করেই। তবে ইন্টারনেট আর সমাজমাধ্যমের দৌলতে এখন মানুষ জানতে পারছেন মিলেটের উপকারিতা। তাই শুধু ভারতের গুটি কয়েক রাজ্য নয়, দেশের সর্বত্র এমনকি, বিদেশেও স্বাস্থ্যসচেতনেরা মিলেট খাচ্ছেন। ভারত এই খাবারকে বলছে সুপারফুড। পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর বলছেন, পুষ্টির সঙ্গে আপোস না করে ওজন কমাতে চাইলে প্রাতরাশে রাখতে পারেন মিলেট।
প্রাতরাশে মিলেট কেন খাবেন?
হজম: মিলেট সহজে হজম হয়, তাই সকালে এটি খেলে পেটের ওপর চাপ পড়ে না।
কাজ করার শক্তি : মিলেট ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত করে। ফলে এটি দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
গ্লুটেন-মুক্ত: যারা গ্লুটেন সংবেদনশীল, তাদের জন্য মিলেট একটি চমৎকার বিকল্প।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে মিলেট কতটা উপকারী?
১। মিলেট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বাড়তি খাওয়ার প্রবণতা কমে। যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জরুরি।
২। মিলেটে ক্যালোরির মাত্রা অনেক কম থাকে। ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি মেপে খাবার খেলে মিলেট নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।
৩। মিলেটে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। অর্থাৎ এটি খাওয়ার পরে রক্তে শর্করা এক ধাক্কায় অনেক খানি বাড়িয়ে দেয় না। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে। রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়লে আরও মিষ্টি বা আরও নোনতা খাবার খাওয়ার ইচ্ছে বেড়ে যায়। মিলেটে সেই ঝুঁকি নেই। বরং এটি অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মিলেট খেলে কী কী পুষ্টি যায় শরীরে?
১। মিলেটে রয়েছে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। প্রাণীজ প্রোটিন খেলে অনেকেরই প্রদাহের সমস্যা হয়। তার কারণ অধিকাংশ প্রাণীজ প্রোটিনেই প্রদাহের মাত্রা থাকে বেশি। আর অতিরিক্ত প্রদাহ শরীরে ব্যথা থেকে শুরু করে নানা রোগের কারণ হতে পারে। উদ্ভিজ প্রোটিন সেই তুলনায় নিরাপদ।
২। মিলেট ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রয়েছে। যা হাড়ের স্বাস্থ্য, পেশির স্বাস্থ্য, রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ এবং মেধার বিকাশের জন্য জরুরি।
৩। মিলেটে রয়েছে ত্বক, চুল এবং স্নায়ুর জন্য জরুরি বি ভিটামিন। তাই সকালে প্রথম খাবার হিসাবে মিলেট খেলে ত্বক এবং চুল থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। স্নায়ুজনিত সমস্যাও থাকবে দূরে।
আরও পড়ুন:
প্রাতরাশে মিলেট কী ভাবে খাবেন?
বিভিন্ন ধরনের মিলেট রয়েছে। যেমন বাজরা, রাগি, বা জোয়ার ইত্যাদি। তা দিয়ে উপমা, খিচুড়ি, রুটি, পোলাও এমনকি, মিলেটের প্যানকেকও বানানো যেতে পারে।