হেমন্তের মরসুমে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা লেগেই রয়েছে। আজ বৃষ্টি, কাল রোদ, দুপুরে গরম তো রাতে মনোরম। হাওয়ার ক্রমাগত রূপবদলে ঠান্ডা লাগা, সর্দি বসা, কাশি, জ্বর ভাব যেন লেগেই থাকে। মুঠো মুঠো ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া টোটকাও প্রয়োগ করুন। হেমন্ত পেরোনোর পর শীতকালেও ৯টি মশলা যেন হেঁশেলে থাকে, সে দিকে নজর রাখুন। কারণ এই মশলাই অনেক রোগ, অসুখবিসুখকে দূরে রাখতে পারে।
রইল ৯টি মশলার তালিকা—
হলুদ: কারকিউমিন যৌগের জোরে নানা রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে হলুদ। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশী হলুদ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, গাঁটের শক্তি বাড়ায়, ঋতুবদলের সময়ে সংক্রমণের প্রকোপ কমায়। কেউ দুধে মিশিয়ে খান, কেউ গুঁড়ো হিসেবে। কাঁচা হলুদও খান অনেকে। রোজের রান্নাতেও মেশানো যায় হলুদ।
দারচিনি: সুগন্ধি এই মশলাও পুষ্টিগুণে ভরপুর। আবহাওয়া বদলের সময়ে দারচিনির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ এটি শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার ভারসাম্যও বজায় রাখে। মিষ্টি ছাড়া চা, কফি বানানোর সময়ে চিনির বদলে দারচিনি ব্যবহার করা যায়। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং গলা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
গোলমরিচ: রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে বলেই গোলমরিচ হেমন্ত ও শীতকালের জন্য উপযুক্ত মশলা। তা ছাড়া খাবার থেকে যে পুষ্টি শরীরে প্রবেশ করে, সেগুলির যথাযথ শোষণ করতে পারে কালো রঙের এই মরিচ। হজমক্ষমতাও উন্নত করে গোলমরিচ। মাছ, মাংস, তরকারি, স্যুপে যোগ করে দেওয়া যায়। স্বাদ ও পুষ্টি, দুইই বাড়বে।
আদা: হজমের সমস্যা দূর করার জন্য সুপরিচিত। আদায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশী বৈশিষ্ট্য। গলা বসে থাকলে, ঠান্ডা লেগে থাকলে, আদা মেশানো চা খেলে আরাম মেলে।
লবঙ্গ: তীব্র সুগন্ধের জন্য খ্যাত। এর অ্যান্টিসেপ্টিক বৈশিষ্ট্য হালকা ঠান্ডার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। গলার ব্যথা উপশম করে, হজমে সাহায্য করে এবং শ্বাসকে সতেজ, দুর্গন্ধমুক্ত করে।
এলাচ: হজমে সাহায্য করে, পেট ফাঁপা কমায়। শীতের বিষণ্ণ দিনে মন ও মেজাজ ভাল রাখতে সাহায্য করে। এমন ক্ষমতাসম্পন্ন মশলা বাঙালি খাবারের নানা পদে মেশানো যেতে পারে স্বাদবৃদ্ধির জন্য।
জিরে: হজম এবং বিপাকক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। উষ্ণতাবৃদ্ধি করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে মশলাটির। তাই হালকা ঠান্ডায় শরীরকে আরামে রাখতে সাহায্য করে। স্যুপ, ডাল বা বাটারমিল্কে ভাজা জিরেগুঁড়ো ব্যবহার করুন। অথবা রোজ সকালে জিরে ভেজানো জলও পান করতে পারেন।
সর্ষে: শরীরে তাপ উৎপন্ন করার জন্য পরিচিত সর্ষে। রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, পেশিকেও মজবুত করে। ভারতীয় হেঁশেলে সর্ষের ব্যবহার হয়ে আসছে নানাবিধ রান্নায়। মাছ থেকে শুরু করে শাকে।
মেথি: বিপাকীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে মেথি। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে এই মশলা। মেথির হালকা তেতো স্বাদ তরকারি, পরোটা এবং মুসুর ডালের স্বাদে অন্য মাত্রা যোগ করে।