ভিটামিন ডি-এর উৎস যেমন খাবার, তেমনই এই ভিটামিন মেলে সূর্যালোক থেকেও। সূর্যালোকের সাহায্যে ভিটামিন ডি৩ মানুষের ত্বকেই তৈরি হয়। ভারতে সূর্যালোকের অভাব নেই। তা সত্ত্বেও ভিটামিন ডি-র অভাব হতে পারে কেন?
ইংল্যান্ডের ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, দক্ষিণ ভারতের শহরতলি এবং গ্রামীণ এলাকায় অনেকের মধ্যেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তার আগে উত্তর ভারতেও সমীক্ষা চলেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের একটি অংশে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির মাত্রা ৯১.২ শতাংশ। দেখা গিয়েছে, ভারতে পঞ্চাশোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে সেই মাত্রা আরও বেশি, প্রায় ৯৪ শতাংশ।
শরীরের জন্য নানা ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ প্রয়োজন। তবে ভিটামিন ডি নিয়ে চর্চার কারণ হল, এর প্রয়োজনীয়তা এবং ভূমিকা। ভিটামিনটির অভাবে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ও সার্বিক ভাবে সুস্থ থাকতেও এর ভূমিকা রয়েছে। ভিটামিন ডি শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণেও সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদ নন্দিনী সরবটে বলছেন, ‘‘সাধারণত লিভার বা সিস্টিক ফাইব্রোসিস, আলসারেটিভ কোলাইটিস, সেলিয়্যাক ডিজ়িজ়ের মতো সমস্যা থাকলে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হতে পারে। তখন ওষুধ খেলেও ভিটামিনের অভাব দূর করা যায় না।’’
খালি পেটে বা খুব কম ফ্যাট যুক্ত খাবার খেয়ে ভিটামিন ডি-এর ওষুধ খেলে কঙ্ক্ষিত ফল মিলবে না।
পুষ্টিবিদ অশ্লেষা জোশী জানাচ্ছেন, কয়েকটি খাবার এবং কিছু কিছু উপাদান ভিটামিন ডি শোষণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন, ফাইটেট। ডাল, দানাশস্য জাতীয় খাবারে এই উপাদান মেলে। এ ছাড়া অতিরিক্ত কফি খেলেও সমস্যা হতে পারে। পাকস্থলীর পক্ষে ভিটামিন ডি শোষণ করা কঠিন হয়ে যায় কখনও কখনও। অ্যালকোহলও সমস্যার কারণ হতে পারে। ভিটমিন ডি-এর কার্যকারিতা বজায় রাখতে লিভারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তবে, কেউ নিয়মিত অ্যালকোহল খেলে লিভারের ক্ষমতা কমবে। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি শোষণে অসুবিধা হতে পারে। উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার পেটের পক্ষে ভাল হলেও, কখনও কখনও তা থেকে সমস্যা হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, ডিম, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো, তৈলাক্ত মাছ খাদ্যতালিকায় রাখতে পারলে ভাল। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ভিটামিন ডি শোষণে সাহায্য করে। ফাইটেট মিললেও, ডাল বা দানাশস্যও বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, পুষ্টিতে ভারসাম্য রাখাও জরুরি। তবে যে কোনও খাবারই খেতে হবে পরিমিত।