বাড়িতে হার্টের রোগী আছেন? হৃদ্‌রোগ এড়াতে কোন বয়সে প্রথম কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করাবেন?

রক্তে থাকা ‘এলডিএল’ বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন-কেই খারাপ কোলেস্টেরলের তালিকাভুক্ত করা হয়। কারণ, রক্তে এই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে হার্টের ধমনীতে ‘প্লাক’ তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ফলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। সাধারণত শরীরে কোনও রকম সমস্যা হলে, বুকে অস্বস্তি হলে আমরা কোলেস্টেরল পরীক্ষা করাই। এ ছাড়া যাঁদের হার্টের সমস্যা আছে তাঁরাও নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর এই পরীক্ষা করান। তবে বেশি বয়সেই নয়, কোলেস্টেরলের সমস্যা কিন্তু এখন অল্প বয়স কাবু করছে।

তবে কোন বয়স থেকে কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করানো উচিত, সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। চিকিৎসক নবীন ভামরি বলেন, ‘‘২০ বছর বয়স থেকেই কোলেস্টেরলের বিষয় সতর্ক থাকতে হবে। বয়স ২০ হলেই একটি ফাস্টিং লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি। তার পর ফলাফল যদি সব ঠিকঠাক আসে তা হলে চার থেকে ছয় বছর পর আবার এই পরীক্ষাটি করাতে পারেন।’’

তবে বাড়িতে কারও হার্টের সমস্যা থাকলে কিন্তু আগেভাগেই সতর্ক হতে হবে, এমনটাই মত নবীনের। চিকিৎসক বলেন, ‘‘ডায়াবিটিস থাকলে, ওবেসিটি থাকলে, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে কিংবা নিয়মিত ধূমপান করলে কিন্তু ২০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করলে চলবে না। তার আগেই কোলেস্টেরলের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। সে ক্ষেত্রে ১২ বছর বয়স হলেই ফাস্টিং লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করানো যেতে পারে।

এই ধরনের পরীক্ষা করানোর আগে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি, না হলে পরিমাপে হেরফের হয়ে যেতে পারে।

১) উপোস করে থাকা

কোলেস্টেরলের মাত্রা কেমন, তা পরীক্ষা করাতে যাওয়ার আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কিছু না খেয়ে থাকতে বলেন। এত ক্ষণ একেবারে নির্জলা থাকতে কষ্ট হয় বলে অনেকে চা, জল খেয়ে ফেলেন। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অভ্যাস কিন্তু রক্তে কোলেস্টেরল এবং টাইগ্লিসারাইডের মাত্রায় হেরফের ঘটাতে পারে।

২) মদ না খাওয়া

কোলেস্টেরলের সঠিক মাত্রা জানতে হলে রক্ত পরীক্ষা করাতে যাওয়ার আগে মদ খাওয়া যাবে না। তবে শুধু কোলেস্টেরল নয়, যে কোনও পরীক্ষা করাতে যাওয়ার অন্তত পক্ষে ৪৮ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

৩) পর্যাপ্ত জল খাওয়া

রক্ত পরীক্ষা করানোর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা আগে চা, জল না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু শরীর যাতে ডিহাইড্রেটেড হয়ে না যায়, সে দিকে লক্ষ রাখা জরুরি। তাই আগে থেকেই জল খেয়ে শরীরকে আর্দ্র রাখার চেষ্টা করুন।

৪) মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি ধরা পড়লে কোন কোন পছন্দের খাবার জীবন থেকে বাদ পড়বে, সেই চিন্তা যদি রক্ত পরীক্ষা করানোর আগেই গ্রাস করে, তা হলে মুশকিল। তাই রক্ত পরীক্ষা করানোর আগে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।

৫) চর্বিজাতীয় খাবার না খাওয়া

রক্ত পরীক্ষা করানোর আগে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এই ধরনের খাদ্যাভাস রক্তে বিভিন্ন উপাদানের মাত্রায় হেরফের ঘটাতে পারে।