পেট, কোমর বা ঊরুতে সুচ ফোটানোর ঝক্কি থাকবে না। ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নেওয়ার ভয় থেকে মুক্ত হতে চলেছেন ডায়াবিটিসের রোগীরা। ইনসুলিন এ বার মুখ দিয়ে টানলেই হবে। বিশ্বের বাজারে আগেই এসেছিল ‘ওরাল ইনসুলিন’। প্রথম বার দেশের বাজারেও নিয়ে এল মুম্বইয়ের ওষুধ নির্মাতা সংস্থা সিপলা।
২০১৫ সালে ওরাল ইনসুলিন প্রথম তৈরি করে আমেরিকার কানেক্টিকাটের ম্যানকাইন্ড কর্পোরেশন। সে দেশের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ) ওষুধটিকে স্বীকৃতি দেয়। এর নাম ‘আফ্রেজ়া’। ওষুধটি এ দেশে নিয়ে আসা যায় কি না, তা নিয়ে কথাবার্তা চলছিল। এ দেশে মানুষজনের শারীরিক অবস্থা বিচার করে ওরাল ইনসুলিনের কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষাও চলছিল। অবশেষে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থার অনুমোদন পেয়ে ওষুধটি এ দেশের মানুষজনের জন্যও নিয়ে আসা হল। সিপলার উদ্যোগে এখানেও ওষুধটির উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ থেকে তৈরি ইনসুলিন হরমোনই যত নষ্টের গোড়া। এই হরমোনের ক্ষরণ কম হলে বা বিটা কোষই নষ্ট হতে থাকলে গোলমাল বাধে শরীরে। ইনসুলিনের অভাবে খাবার থেকে আসা গ্লুকোজ় আর জারিত হতে পারে না। দলা দলা হয়ে জমতে থাকে রক্তে। তখনই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। টাইপ ১ ডায়াবিটিসে ইনসুলিনের জন্মদাতা বিটা কোষগুলি নষ্ট হতে থাকে। তখন বাইরে থেকে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। ইনসুলিন ইঞ্জেকশন ত্বকের নীচেই নেওয়া হয়। সুচ ফুটিয়ে ইনসুলিনের ডোজ় নেওয়ার ঝক্কি অনেক। তা ছাড়া ইনসুলিন সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ না করলে সেটি নষ্ট হয়ে যায়। তবে ওরাল ডোজ়ে এত ঝামেলা নেই। মুখে স্প্রে করলেই হল। ওষুধ লালার মাধ্যমে সরাসরি রক্তে গিয়ে মিশবে।
সিপলার তরফে জানানো হয়েছে, ওরাল ইনসুলিনের ডোজ় নেওয়ার ১২ মিনিটের মাথায় সেটি কাজ করা শুরু করবে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রক্তে বাড়তি শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য খুবই কার্যকরী হবে এই ওষুধ।