‘জওয়ান’ ছবিতে নজর কেড়েছিলেন। ওটিটি সিরিজ় ‘অসুর’-এও অভিনয় করেছিলেন তিনি। তা ছাড়া টিভি সিরিয়ালের পরিচিত মুখ রিদ্ধি ডোগরা। সম্প্রতি ওজন ঝরিয়ে আরও ছিপছিপে হয়েছেন রিদ্ধি। পর্দায় তাঁকে দেখতেও লাগছে সুন্দর। এমন নির্মেদ চেহারা ও টানটান গড়ন পেতে খাওয়াদাওয়ায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণ আনতে হয়েছে রিদ্ধিকে। মায়ের হাতের ছোলে বাটুরে খাওয়া ছেড়েছেন। মিষ্টি-আইসক্রিমেও রাশ টেনেছেন। এখন শুধু দিনে দু’বার ঘড়ি ধরে খান। আর একই রকম খাবার খান। মাসের পর মাস এ ভাবেই খেয়ে যাচ্ছেন রিদ্ধি। এমন ডায়েট কি আদৌ স্বাস্থ্যের জন্য ভাল?
রোগা থাকতে ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট বেছে নিয়েছেন অভিনেত্রী। দুপুরের দিকে এক গ্লাস প্রোটিন স্মুদি ও রাতে মুগ ডালের খিচুড়ি। এই হল তাঁর সারা দিনের খাওয়া। রিদ্ধি জানিয়েছেন, প্রাতরাশ না করে একবারে ‘ব্রাঞ্চ’ সারেন তিনি। আর তা হয় বাড়িতে তৈরি প্রোটিন স্মুদি দিয়ে। প্রোটিন পাউডারের সঙ্গে পিনাট বাটার, মিষ্টি ছাড়া কোকো পাউডার ও যে কোনও একটি ফল যেমন আম, পেঁপে বা স্ট্রবেরি একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নেন। কখনও তাতে নারকেলের জল বা আমন্ড মিল্কও মিশিয়ে দেন। ঘন সেই স্মুদি দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখে তাঁর।
আরও পড়ুন:
ব্রাঞ্চের পর খাওয়া সেই রাত ৮টা নাগাদ। তখন সব্জি দিয়ে মুগ ডালের খিচুড়ি খান রিদ্ধি। মাঝের সময়টায় খিদে পেলে নানা রকম ফলই ভরসা। এর বাইরে আর কোনও রকম খাবারই দাঁতে কাটেন না তিনি। এর পর টানা ১৬ ঘণ্টার বিরতি। এমন ডায়েট করেই তাঁর চেহারায় লাবণ্য বেড়েছে, অতিরিক্ত ক্যালোরিও ঝরেছে বলে দাবি করেছেন রিদ্ধি।
১৬ ঘণ্টা উপোস দিয়ে ডায়েট কি ভাল?
চটজলদি ওজন ঝরাতে ইদানীং বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দেখাদেখি অনেকেই এখন ভরসা রাখছেন ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ডায়েটের উপর। এই ডায়েটে খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কড়া বিধি-নিষেধ থাকে না, শুধু সময়টাই আসল। টানা ৮, ১২ , ১৪ বা ১৬ ঘণ্টা উপোস দিতে হয়। এই ডায়েট যদি নিয়ম মেনে করা যায়, তা হলে মেদ ঝরে দ্রুত। তবে ইন্টারমিটেন্টে পুষ্টির ঘাটতি বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে নিয়ম না মানলেই বিপদ।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মত, ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ মেনে চললে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোলেস্টেরল হ্রাস পায় এবং শরীরও থাকে চাঙ্গা। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পরিমাণ মতো খাবার খেতে হবে। কেবল একই রকম বা দু’রকম খাবার খেয়ে থাকলে পুষ্টির ঘাটতি হবে। যদি দু’রকম খাবারই খেতে হয়, তা হলে সেই খাবার এমন হবে যাতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার সমপরিমাণে থাকে। সকলের পক্ষে তা মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই এই ডায়েট চলাকালীন প্রচুর শাকসব্জি, মাছ-মাংস এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কত ঘণ্টা অন্তর খাবেন ও কী কী খাবেন, তা শরীর বুঝে ঠিক করে দেবেন পুষ্টিবিদ। নিজে থেকে ডায়েট ঠিক করা বা তারকাদের অনুকরণ করে খেতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। এতে মাথা ঘোরা, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তচাপ কিংবা রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ভুল ডায়েট করে হৃৎস্পন্দনের হার কমে যেতে পারে। হরমোনের গোলমালও দেখা দিতে পারে।