খাওয়াদাওয়া হয়ে গিয়েছে। তবু একটু পরেই মনে হল, একটু চিপ্স হলে কেমন হয়? কিংবা একটু বাদাম মাখা! না হলে একটা এগরোল?
কখনও ভেবে দেখেছেন, এই সব লোভনীয় খাবার যখন খেতে ইচ্ছা করে তখন আদৌ খিদে পেয়েছে কি না? হয়তো খানিকটা আগেই কোনও খাবার খেয়েছেন। হিসেব মতো খিদে পাওয়ার কথা নয়। তবু কেমন একটা খাই খাই ভাব। একেই বলে চোখের বা মনের খিদে।
ওজন বৃদ্ধি, পেটের গোলমাল, অসুস্থ হয়ে পড়ার জন্য দায়ী এই চোখের খিদে। কারণ, যে সব খাবার দেখে সচরাচর লোকজনের খেতে ইচ্ছা হয়, সেগুলি বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর, নয়তো উচ্চ ক্যালোরিসম্পন্ন। তা হলে এ থেকে মুক্তি মিলবে কী ভাবে? সহজ একটা যুক্তি রয়েছে। পেট যদি ভাল মতো ভরা থাকে তা হলে কিন্তু চট করে খেতে ইচ্ছে হবে না। মানে ভরপটে ভাত-মাছ খেলেন, তার মিনিট দশেকর মধ্যে পছন্দের খাবার দেখলেও, খাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন:
পুষ্টিবিদদের কথায়, স্বাস্থ্যকর, ফাইবার যুক্ত কিছু খাবার যদি দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখা যায়, তা হলে এই চোখের খিদে বা উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার প্রবণতা এড়ানো যেতে পারে। কী সেগুলি?
ওট্স: ওট্সে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এটি ফাইবার পাকস্থলীতে গিয়ে জেলের মতো পদার্থে পরিণত হয়। ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত হয় এই খাবার থেকে। শর্করার মতো দ্রুত তা থেকে শক্তি মেলে না। ফলে এই খাবার দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরা থাকে। সে কারণে সকালে ওট্সের স্মুদি, চিলা, প্যানকেক, অমলেটের মতো খাবার রাখতে পারেন।
ডিম: শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের জোগান দেয় ডিম। এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও। সেদ্ধ, পোচ, অমলেট— যে কোনও ভাবেই ডিম খেলে কিন্তু কিছুটা হলেও চোখের খিদে এড়াতে পারেন। তবে পেট ভরাতে হলে সব্জি মিশিয়ে একটু বেশি উপাদান দিয়ে তৈরি অমলেট খেতে হবে, বা ডিমের সঙ্গে অন্য কিছু খাবার খাওয়া দরকার।
গ্রিক ইয়োগার্ট: দিনভর উল্টোপাল্টা খিদে এড়াতে দিনে নিয়ম করে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার প্রবণতা এড়ানো সম্ভব। খাবার তালিকায় রাখতে পারেন ইয়োগার্ট। ভাল ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বৃদ্ধি ঘটিয়ে পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই খাবারটি কার্যকর। এতে প্রোটিনও মেলে। ফলের সঙ্গে ইয়োগার্ট খেতে পারেন। আবার বাদামও রাখতে পারেন সঙ্গে। এই ধরনের খাবার খেলে চট করে অন্য কিছু খেতে ইচ্ছা হবে না।
চিয়াবীজ: চিয়াবীজের গুণাগুণ এখন জানেন অনেকেই। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর চিয়াতে মেলে ফাইবার। জলে ভিজে এটি জেলের মতো হয়ে যায়। জলে ভেজানো চিয়াবীজও পেট ভরিয়ে রাখে।
আপেল: যে সময়টাতে ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছা হয় বা মনে হয় কোনও কিছু খাওয়া দরকার, তখন একটা আপেলও খেয়ে নিতে পারেন। ফাইবারে ভরপুর ফলটির ক্যালোরি কম, কিন্তু পুষ্টিগুণ যথেষ্ট। আপেল খেলেও বেশ কিছু ক্ষণ পেট ভরে থাকবে।