যাঁরা খুব বেশি সাজগোজ করতে ভালবাসেন, তাঁদের কি অসুখ করে না? না কি রোগ হলে সাজগোজ-ফ্যাশনের পাট চুকে যায়? কোনওটাই নয়, বরং রোগের কথা ভুলতেই সাজগোজ করে নিজেকে ভাল রাখেন অনেকে।
দুনিয়ায় এমন অনেক রোগ আছে যার জন্য বিছানায় পড়ে থাকতে হয় না। ডায়াবিটিস, মাইগ্রেন, হাঁপানি বা অ্যাজ়মা, সিওপিডি-সহ বহু রোগে ভুক্তভোগীরা ঘরে রোগের সঙ্গে যতই যুদ্ধ করুন, হাতের কাছে রাখুন ইনহেলার, ইনসুলিন পাম্প, প্রেসার মাপার যন্ত্র বা গ্লুকোজ় মনিটরের মতো ‘অস্ত্রশস্ত্র’, বাইরে ফ্যাশনদুরস্ত হয়েই থাকেন। পুতুলদের দুনিয়ার শৌখিনী বার্বিকেও দেখা গেল সেই সাহস দেখাতে। সেজেগুজে সে বাইরে বেরোল হাতে গ্লুকোজ় মনিটর সেঁটে আর কোমরে ইনসুলিন পাম্প গুঁজে। এই প্রথম বার্বি ডলের কোনও রোগ হল। খেলনা প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যাটেল জানাল, এই বার্বি টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিসের রোগী!
হাতে হার্টের আকৃতির গ্লুকোজ় মনিটর। কোমরে গোঁজা ইনস্যুলিন পাম্প। ছবি: সংগৃহীত।
টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিস হল এমন এক রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিই ভুল করে আক্রমণ করে বসে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলিকে। ইনসুলিন হল সেই হরমোন, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এখন ইনসুলিনই যদি শরীরে তৈরি না হয়, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকবে। শুরু হবে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা হাই ব্লাড সুগার। এ রোগ আজীবনের রোগ এবং বিপজ্জনক রোগ। যা সাধারণত অল্প বয়সেই ধরা পড়ে। আর এক বার ধরা পড়লে দরকার নিয়মিত ইনসুলিন থেরাপি। দরকার রক্তে শর্করার মাত্রায় নিয়মিত নজরদারিও। শিশু অথবা কিশোর বয়সেই এই রোগ ধরা পড়ে। বার্বি পুতুল প্রস্তুতকারী ম্যাটেল বলছে, ‘‘বার্বির মতো খেলনার মাধ্যমে সাধারণ জীবনযাপনের সঙ্গে পরিচয় হয় শিশুদের। তাঁরা খেলতে খেলতেই শেখে, বোঝে, চেনে আশপাশের পরিবেশকে। আর তাই আমরা বার্বির মাধ্যমেই সচেতনতা তৈরি করতে চেয়েছি। বিশ্বের বহু শিশু এখন টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিসের শিকার। আমরা চেয়েছি, যাতে তারাও নিজেদের গল্প বার্বির মধ্যে খুঁজে পায়।’’
বিশ্বের বহু শিশু এখন টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিসের শিকার। তাদের গল্পই বলবে নতুন বার্বি। ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবিটিসের রোগী বার্বির মাধ্যমে সচেতনতা ছড়ানোর বিষয়ে ম্যাটেল যে বেশ ‘সিরিয়াস’, তা বোঝাতে সংস্থাটি এ ব্যাপারে হাত মিলিয়েছে টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিস নিয়ে গবেষণারত আমেরিকার এক শীর্ষস্থানীয় সংস্থার সঙ্গেও। এমনকি, ডায়াবিটিস রোগী বার্বির পোশাকেও ব্যবহার করা হয়েছে ডায়াবিটিস সচেতনতার প্রতীক ব্লু ডট।