Advertisement
E-Paper

ক্যানসার সারাবে ব্যাঙ-গিরগিটি? এদের শরীরে পাওয়া ব্যাক্টেরিয়া খেয়ে ফেলছে টিউমার, আর কী দেখলেন বিজ্ঞানীরা?

ক্যানসার সারাতে নিত্যনতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আসছে। তবে ব্যাক্টেরিয়াও যে টিউমার কোষ খেয়ে ফেলতে পারে, তা আগে দেখেননি গবেষকেরা। জাপানের ট্রি-ফ্রগের শরীরে জন্মানো এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া টিউমার দেখলেই তেড়ে যায়। গবেষণায় আর কী দেখলেন বিজ্ঞানীরা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:১৮
ক্যানসার কোষ খেয়ে ফেলছে ব্যাক্টেরিয়া!

ক্যানসার কোষ খেয়ে ফেলছে ব্যাক্টেরিয়া! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ব্যাঙ-গিরগিটি দিয়েও ক্যানসারের চিকিৎসা হবে? নতুন গবেষণায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন জাপানি বিজ্ঞানীরা। জাপান অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটি গবেষণা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে গবেষক মহলে। ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে ক্যানসারের চিকিৎসা অনেকটা বিষে বিষে বিষক্ষয়ের মতো। সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া টিউমার দেখলেই তেড়ে গিয়ে খেয়ে ফেলবে। আর এ ভাবেই কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপির প্রয়োগ না করেই ক্যানসার সারিয়ে ফেলা যাবে। এমন চেষ্টা নিয়েই এগোচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও গবেষণা আপাতত ইঁদুরের উপরেই হয়েছে।

গবেষণাটির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন অধ্যাপক ইজিরো মিয়াকো। তিনি জানিয়েছেন, জাপানি ট্রি-ফ্রগ (ড্রায়োফাইটস জ্যাপোনিকাস)-এর শরীরে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, যার নাম ইউইংগেলা আমেরিকানা। এই ব্যাক্টেরিয়াটি আবার গ্রাস লিজ়ার্ড প্রজাতির গিরগিটির শরীরেও জন্মায়। গবেষকেরা দেখেছেন, এই ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে এমন গুণ রয়েছে যা টিউমার ধ্বংস করতে পারে। ইঁদুরের শরীরে এমন ব্যাক্টেরিয়া ঢুকিয়ে দেখা গিয়েছে, সেগুলি খুব দ্রুত সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় হাজার তিনেক। এত সংখ্যক ব্যাক্টেরিয়া এক সঙ্গে ঝাঁপিয়ে টিউমার কোষগুলিকে খেয়ে ফেলেছে। ফলে টিউমার আর বিভাজিত হয়ে সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়ার সময় বা সুযোগ কোনওটিই পায়নি।

ক্যানসারের চিকিৎসায় যে ধরনের ওষুধ এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বা কেমোথেরাপি-রেডিয়োথেরাপির প্রয়োগ হচ্ছে, তার চেয়েও নাকি দ্রুত হারে ক্যানসার কোষ নষ্ট করে দিতে পারে ওই ব্যাক্টরিয়া। এমনই দাবি করেছেন জাপানি গবেষকেরা। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি শরীরে ঢুকলেই রোগ প্রতিরোধক টি-কোষ, বি-কোষ ও নিউট্রোফিল সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলি সবই রোগ প্রতিরোধী কোষ, যা শরীরের ভিতরেই জন্মায়। ইউইংগেলা আমেরিকানার মতো ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি বুঝলেই রোগ প্রতিরোধী কোষগুলি জেগে উঠে বিশেষ ধরনের প্রোটিন তৈরি করতে থাকে, যে প্রোটিনগুলি ক্যানসার কোষ নষ্ট করে দিতে পারে। ইঁদুরের শরীরে দু’রকমের প্রোটিন পেয়েছেন গবেষকেরা যার নাম ‘টিএনএফ-আলফা ‘ এবং ‘আইএফএন-গামা’। এই দুই প্রোটিনই টিউমার কোষ ধ্বংস করেছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

তবে ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে ক্যানসার সারানোর পদ্ধতি কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়ার বিষ কমিয়ে সেগুলিকে মানুষের শরীরে ঢোকালে তারা কেমন আচরণ করবে সেটিও দেখার মতো বিষয়। যদিও গবেষকরদের দাবি, ইঁদুরের শরীরে ব্যাক্টেরিয়া ক্যানসার কোষ ধ্বংস করার পরে সুস্থ কোষগুলির আর কোনও ক্ষতি করেনি। অন্তত মাস দুয়েক ইঁদুরগুলিকে পর্যবেক্ষণে রেখে দেখা গিয়েছে, ব্যাক্টেরিয়ার জন্য অন্য কোনও অসুখও হয়নি। ব্যাঙের শরীরের ওই ব্যাক্টেরিয়া স্তন ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সারাতে কাজে আসবে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। ব্যাক্টেরিয়া থেরাপি মানুষের শরীরে কতটা কার্যকরী হয়, সেটাই এখন দেখার।

Cancer treatment Cancer Risk
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy