Advertisement
E-Paper

থমকে যাবে বয়সের চাকা, ছুরি-কাঁচি ছাড়াই ফিরবে যৌবনের দীপ্তি, ত্বকের কী কী থেরাপি করাতে পারেন?

ত্বকে তারকাদের মতো জৌলুস ফুটিয়ে তুলতে নানা রকম থেরাপির সাহায্য নিচ্ছেন অনেকে। তালিকায় যে কেবল কমবয়সিরা রয়েছেন, তা নয়। বয়সের ছাপ ঢেকে যৌবনের মতো রূপ লাবণ্য ফুটিয়ে তুলতে যোগ দিয়েছেন বয়স্কেরাও। কেমন সে সব থেরাপি, করলে কী কী লাভ হয়, ত্বকের জন্য কতটা নিরাপদ, রইল খুঁটিনাটির খোঁজ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:১১
These are some skin treatments for healthy and glowing skin, are they safe, and what should be kept in mind before getting them done

কলকাতায় কী কী 'স্কিন থেরাপি হচ্ছে', খরচ কত? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সারা সপ্তাহ কাটে চরম ব্যস্ততায়। নিজের দিকে তাকানোর সময়টুকু পর্যন্ত থাকে না। এ দিকে পুজো প্রায় চলেই এসেছে। পার্লারে যাওয়া তো দূর, বাড়ি বসে ত্বকের যত্ন নেওয়ার ফুরসত পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পুজোর আগে নিজেকে একটু না সাজালেও মনটা খুঁত খুঁত করে। ভাল ভাল পোশাক কিনছেন, কিন্তু ত্বক যদি ঝলমলে না থাকে, তা হলে সাজটাই মাটি। অনেক আগে থেকেই তাই ত্বকের পরিচর্যা শুরু করে দেন অনেকে। একটা সময়ে ত্বকের পরিচর্যা বলতে ছিল পার্লারে গিয়ে ফেশিয়াল আর বাড়িতে কিছু ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে রূপচর্চা। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। ত্বকে তারকাদের মতো জৌলুস ফুটিয়ে তুলতে নানা রকম থেরাপির সাহায্য নিচ্ছেন অনেকে। তালিকায় যে কেবল কমবয়সিরা রয়েছেন, তা নয়। বয়স ঢেকে যৌবনের মতো রূপ লাবণ্য ফুটিয়ে তুলতে যোগ দিয়েছেন বয়স্কেরাও। কেমন সে সব থেরাপি, করলে কী কী লাভ হয়, ত্বকের জন্য কতটা নিরাপদ, রইল খুঁটিনাটির খোঁজ।

ত্বকের যে কোনও থেরাপি করানোর আগেই এক বার ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। চর্মরোগ চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ীও তেমনটাই মনে করেন। তাঁর কথায়, “ত্বক উজ্জ্বল দেখানোর ও বয়স কমানোর নানা রকম থেরাপি রয়েছে। সেগুলি যদি অভিজ্ঞ হাতে হয়, তা হলে তেমন ক্ষতির কোনও আশঙ্কা নেই। তাই ভাল জায়গা থেকেই করাতে হবে। তবে যদি ত্বকের কোনও অসুখ আগেই থাকে, যেমন কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, এগ্জ়িমা বা সোরিয়াসিস, তা হলে থেরাপি না করানোই ভাল।”

নিষ্প্রাণ ত্বকে জেল্লা ফেরাবে মেসোথেরাপি

মেসোথেরাপি।

মেসোথেরাপি। ছবি: সংগৃহীত।

ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে ও ক্লান্তির ছাপ মুছতে মেসোথেরাপি। এ ক্ষেত্রে মুখে, গলায় ঘাড়ে ও হাতের ত্বকে ভিটামিন, নানা খনিজ উপাদান, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও হায়ালুরনিক অ্যাসিড ইনজেক্ট করা হয়। এই পদ্ধতিতে ত্বকে কোলাজেন তৈরি হয় খুব তাড়াতাড়ি। ত্বকের মৃত কোষ সরে গিয়ে নতুন কোষ তৈরি হয়, ফলে ব্রণ-ফুস্কুড়ি বা র‌্যাশের মতো সমস্যা কম হয়। মেসোথেরাপিতে ৩-৬ মাস অন্তর ইঞ্জেকশন নিতে হয়। এর স্থায়িত্ব ১২-১৮ মাসের মতো। এখন করালে তিন মাস অবধি ত্বকের জেল্লা থাকবে, তিন মাস পরে আরও এক বার সূচ ফোটাতে হবে। মেসোথেরাপি করার নিয়ম আছে। থেরোপির পর ত্বকে তৈলাক্ত কোনও ক্রিম বা অ্যালকোহল যুক্ত কোনও প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। এই থেরাপির এক একটি সেশনের খরচ ১৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো।

বয়সকালেও যৌবনের লাবণ্য এনে দেবে বায়ো-রিমডেলিং থেরাপি

বায়ো-রিমডেলিং থেরাপি।

বায়ো-রিমডেলিং থেরাপি। ছবি: সংগৃহীত।

অ্যান্টি-এজিং থেরাপি তবে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন নেই। সুচ ফুটিয়ে ত্বকের নানা জায়গায় সামান্য পরিমাণে হায়ালুরনিক অ্যাসিড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ করে ত্বকের যে জায়গায় বলিরেখা পড়েছে, দাগছোপ রয়েছে অথবা কোনও ক্ষত তৈরি হয়েছে, সেখানকার ত্বকের কোষ পুনর্গঠনের জন্যই এই থেরাপি করা হয়। এই বিষয়ে ইমেজ ক্লিনিকের কর্ণধার ও মেডিক্যাল ডিরেক্টর দেবশ্রী বণিক জানিয়েছেন, এই থেরাপিতে ৪ থেকে ৬ মাস অন্তর ইঞ্জেকশন নিতে হয় ত্বকে। এর স্থায়িত্ব কম করেও এক বছর। এই থেরাপির এক একটি সেশনের জন্য খরচ পড়ে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তবে এই ধরনের থেরাপি করাতে হলে অভিজ্ঞ কারও কাছেই করানো ভাল।

ফেশিয়ালের উন্নত সংস্করণ হাইড্রা থেরাপি

হাইড্রা থেরাপি।

হাইড্রা থেরাপি। ছবি: সংগৃহীত।

বড় বড় পার্লারে তো বটেই,, ছোটখাটো বিউটি পার্লারেও এখন হাইড্রা ফেশিয়াল করানো হয়। রোদে ঘুরে যাঁদের মুখে কালচে দাগছোপ পড়েছে, অথবা যাঁদের মুখে-কপালে বেশি ব্রণ-ফুস্কুড়ির ধাত রয়েছে, তাঁরা করিয়ে দেখতেই পারেন। সাধারণ ফেশিয়ালে হাতের তালুতে চাপ দিয়ে মুখে ধীরে ধীরে মালিশ করা হয়। কিন্তু হাইড্রা ফেশিয়ালে সবটাই হয় যন্ত্রের সাহায্যে। পদ্ধতি অনেকটা ‘ভ্যাকিউম ক্লিনার’-এর মতো। ত্বকের গভীর থেকে ধুলো-ময়লা টেনে বার করে আনা হয়। মূলত ‘ডিপ ক্লিনজ়িং’-এরই একটি ধরন হল হাইড্রা ফেশিয়াল। কলকাতায় হাইড্রা ফেশিয়াল করাতে খরচ পড়ে ২ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা।

ত্বকের ভাঁজ, বলিরেখাকে বলুন টা টা

প্লেটলেট-রিচ প্লাজ়মা থেরাপি।

প্লেটলেট-রিচ প্লাজ়মা থেরাপি। ছবি: সংগৃহীত।

ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক মেরামত করতে প্লেটলেট-রিচ প্লাজ়মা থেরাপি (পিআরপি)এখন খুবই জনপ্রিয়। এটিও এক ধরনের অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট।সবচেয়ে নীচের ধাপে রয়েছে সহজতম পদ্ধতি— ক্রিম লাগানো। তার পরের ধাপে পিলিং করা যায়। এতে উপরের ত্বকের স্তরটা তুলে দেওয়া হয়। নতুন যে ত্বকের স্তর দেখা দেয়, তা তুলনামূলক ভাবে পরিষ্কার হবে। এই পদ্ধতিটি করতে মিনিট দশেক লাগবে। এর পরের ধাপেই রয়েছে প্লাজ়মা রিচ থেরাপি বা পিআরপি। এ ক্ষেত্রে ত্বকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা যায়। এতে ত্বক পুনরুজ্জীবীত হয়, নতুন করে কোলাজেন তৈরি হয়। ত্বক টানটান হয় ও ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসে। মেচেতা থাকলে তা-ও কমে যায়। পিআরপি-র মাধ্যমে ত্বকের তারুণ্য ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। কলকাতায় এই থেরাপি শুরু হয় ৩ হাজার টাকা থেকে। কোন ধরনের বিউটি ক্লিনিকে করাচ্ছেন, তার উপর খরচ নির্ভর করবে। অ্যান্টি-এজিংয়ের প্রতিটি স্তর করাতে ১৫-২৫ হাজার অবধি খরচ পড়তে পারে।

সময়ের চাকা থমকে যাবে হাইফু থেরাপিতে

ছবি: সংগৃহীত।

পিআরপি থেরাপি করালে হাইফু করিয়ে নেওয়াও ভাল। সুচ না ফুটিয়েই, ছুরি-কাঁচির সাহায্য ছাড়াই বয়সের দাগ মুছে ফেলা যাবে। হাইফু হল হাই ইনটেন্সিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড (হাইফু) ট্রিটমেন্ট। এ ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসা ছাড়াই খুব সূক্ষ্ম ভাবে ত্বকের যৌবন ধরে রাখা যায়, মুখটাও আচমকা পাল্টে যায় না। তাই অ্যাস্থেটিক ক্লিনিকগুলোতে হাইফু-র চাহিদা বাড়ছে। হাইফু-র ক্ষেত্রে আলট্রাসাউন্ড রশ্মি দিয়ে ত্বকের ক্ষত মেরামত করা। এতে বলিরেখা দূর হবে, ত্বকের মেদও কিছুটা কমে যায়। তাতে মুখ বেশ টানটান দেখায়। মোটামুটি এক ঘণ্টার মধ্যেই হাইফু হয়ে যায়। তবে প্রক্রিয়ায় অল্প ব্যথা হতে পারে, তাই মুখে অবশ করার ক্রিম লাগিয়ে হাইফু করা হয়। এই থেরাপির পরে কুলিং ক্রিম, ময়শ্চারাইজ়ার ও রোজকার ত্বক পরিচর্যার রুটিন অনুসরণ করা জরুরি। কলকাতায় হাইফু করানোর খরচ শুরু হয় সাধারণত ২০ হাজার টাকা থেকে।

Skin Care Tips Puja Special 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy