রথের মেলা আবার জিলিপি ছাড়া হয় না কি! মেলায় যাওয়া হোক না হোক রথের দিন অন্তত একটি জিলিপিতে কামড় দিত না পারলে জীবনটাই বৃথা মনে হয়। যাঁরা জোরদার ডায়েট করছেন, মিষ্টি মুখে তুলছেন না, রথের দিন তাঁরও জিলিপি নাম শুনলে মন কেমন করে। হয়তো এক টুকরো ভেঙে তিনিও মুখে দেন। কারণ বেশি হলে ময়দা, ডাল, দই, বেকিং সোডা আর চিনি দিয়ে তৈরি ক্যালোরিতে ভরপুর এই খাবার বাড়তি চর্বির কারণ হতে পারে। কিন্তু জিলিপি কি উপকারীও হতে পারে?
চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডায়েটিসিয়ান বা পুষ্টিবিদ হরি লক্ষ্মী তাঁর সমাজ মাধ্যমের পাতায় বলছেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রদেশে জিলিপিকে হজমিকারক বলেও মানা হয়! এমনকি, এ-ও ভাবা হয় যে এটি একটি প্রোবায়োটিক খাবার।’’
লক্ষ্মী জানাচ্ছেন, বিজয়া দশমীর দিন দুধ দিয়ে জিলিপি খাওয়ার চল রয়েছে উত্তর ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে। সেখানে ওই খাবারকে হজমে সহায়ক বলেই মানা হয়। উৎসবের দিনে নানা ধরনের খাওয়া দাওয়ার পরে তাই শেষ পাতে পরিবেশন করা হয় দুধ জিলিপি। আর কী কী উপকার?
১। মাইগ্রেন সারাতে সহায়ক
বিশ্বাস না-ই হতে পারে। তবে পুষ্টিবিদ বলছেল জিলিপি ভেজােনোর দুধের পুষ্টিগুণই এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে!
২। মানসিক চাপ কমাতে পারে
যেকোনও মিষ্টি খাবারই মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং বাড়তি শক্তি জোগায়। জিলিপির মিষ্টি স্বাদও স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমিয়ে মেজাজ ভাল করতে সাহায্য করে
৩। শীতে ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর করে
শীত কালে দুধ জিলিপি খাওয়ার চল আছে গুজরাতে। সেখানে মানুষ মনে করেন এই খাবার খেলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকবে না।
৪। প্রোবায়োটিকের কাজ করে
জিলিপিতে দই থাকে। তা ছাড়া জিলিপি বানানোর যে পদ্ধতি তাতেও মিশ্রণটিকে মজিয়ে নিয়ে বানানো হয়। এই পদ্ধতিতে খাবারটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ হয়। সায়েন্স ডিরেক্ট নামের জার্নালেও এর উল্লেখ রয়েছে।
সতর্কতা
তবে এ সবের বাইরে জিলিপি খাওয়ার অনেক ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এটি ওজন বৃদ্ধি করে। ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য জিলিপি মোটেই ভাল নয়। দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্যও এটি ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিনি থাকায় তা শরীরের নানা রকম ক্ষতিও করতে পারে। তবে পুষ্টিবিদ বলছেন, উৎসবে এক দিন, একটি বা দু’টি জিলিপি খেলে ততটা ক্ষতি হবে না। তবে অবশ্যই ডায়াবিটিসের রোগীর জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।