সন্তানের জন্ম থেকে তার প্রতিপালনে মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই সঙ্গে, সন্তানের বড় হয়ে ওঠার নেপথ্যে বাবার ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, সন্তানের শারীরিক, মানসিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশের ক্ষেত্রে পিতার অবদান রয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে বাবার মানসিক স্বাস্থ্য।
সম্প্রতি, ‘জেএএমএ পেডিয়াট্রিক্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান জন্মের দু’বছর সময় পর্যন্ত বাবার মানসিক স্বাস্থ্য বিভিন্ন ভাবে সন্তানের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘‘বাবা হওয়ার সময় বেশির ভাগ পুরুষের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তন দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে ৮ শতাংশ অবসাদ, ১১ শতাংশ উদ্বেগ এবং ৬ থেকে ৯ শতাংশ ক্লান্তিতে ভোগেন।’’
আরও পড়ুন:
গবেষণা পদ্ধতি
গবেষণায় ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তান এবং তাদের বাবার সম্পর্ককে ছ’টি পর্যায়ে ভাগ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সন্তানের ক্ষেত্রে তার সামাজিক উপস্থিতি বিচার করতে তার দৈনন্দিন গতিবিধি, অন্যের সঙ্গে ব্যবহার, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, একাগ্রতা এবং বুদ্ধ্যঙ্ক-সহ একাধিক বিষয়কে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
কী জানা গিয়েছে
অতীতের প্রায় ৮৪টি গবেষণা থেকে সহযোগী তথ্যকে এই গবেষণায় স্থান দেওয়া হয়েছে, যেখানে এক হাজারেরও বেশি পিতা-সন্তানের তথ্য রয়েছে। দেখা গিয়েছে, বাবার মানসিক স্বাস্থ্য সন্তানের খাওয়াদাওয়া, ঘুমের ধরন এবং ওজনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে সন্তান খেলাধুলো এবং পড়াশোনায় আগ্রহ হারাতে পারে।
কী করা উচিত
ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে সন্তানের সুস্থ জীবন নির্ভর করে বাবা-মায়ের যৌথ ভূমিকার উপরে। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর একটি সমীক্ষা বলছে, পিতৃত্বকে স্বাগত জানানোর সময় ৫ থেকে ১০ শতাংশ পিতা অবসাদে ভোগেন। অন্য দিকে, ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পিতৃত্ব সংক্রান্ত উদ্বেগের শিকার হন।
গবেষকদের একাংশ মনে করছেন, মানসিক অবসাদ যে কারও হতে পারে। তাই পরিবার পরিকল্পনার সময়ে বাবা যদি অবসাদের শিকার হয়ে থাকেন, তা হলে তা আগে শনাক্ত করতে হবে। অনেক সময়ে মনোবিদের সাহায্য নিলে সমস্যা কাটতে পারে।