Advertisement
E-Paper

আঙুল, নখের রং নীলচে ধূসর! সারা শরীরে রং বদলে যাচ্ছে ব্যক্তির, বিরল রোগটির নাম কী?

এই রোগে গোটা শরীরের রং বদলে নীলচে ধূসর হতে থাকে। সংক্রমণ ঘটে লিভার, খাদ্যনালি, ফুসফুসেও। কী থেকে হয় এমন বিরল রোগ?

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০১
A man\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s skin and nails showed an unusual grey colour, what is this disease

হংকং-এর এই ব্যক্তির সারা শরীরের রং বদলে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।

হাতের আঙুল ও নখের রং বদলে যাচ্ছিল ধীরে ধীরে। নীলচে ধূসর থেকে গাঢ় ধূসর রঙে বদলে যাচ্ছিল হাত ও পায়ের রংও। ধীরে ধীরে গোটা শরীরের ত্বকের রং বদলে যাচ্ছিল ৮৪ বছরের এক ব্যক্তির। কী কারণে এমন ঘটছে, গোড়ায় তা ধরতেই পারেননি চিকিৎসকেরা। পরে ধরা পড়ে ওই ব্যক্তি বিরল ‘আর্জিরিয়া’ রোগে আক্রান্ত। এই ঘটনা হংকংয়ের। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেট্‌স মেডিক্যাল সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ এই রোগটি নিয়ে খবর ছাপা হয়েছে।

হংকংয়ের ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, মাস কয়েক ধরে তাঁর নখের রং বদলে যাচ্ছিল। প্রথমে হাতের সব ক’টি আঙুল ও নখের রং নীল হতে শুরু করে। এর পর তা ধূসর হতে শুরু করে। পরে পায়ের আঙুলেও একই রকম রঙের বদল দেখা যায়। তিনি ভেবেছিলেন, নখে সংক্রমণ ঘটেছে। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে কী রোগ হয়েছে, তা ধরতেই পারেননি। পরে ওই ব্যক্তির রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ধরা পড়ে, তাঁর শরীরে পরতে পরতে রুপো জমা হচ্ছে। রক্তে মিশছে রুপোর কণা। আর তাতেই শরীরে এমন টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হচ্ছে, যা ত্বকের মেলানিন নষ্ট করে দিচ্ছে। ফলে ত্বকের রং বদলে যাচ্ছে।

আর্জিরিয়া খুবই বিরল রোগ। এই রোগে রক্তে ও পেশিতে রুপোর কণা জমা হতে থাকে। সাধারণত মানুষের শরীরে খুব সামান্য পরিমাণেই এই ধাতু থাকে, যা রোজের খাবার, কিছু ওষুধ, জল বা বাতাস থেকে শরীরে ঢুকতে পারে। কিন্তু শরীরে যে পরিমাণ ধাতু জমা হয়, তার ৯৯ শতাংশই কিডনি ছেঁকে শরীর থেকে বার করে দেয়। যদি কোনও কারণে এই প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে, তা হলে ধাতুর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। আর যদি রুপোর মাত্রা রক্তে বেড়ে যায়, তা হলে তা ত্বক, মিউকাস পর্দা ও পেশিতে জমতে শুরু করে। তখন ত্বকের রঙে বদল দেখা যায়। লিভার, কিডনি, হার্টের পেশিতেও জমতে পারে এই ধাতু। তখন তা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। কিডনি নষ্ট হতে পারে, শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। এমনকি রক্ত জমাট বেঁধে থ্রম্বোসিসের লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

ওই ব্যক্তির শরীরে রুপো কী ভাবে জমছে, তা এখনও ধরা যায়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে, যাতে রুপোর মতো ধাতু মেশানো থাকে। যদি খুব বেশি ডোজ়ে সেই অ্যান্টিবায়োটিক কেউ খান, তা হলে রক্তে রুপোর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। আবার কসমেটিক সার্জারি, দাঁতের ফিলিং করার সময়েও রুপো ব্যবহার করা হয় অনেক ক্ষেত্রে, তা থেকেও শরীরে ঢুকতে পারে। তা ছাড়া খনিতে যাঁরা কাজ করেন অথবা রুপো নিয়ে কাজ করতে হয়, তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে রোগটি বিরল। কেন হয়, তার সঠিক কারণ নিয়ে গবেষণা করছে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)।

‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ডার্মাটোলজি’-তে ২০১৩-য় একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে বিরল আর্জিরিয়া রোগ নিয়ে সতর্ক করেন গবেষকেরা। বলা হয়, দূষিত জল থেকে সিলভার নাইট্রেট শরীরে ঢুকে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। খুব বেশি পরিমাণে এই রাসায়নিক শরীরে গেলে তখন আর্জিরিয়া হতে পারে, যা থেকে খাদ্যনালির সংক্রমণ, ফুসফুসে সংক্রমণ, লিভারের জটিল অসুখ হতে পারে। ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। এই রোগের কোনও ওষুধ তেমন ভাবে তৈরি হয়নি। এই নিয়ে গবেষণা চলছে।

Rare Diseases diseases Silver Pigmentation Skin Disease Argyria
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy