Advertisement
E-Paper

৪০ পেরোনোর পর তারুণ্য ধরে রাখতে চান? ৫টি অভ্যাস বদলে ফেলে দেখতে পারেন

বয়স তো বাড়বেই। বয়সের ছাপও পড়বে শরীরে। কিন্তু যদি সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা যায়, তাহলে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ভারসাম্য রেখে অন্য রকম সৌন্দর্য বজায় রাখা সম্ভব হবে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় —‘এজিং লাইক ফাইন ওয়াইন’। কিন্তু কেমন করে সেটা সম্ভব?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৪
বয়স কী ভাবে বাড়বে, তা আপনার হাতেই!

বয়স কী ভাবে বাড়বে, তা আপনার হাতেই! ছবি : সংগৃহীত।

চল্লিশ পেরোলেই চালশে! শুধু চোখে কেন, শরীরেও সেই ছাপ পড়ে। পুরুষদের উদ্যমে টান পড়তে থাকে। শরীরে চেপে বসতে শুরু করে ক্লান্তি। সেই ক্লান্তির ছাপ অনেক সময় পড়ে মুখে চোখেও। মহিলাদেরও নানা রকম শারীরিক জটিলতা শুরু হয় এই বয়স থেকেই। যা তাঁদেরও চেহারায় ফুটে উঠতে শুরু করে।

কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন, তাতে কী, বয়স তো হবেই, তাহলে বয়স্ক দেখাতে আপত্তি কিসে। এ প্রশ্নের দু’টি জবাব হতে পারে। এক, যদি তাই হতো তবে বিশ্বজুড়ে পাকা চুল ঢাকার জন্য চুলের রং বিক্রি হত না। দুই, বয়স বৃদ্ধিরও ধরন রয়েছে। এমন নয় যে, ৪০-এও ৩০ বছর বয়সিদের মতো দেখতে লাগতে হবে। কিন্তু বয়স বৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া তাতে স্বাস্থ্যের ছাপ থাকাও জরুরি। সুস্বাস্থ্য বজায় থাকলে বয়স বাড়লেও দেখতে ভাল লাগবে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয়, ‘এজিং লাইক ফাইন ওয়াইন’। এখন প্রশ্ন হল, আপনার বয়স কী ভাবে ফাইন ওয়াইন-এর মতো বাড়বে সৌন্দর্য অটুটু রেখে?

এক যাপন প্রশিক্ষক লিউক কুটিনহো বলছেন, দৈনন্দিন অভ্যাসে পাঁচটি জরুরি বদল আনলেই তা সম্ভব। কম বয়সে ওই সমস্ত অভ্যাসের দিকে নজর না দিলেও চলবে। তবে বয়স বাড়লে এ ব্যাপারে একটু বাড়তি সতর্কতা দরকার। ওই পাঁচ অভ্যাস কী কী? লিউক জানাচ্ছেন, পাঁচটি অভ্যাসের কথা শুনলে মনে হতে পারে সহজ। কিন্তু নিয়ম করে তা মেনে চলা কঠিন। নিজেকে শৃঙ্খলে বাঁধতে হবে ওই রুটিন বজায় রাখতে হলে।

১। ঘুম: বয়সকে বশে রাখার সবচেয়ে জরুরি ধাপ

লিউক বলছেন, ঘুমকে শুধু ঘুম ভাবলে চলবে না। ঘুমকে ভাবুন আপনার বয়স কমানোর ওষুধ। প্রতি দিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। ক্যানসারের এক চিকিৎসক অর্পিতা বনসলও এক পডকাস্টে এ ব্যাপারে একই কথা বলেছেন। তিনি আবার বলছেন, ‘‘একটা রাতও যদি আপনি ভাল ভাবে না ঘুমোন, তবে তা আপনাকে প্রি-ডায়াবিটিক করে তুলতে পারে। কারণ, ঘুম না হলে ইনসুলিন হরমোন ভাল কাজ করতে পারে না। ফলে শরীরের শর্করা ভেঙে শক্তিতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াও কাজ করতে পারে না।’’

অন্য দিকে, ঘুমোলে শরীরের হরমোন নিঃসরণ যথাযথ হয়। যা সুস্থ থাকার জন্য জরুরি। এর পাশাপাশি ঘুমোলে শরীরের সমস্ত পেশি সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্রাম পায়। প্রয়োজন মতো নিজেকে মেরামতও করে নিতে পারে। নিয়মিত ভাল ভাবে ঘুমোতে পারলে ত্বক ভাল থাকে। বিপাকের হারও ভাল থাকে। যা ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি।

২। খাওয়াদাওয়ার রুটিন

৪০-এর পর শরীরে নানা ধরনের পুষ্টির অভাব হতে পারে। কিছু পুষ্টির প্রয়োজনও হতে পারে বেশি। নিজের শরীরের প্রয়োজন বুঝে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। সেই মতো একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করে তা মেনেও চলতে হবে। কারণ এই বয়সে আপনি কী ভাবে খাওয়াদাওয়া করছেন, তার প্রভাব পড়বে ভবিষ্যতে আপনার স্বাস্থ্যেও। বয়স যত বাড়ে তত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। সে জন্যই বয়সকালে নানা ধরনের রোগে ভোগেন মানুষ। তাই সে কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া উচিত। নিজের রোগ প্রতিরোধ শক্তি ভাল রাখার চেষ্টা করা উচিত।

লিউক বলছেন, ‘‘এই সময়ে পুরুষ এবং নারী নির্বিশেষে উভয়কেই খাবারের থালায় লিন প্রোটিন রাখতে হবে বেশি করে।’’ লিন প্রোটিন অর্থাৎ, যে সমস্ত খাবারে প্রোটিন থাকলেও তার সঙ্গে ফ্যাট থাকে না। এর মধ্যে রয়েছে ডিমের সাদা অংশ, মুরগির বুকের অংশের মাংস, ছোট মাছ, সয়াবিন, ডাল, দই, ছানা ইত্যাদি। এ ছাড়া এই সময়ে শরীরে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এ, বি, সি ভিটামিনেরও প্রয়োজন পড়ে বেশি। দরকার পড়ে হাড় এবং পেশির স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য ভিটামিন কে, ক্যালশিয়াম, সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জ়িঙ্ক ইত্যাদি পুষ্টিগুণ। তার জন্য দিনে অন্তত একটি করে মরসুমি ফল, টাটকা সব্জি, সবুজ শাক-পাতাও রাখতে হবে খাবারের থালায়। আর এই খাবার খেতে হবে রুটিন মেনে। নৈশাহার বেশি রাতে করলে চলবে না। আর প্রাতরাশে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

৩। জল

সুস্থ থাকার আরও একটি জরুরি উপাদান হল জল। কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা না থাকলে বা চিকিৎসকের কোনও রকম নিষেধ না থাকলে দিনে অন্তত আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া জরুরি। লিউক বলছেন, ‘‘দিন শুরু করুন এক গ্লাস (৩০০ মিলিলিটার) উষ্ণ জল খেয়ে। সম্ভব হলে সারা দিনে অল্প অল্প করে ঈষদুষ্ণ জল খেতে পারেন। না পারলে স্বাভাবিক ঘরের তাপমাত্রার জল খান। তবে সন্ধ্যার মধ্যেই ২ লিটার জল খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। কারণ, রাতের দিকে বেশি জল খেলে তা কিডনিতে চাপ দিতে পারে।’’

৪। শরীর চর্চা

লিউক বলছেন, ‘‘শুনতে একঘেয়ে লাগলেও এটা সত্যি যে, বয়স বাড়লে শরীরচর্চা জরুরি। কারণ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পেশির জোর কমতে থাকে। তাদের সুস্থ রাখার জন্য দিনে অন্তত ২০ মিনিটের জন্য হলেও শরীরচর্চা করুন। জোর দিন কোর মাসল অর্থাৎ পেটের নীচের অংশের পেশির ব্যায়ামে। চাইলে হাঁটতে বা জগিং করতে পারেন।’’

৫। প্রকৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকা

শহরের মানুষজন চার দেওয়ালের মধ্যেই বন্দি থাকেন দিনের বেশির ভাগ সময়। হয় বাড়ি, নয়তো অফিসেই দিন কাটে। অথবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য বসেন কোনও ক্যাফে বা রেস্তরাঁয়। এই অভ্যাস বদলানো জরুরি বলে জানাচ্ছেন লিউক। তিনি বলছেন, ‘‘দিনে অন্তত একটা সময় মিনিট ১৫-র জন্য সূর্যের আলো লাগতে দিন শরীরে। সেটা সকালের দিকে হলেই ভাল। খোলা হাওয়ায় সময় কাটানোর চেষ্টা করুন কিছু ক্ষণ। সম্ভব হলে ঘাসে পা ফেলে হাঁটুন। গভীর শ্বাস নিন। এক মাস এই রুটিন মেনে চললে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনও ভাল থাকবে। পাশাপাশি আপনার দেহঘড়িও একটি নির্দিষ্ট ছন্দে বাঁধা থাকবে। যা সুস্থ রুটিনের জন্য জরুরি।’’

Anti Ageing Anti Ageing Hacks
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy