‘দম লগা কে হইসা’ ছবি থেকে ‘দ্য রয়্যালস’ ওয়েব সিরিজ— অভিনেত্রী ভূমি পেডনেকর দর্শকের সামনে এসেছেন নানান রূপে। যে সময়ে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি ‘জ়িরো ফিগার’-এ মজে, তখন তিনি কেবল চরিত্রের প্রয়োজনে মন দিয়েছেন। দরকারে ওজন বাড়িয়েছেন, আবার কমিয়েছেন। ভূমি কিন্তু বেশ খাদ্যরসিক। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, হরেক প্রদেশের নতুন নতুন খাবার চেখে দেখতে তিনি ভীষণ ভালবাসেন। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আমরা গোয়ার ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের। গত পাঁচ বছর ধরে আমি নিরামিষ খাচ্ছি। ছোটবেলায় কিন্তু কাঁকড়া খেতে খুব ভালবাসতাম। ছোটবেলায় প্রতি সপ্তাহে একবার করে আমার কাকিমা আসতেন আমাদের বাড়িতে, আর তিনি এক কড়াই ভর্তি কাঁকড়া রাঁধতেন। জ়াকুতি গ্রেভিতে তৈরি সেই মশলাদার কাঁকড়ার স্বাদ ছিল অতুলনীয়।’’
তবে আমিষপ্রেমী হয়েও আমিষ ছাড়তে অসুবিধা হয়নি ভূমির। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘একটা সময় মাংস, সামুদ্রিক মাছ এত খেয়েছি যে আমার সব রকমের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। এখন খুব সহজেই আমি নতুন খাবার চেখে দেখতে পারি। বাড়িতে মহারাষ্ট্র আর গোয়ার নানা রকম নিরামিষ খাবারও বানানো হত। খুব কম উপকরণ দিয়ে তৈরি সেই সব খাবারের স্বাদও হত অতুলনীয়। নিরামিষ খাওয়া শুরু করার পর থেকে আমার কিন্তু খুব একটা অসুবিধা হয়নি। নিরামিষ খাবার খাচ্ছি বলে পুষ্টির সঙ্গে কোনও রকম আপস করছি এমনটাও নয়। বাড়িতে এমন ভাবেই খাবার তৈরি করা হয়, যাতে স্বাদ আর স্বাস্থ্যের সঠিক ভারসাম্য থাকে।’’
ইদানীং মাছ-মাংস ছেড়ে নিরামিষাশীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন অনেক তারকাই। আলিয়া ভট্ট, শাহিদ কপূর, অক্ষয় কুমার, বিরাট কোহলি, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া— মাছ-মাংস ছেড়ে সকলেই এখন নিরামিষ খাচ্ছেন। কেন নিরামিষের দিকে ঝুঁকছেন তারকারা?
প্রাণিজ প্রোটিনে স্যাচুরেটেড ফ্যাট খুব বেশি মাত্রায় থাকে, অন্য দিকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে কম মাত্রায়। খুব বেশি মাত্রায় প্রাণিজ প্রোটিন খেলে কিন্তু কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাঁরা আমিষ খাবার খান, তাঁদের তুলনায় নিরামিষাশীরা দ্রুত ওজন ঝরাতে সক্ষম। দ্য ওয়ার্ল্ড ক্যানসার রিসার্চ ফান্ডের রিপোর্টে বলা হয়েছে সপ্তাহে এক দিন নিরামিষ খাওয়ার অভ্যাস ক্যানসারের ঝুঁকিও কমাতে পারে। ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে শাকসব্জি বেশি করে খেতে হবে, প্রাণিজ প্রোটিন ও প্রক্রিয়াজাত মাংস থেকে দূরে থাকতে হবে। সারা বছর ধরে পেটের সমস্যায় ভোগেন বহু মানুষ। ডায়েটে অনেক বেশি মাছ, মাংস, ডিম রাখলে পেট গোলমাল করতেই পারে। নিরামিষ খেলে বেশি করে শাকসব্জি আর ফল খাওয়া হয়। এতে পেটের সংক্রমণের ঝুঁকিও কমে। উদ্ভিজ্জ খাবার শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এই খাবারে ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকে, ফুসফুস ভাল রাখতেও বেশ উপকারী এই প্রকার খাদ্যাভাস।