নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উষ্ণতার খোঁজ একটু অলীক মনে হতে পারে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যা বলছে, তাতে আর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই পারদ নামতে চলেছে। আর তা যদি হয়, তবে সকাল-সন্ধ্যায় চা ছেড়ে কফিতেই মজবেন অধিকাংশ মানুষ।সন্ধ্যায় বাড়িতে গরমাগরম হট চকোলেট বানিয়ে নেবেন কেউ কেউ! শিরশিরে আবহাওয়ায় হালকা আরাম দেওয়া উষ্ণতার খোঁজ করবেন শীতপ্রেমী থেকে শীতকাতুরে— সকলেই। কিন্তু উষ্ণতার জোগান দিতে একঘেয়ে কফি কেন, এমন বহু সুস্বাদু পানীয় রয়েছে, যা শরীরে একই রকম ওম এনে দিতে পারে। এ দেশেরই বিভিন্ন রাজ্যে শীতে সেই সব পানীয় খাওয়া হয়। তেমনই পাঁচ পানীয়ের সন্ধান রইল। যা উষ্ণতায় তো বটেই উপকারিতাতেও কফির সঙ্গে টক্কর দিতে পারে।
১। বাজরা রাব
রাজস্থানের ঘরে ঘরে এই উষ্ণ এবং হালকা মিষ্টি স্বাদের পানীয় খাওয়ার চল রয়েছে, বিশেষ করে শীতকালে। বাজরা, ঘি, গুড় এবং জোয়ান, গোলমরিচের মতো মশলা মিশিয়ে ওই পানীয় তৈরি করা হয়। থর মরুভূমির রাজ্যে ঠান্ডাও পড়ে হাড় কাঁপানো। তেমন শীতের সন্ধ্যায় এই বাজরা রাব উষ্ণ রাখে রাজস্থানীদের। তা ছাড়া এই চা পুষ্টিকরও। বাজরায় রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম। তার উপর তার সঙ্গে ঘি, গোলমরিচ, জোয়ানের মতো মশলা থাকায় তা যেমন হজমে সাহায্য করে, প্রোটিনের জোগান দেয়, তেমনই প্রদাহনাশেও সাহায্য করে।
২। গুড় কি চায়
মহারাষ্ট্রের শীতের পানীয়। যার স্থানীয় নাম গুলাচা চাহা। তবে একা মহারাষ্ট্র নয়। উত্তরের বহু রাজ্য, যেমন— পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশেও গুড় দিয়ে চা খাওয়ার চল আছে। সেখানে এই পানীয় গুড় কি চায় নামেই পরিচিত। সাধারণ চা পাতার সঙ্গে এলাচ এবং আদা মিশিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে মেশানো হয় ঘন দুধ এবং গুড়। সেই চায়ের স্বাদ যেমন মনকাড়া, তেমনই তা শরীরে ওম আনতেও পারে। গুড় কি চায় শীতের সময় জ্বর-সর্দি-কাশি হলেও খাওয়ার চল রয়েছে ওই রাজ্যগুলিতে।
৩। শকরখন্ডি দুধ
শকরখন্ডি হল রাঙা আলু। যার পুষ্টিগুণে কমতি নেই। সেই রাঙা আলুই সেদ্ধ করে তার সঙ্গে দুধ আর ছোট এলাচের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি করা হয় শকরখন্ডি দুধ। এই পানীয় খাওয়ার চল রয়েছে মূলত উত্তর ভারতে। ওড়িশায় আবার এর সঙ্গে মিষ্টি মিশিয়ে ঘন করে শকরখন্ডির পায়েস বা ক্ষীর বানানো হয়। দু’টিই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
৪। রাগি হট চকোলেট
কর্নাটক, কেরল এবং দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে রাগি মল্ট অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পানীয়। যা সারা বছরই খাওয়া হয়। সেই রেসিপিকেই সামান্য বদলে শীতে কোকো পাউডার, দুধ, গুড় এবং দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে রাগি হট চকোলেট বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তার জন্য রাগির আটার জোগান রাখতে হবে হাতের কাছে। বাকি উপকরণও সহজলভ্য। ক্যালশিয়াম, আয়রন, প্রোটিনের জন্য জরুরি অ্যামাইনো অ্যাসিড, সবই পাওয়া যাবে এই পানীয়ে।
৫। কাশ্মীরি কাওয়া
কাশ্মীরের এই চা বানানো হয় দারচিনি, জাফরান, এলাচ আর থেঁতো করা কাঠবাদামের সঙ্গে গ্রিন টি মিশিয়ে। দেখতে হালকা হলেও এই চা খাওয়ার পরে বোঝা যায় তা শীতের সকাল-সন্ধ্যায় জরুরি উষ্ণতা পেতে কতটা দরকারি।