ভ্যাপসা গরমে ডাবের জল খেলে শান্তি হয়। তবে ডাব কিনে তার জল খাওয়ার সময়ে যাচাই করে নেন কি? দীর্ঘ সময় রেখে দেওয়া মুখ কেটে রাখা ডাব আপনাকে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা দেখে নেওয়া জরুরি। ডাবের ভিতর সরাসরি স্ট্র ঢুকিয়ে খাওয়ার সময়েও সাবধান। আপাতদৃষ্টিতে দেখতে তরতাজা লাগলেও, সেই ডাব কত দিন ধরে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, তা জানা নেই। এমন ডাব থেকে ছত্রাকের মারাত্মক সংক্রমণ ঘটতে পারে। ডেনমার্কে এমনই একটি ঘটনায় ডাবের জল খাওয়ার কিছু সময় পরেই মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির।
ডাবের জল সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর বলেই ধারণা সকলের। তাতে কোনও ভুল নেই। তবে গাছ থেকে পেড়ে নেওয়া টাটকা ডাব আর দিনের পর দিন রেখে দেওয়া ডাবের মধ্যে তফাত রয়েছে। রাস্তা থেকে যা কিনে খাচ্ছেন, তা কত দিন ধরে পড়ে রয়েছে, তা জানা নেই। এমন ডাবের ভিতরের খোলায় অনেক সময়েই বাসা বেঁধে থাকে নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক। ডাবের খোলা ও শাঁসে আস্তানা গাড়ে তারা। ফলে সেই ডাব থেকে সরাসরি জল খেলে তা থেকে বিষক্রিয়াও ঘটতে পারে।
ডেনমার্কে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল। দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা ডাব থেকে জল খাওয়ার পরেই মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। পরীক্ষা করে ‘৩-নাইট্রোপ্রোপায়োনিক অ্যাসিড’ (৩-এনপিএ) পাওয়া গিয়েছিল তাঁর রক্তে। এই ধরনের টক্সিন তৈরি করে কিছু প্রজাতির ছত্রাক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ডাবের জল থেকেই ওই ব্যক্তির শরীরে বাসা বেঁধেছিল ছত্রাক। ডাবের জল খাওয়ার পরেই ঘাম হতে থাকে ওই ব্যক্তির, ঘন ঘন বমি শুরু হয়। পরে তাঁর মাল্টিঅর্গ্যান ফেলিয়োরের লক্ষণ দেখা দেয়। এই ধরনের টক্সিন শরীরে ঢুকলে তা থেকে পেশির পক্ষাঘাতও হতে পারে বল জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
ডাব কেনার আগে কী কী যাচাই করবেন?
১) ডাবের বাইরের খোসা বা সবুজ অংশটি সাধারণত তাজা এবং উজ্জ্বল দেখায়। যদি খোসা বিবর্ণ, কালো ছোপযুক্ত, বা ফাটল ধরা থাকে, তা হলে সেই ডাবের জল খাবেন না।
২) আগে থেকে কেটে রাখা ডাব ভুলেও কিনবেন না। স্ট্র ঢোকানোর আগে তা দেখে নিতে হবে।
৩) প্যাকেটজাত ডাবের জলও পাওয়া যায়। তেমন কিছু কেনার আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সময় দেখে নিন।
৪) ডাব কাটার পর যদি ডাবের জল থেকে পচা বা ওষুধের মতো গন্ধ পান, তা হলে সেই জল খাবেন না।
৫) ডাবের জল পান করার সময় যদি এর স্বাদ টক, তেতো মনে হয়, সঙ্গে সঙ্গে তা ফেলে দেবেন।
৬) ডাবের জল স্বচ্ছ হয়। যদি এর রং ঘোলাটে, হলুদ মনে হয় অথবা ফেনা থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই ডাবে ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটেছে।