মশাবাহিত হয়েই ছড়ায়। বর্ষার সময়ে এই ভাইরাসেরও উৎপাত বাড়ে। ভারতে তেমন ভাবে না হলেও পশ্চিমের দেশগুলিতে রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে ওঠে ডঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মতোই আরও এক ভাইরাস। কলোরাডোয় ইতিমধ্যেই এক জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণে। অসুস্থ জনা পঞ্চাশ। সংক্রমণ ঘটেছে আমেরিকার আরও কিছু জায়গাতেও। ভাইরাসটি আবারও চরিত্র বদলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কি না, সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’ (সিডিসি)।
ভাইরাসটির নাম ‘ওয়েস্ট নাইল’। একসময়ে এ দেশের কেরল ও অসমে রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিল। ২০২৩ সালে কলোরাডোতেই মহামারির মতো ছড়িয়েছিল এই ভাইরাস। মৃত্যু হয়েছিল কম করেও ৫১ জনের। সংক্রমিত হয়েছিলেন শতাধিক। গত বছর আমেরিকায় হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছিলেন এই ভাইরাসে। আবারও এই ভাইরাসের দাপট শুরু হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে।
কী এই ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস?
ডেঙ্গির মতোই মশাবাহিত রোগ। সাধারণত কিউলেক্স মশা তাদের লালায় এই ভাইরাসকে বয়ে বেড়ায়। পাখির দেহ থেকে মশার মাধ্যমে এই ভাইরাস ঢোকে মানুষের শরীরে। আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস ঘটিত রোগের প্রাদুর্ভাব সবথেকে বেশি।
আরও পড়ুন:
কী রোগ ছড়ায়?
ওয়েস্ট নাইল শরীরে ঢুকলে প্রথম প্রথম রোগের উপসর্গ বোঝা যায় না। সাধারণ জ্বর, বমি ভাব, মাথাব্যথা হয় রোগীর। কিছু ক্ষেত্রে ফ্লু-এর মতো উপসর্গ দেখা দেয়। নাইল ভাইরাস যদি কোনও ক্রমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়, তা হলেই বিপদ। মেনিনজাইটিসের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে প্রদাহ হবে, মাথা যন্ত্রণা মারাত্মক আকার নেবে, ঘাড় শক্ত হয়ে যেতে পারে। শিশু ও বয়স্ক, যাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। এতে স্নায়বিক রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা অনেক বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা কী?
ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসকে কাবু করার মতো কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক নেই। রোগের উপসর্গগুলি দমিয়ে রাখার চিকিৎসা করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক রোগ সারাতে কাজে লাগে না। তাই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়লে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত হবে না। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হতে পারে।