‘দুধ না খেলে হবে না ভাল ছেলে’। সুষম খাবার দুধ নিয়ে গান রয়েছে বাংলা ব্যান্ডের। শরীর-স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ছোটদের কার্যত বকাঝকা করেও দুধ খাওয়ানো হয়। দুধ বলতে গরুর দুধের কথাই আমরা বুঝি। এ ছাড়া, মোষ, ছাগল, উটের দুধেরও পরিচিতি আছে। কিন্তু এখন বাজারে উদ্ভিজ্জ দুধ নিয়ে চর্চা।
প্রাণিজ দুধের ল্যাক্টোজ় সহ্য হয় না অনেকেরই। এ ছাড়াও ভিগানরা প্রাণিজ কোনও খাবার, এমনকি দুধও খান না। তার ফলে ইদানীং উদ্ভিজ্জ দুধের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সেই তালিকায় রয়েছে কাঠবাদামের দুধও। গরমের দিনে রকমারি পানীয়ে গলা ভেজাতে মন চায় সকলেরই। এমন সময় সহজপাচ্য এবং উপকারী পানীয় চাইলে গলা ভেজাতে পারেন ঠান্ডা কাঠবাদামের দুধে। তবে চুমুক দেওয়ার আগে জেনে নিন এর গুণাগুণ।
ত্বকের বর্ম: ভিটামিন ই-তে ভরপুর কাঠবাদামের দুধে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। দুই-ই ত্বকের জন্য অত্যন্ত ভাল। ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর জার্নালে প্রকাশিত ২০১৮ সালের গবেষণাপত্র বলছে, ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ক্যালোরি কম: কাঠবাদামের দুধে ক্যালোরির পরিমাণও যথেষ্ট কম। ফলে গরুর দুধের বদলে কোল্ড কফি বা মিল্ক শেক তৈরিতে কাঠবাদামের দুধও ব্যবহার করা যায়। এক কাপ কাঠবাদামের দুধে ১০০-১২০ ক্যালোরি মেলে। ফলে যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, এই দুধ খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
ল্যাক্টোজ় থাকে না: গরুর দুধে ল্যাক্টোজ়থাকে। এটি এক ধরনের শর্করা। ল্যাক্টোজ় হজম করার জন্য একটি বিশেষ ধরনের উৎসেচকের প্রয়োজন। নাম, ‘ল্যাকটেজ় ’। সাধারণত মানবদেহেই এই উৎসেচক উৎপন্ন হয়। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই উৎসেচক উৎপাদনের হার খুবই কম। যাঁদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে এই উৎসেচক উৎপন্ন হয় না, তাঁদের ল্যাক্টোজ় নামক শর্করাটি ঠিক মতো হজম হয় না। ফলে পেট ফাঁপা, বদহজম ও বমি বমি ভাবের মতো একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু কাঠবাদামে ল্যাক্টোজ় থাকে না। ফলে যাঁদের গরুর দুধ সহ্য হয় না, তাঁরাও এটি অনায়াসে খেতে পারেন।
পুষ্টিতে ভরপুর: আমেরিকার কৃষি দফতরের তথ্য বলছে, কাঠবাদামে রয়েছে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই। হাড় মজবুত করতে, শরীর ভাল রাখতে যা অত্যন্ত উপকারী। গরমের দিনে এই দুধ খেলে এক দিকে যেমন শরীরে জলের চাহিদাও মিটবে, তেমনই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে শরীর। গরমে শরীর তরতাজা রাখতে পানীয় হিসেবে এই দুধ অত্যন্ত উপাদেয়।
নানা রকম পানীয়: কাঠবাদামের দুধ যে শুধু খেতে হবে তা নয়, হজমে সহায়ক এই দুধ দিয়ে স্মুদি থেকে কোল্ড কফি, রকমারি পানীয় বানিয়ে নেওয়া যায়। গরুর দুধের গন্ধ অনেকেরই পছন্দ নয়। কিন্তু কাঠবাদাম থেকে তৈরি দুধের গন্ধ সম্পূর্ণ পৃথক। এই দুধ দিয়ে শেষপাতে খাওয়ার বিভিন্ন পদও বানিয়ে নেওয়া যায়।