Advertisement
E-Paper

ডায়াবিটিস আছে বলে চায়ে চিনির বদলে কৃত্রিম শর্করা মেশাচ্ছেন? এই বিকল্পটি কতটা স্বাস্থ্যকর?

ডায়াবিটিসের সমস্যা আছে, এমন রোগীদের সঠিক খাদ্যাভাস এবং দৈনিক শরীরচর্চা একান্ত জরুরি। শুধু চিনি খাওয়া কমিয়ে দিলেই এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। চিনির পরিবর্তে কৃত্রিম শর্করা খাওয়া কি ভাল?

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:২৬
কৃত্রিম চিনি খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?

কৃত্রিম চিনি খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? ছবি: শাটারস্টক।

রোজের জীবনে কিছু অনিয়ম আর ক্ষতিকর অভ্যাস ডায়াবিটিসের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তোলে। কিছু নিয়ম মেনে চলা মোটেই খুব কঠিন কাজ নয়। বরং একটু সচেতন হলেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

কেউ যদি ভাবেন, আসল চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি খেলেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে— তা কিন্তু একেবারেই নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র চিনিই দায়ী নয়। ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, শরীরে ক্যালোরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা। চিনি না খেয়ে কেউ যদি দিনে অনেকটা ভাত খেয়ে ফেলেন কিংবা বাজারজাত ঠান্ডা পানীয় খেয়ে ফেলেন, তা হলেও মুশকিল। ডায়াবিটিসের সমস্যা আছে, এমন রোগীদের সঠিক খাদ্যাভাস এবং দৈনিক শরীরচর্চা ভীষণ জরুরি। শুধু চিনি খাওয়া কমিয়ে দিলেই এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

আসল চিনির পরিবর্তে কৃত্রিম চিনি কি খাওয়া ভাল?

কৃত্রিম চিনির ব্যবহার ভাল, না কি খারাপ, সেই নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলেছে। চিকিৎসক অদ্রিজা রহমানের মতে, ‘‘বিদেশে দীর্ঘ দিন ধরে লোকেরা ‘নো ক্যালোরি সুগার’ বা কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করে আসছেন। এই প্রকার চিনি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে, এমনটা প্রমাণিত হলে বিদেশের বাজারে এই পণ্য সবার আগে বন্ধ করা হত। চিনি খাওয়া ডায়াবিটিকদের জন্য একেবারেই ভাল নয়। তার বদলে কোনও ভাল সংস্থার কৃত্রিম চিনি খেতে পারেন তাঁরা। তবে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত নয়। মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করছে বলেই ডায়াবিটিসের রোগীরা যদি কৃত্রিম চিনি দিয়ে মিষ্টি বানিয়ে মনে করেন স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে না, এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল। সে ক্ষেত্রে শরীরে ছানা বা ময়দার মতো উপাদানও যাচ্ছে। ফলে সেই ব্যক্তির সারা দিনের ‘ক্যালোরি কাউন্ট’ কিন্তু বেড়ে যাবে। সঙ্গে বাড়বে রক্তে শর্করার মাত্রাও।’’ অদ্রিজা আরও বলেন, ‘‘ইদানীং অল্প বয়স থেকেই শরীরে বাসা বাঁধছে ডায়াবিটিস। বছর ৩৫-এর কোনও ডায়াবিটিসের রোগীকে যদি খুব বেশি কঠিন ডায়েট মেনে চলতে বাধ্য করা হয়, তা হলে তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। সে ক্ষেত্রে তাঁরা খাদ্যতালিকায় কৃত্রিম চিনি রাখতে পারেন। তবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়। চায়ে চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করতে পারেন। তবে রকমারি মিষ্টি বানানোর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার না করাই ভাল। এই বিকল্পটি মন্দের ভাল।’’

বাজারে যে সব কৃত্রিম চিনি পাওয়া যায়, তাতে অ্যাসপারটেম ও সুক্রালোজ নামক যৌগ থাকে। এই যৌগগুলির কারণেই কৃত্রিম চিনিতে মিষ্টি ভাব আসে। এগুলি কিন্তু শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। সুক্রালোজের তুলনায় অ্যাসপারটেম আরও বেশি ক্ষতিকর। এই দুই যৌগ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেমন হৃদ্‌যন্ত্র, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শরীরে নেগেটিভ ইলেকট্রন তৈরি হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। যে কোনও কৃত্রিম জিনিসই বেশি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয়, কৃত্রিম চিনিও তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই শ্রেয়। কৃত্রিম চিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে না, ওজন বাড়বে না— এই ভেবে সকালের চা থেকে শুরু করে সারা দিনের রান্নাবান্না, এমনকি ক্ষীর কিংবা পায়েসেও মিষ্টি ভাব আনতে কেউ কেউ এই প্রকার চিনির ব্যবহার করেন। এতে কিন্তু শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই কৃত্রিম চিনি ব্যবহারের সময় পরিমাণের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা ভীষণ জরুরি। মাত্রাতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি খাওয়া কখনওই স্বাস্থ্যকর নয়। যাঁদের হৃদ‌্‌যন্ত্রের সমস্যা আছে, তাঁদের এই প্রকার চিনি না খাওয়াই ভাল।

Diabetes Risk Diabetes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy