Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Breastfeeding

স্তন্যপান করালে ওজন বেড়ে যায়, কতটা ঠিক এই ধারণা?

ইদানীং ছ’মাসের ঢের আগেই শিশুকে কৃত্রিম দুধ, বাজারচলতি শিশুখাদ্য বা অন্য খাবারে অভ্যস্ত করিয়ে ফেলছেন বহু মা-ই। এই প্রবণতা কেন বাড়ছে? সমাধান কোন পথে?

কোন কোন কারণে মহিলাদের শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় দুধ তৈরি হয় না?

কোন কোন কারণে মহিলাদের শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় দুধ তৈরি হয় না? ছবি: শাটারস্টক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৩৮
Share: Save:

শিশু কাঁদছে, নিশ্চই পেট ভরছে না ভাল করে। শুধুমাত্র মায়ের দুধে কি আর পেট ভরে! মায়ের দুধের চেয়ে বাজারচলতি কৃত্রিম দুধের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। স্তন্যপান করালেই ওজন বেড়ে যাবে, ফিগারও নষ্ট হবে। খুদেকে দুধ খাওয়ানো নিয়ে এমন চিন্তাভাবনা এখনও ঘুরপাক খায় সর্বত্র। চিকিৎসকেরা বলছেন, বাস্তবটা উল্টো। জন্মের পরে প্রথম ছ’মাস শুধু স্তন্যপান করালে শিশুর যথাযথ পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধি তো বটেই, মায়ের ওজন বৃদ্ধি কিংবা চেহারা নষ্ট হওয়ার বদলে বরং তাঁদেরও ফ্যাট ঝরে অনেক দ্রুত।

ইদানীং ছ’মাসের ঢের আগেই শিশুকে কৃত্রিম দুধ, বাজারচলতি শিশুখাদ্য বা অন্য খাবারে অভ্যস্ত করিয়ে ফেলছেন বহু মা-ই। এ কালের মায়েরা বেশির ভাগই কর্মরতা। ফলে মাতৃত্বের ছুটি ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ছ’মাস একটানা সন্তানকে শুধুমাত্র স্তন্যপান করাতে পারেন না। অনেকের শরীরে আবার দুধের উৎপাদন ঠিক মতো হয় না, সে ক্ষেত্রেও ভরসা রাখতে হয় ফর্মুলা দুধের উপরেই।

যে মায়েরা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন, তিনি যাতে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার জল অবশ্যই খান, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।

যে মায়েরা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন, তিনি যাতে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার জল অবশ্যই খান, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।

বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সাধারণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন নতুন মায়েরা। তার মধ্যে একটি সমস্যা হল যত্নের অভাব। স্বাভাবিক প্রসব হলে দুধের উৎপাদন অনেক তাড়াতাড়ি হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব হল ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা সময় লেগে যায় দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে। এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় মাকে একেবারেই বিশ্রামের মধ্যে থাকতে হবে। পরিবারের লোকেদের সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, তবেই সেই মা প্রতি ২ ঘণ্টা অন্তর শিশুকে দুধ খাওয়াতে পারবেন।

অপর্যাপ্ত দুধ উৎপাদন নতুন মায়েদের আরেকটি চিন্তার কারণ। এ ক্ষেত্রে কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার প্রাথমিক পর্যায় থেকে মায়েদের খাওয়াদাওয়ার দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে। ওই সময় প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য অপরিহার্য। যে মায়েরা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন, তিনি যাতে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার জল অবশ্যই খান, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। ডায়েটে বেশি করে বাদাম, দুগ্ধজাত খাবার, মরসুমি ফল, মৌরি রাখুন। মায়ের নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়া জরুরি। মা যদি সুস্থ থাকেন, তা হলেই ঠিক ভাবে স্তন্যপান করাতে পারবেন সন্তানকে।

যে সব খাবার স্তন্যপান করানোর সময়ে খাওয়া যায় না, সে দিকে নজর দেওয়া বেশি জরুরি। তার মধ্যে সবের উপরে রয়েছে ক্যাফিনযুক্ত খাবার। ক্যাফিন শুধু কফি নয়, চা, চকোলেটেও থাকে। এ সময়ে কোনও ভাবেই মদ্যপান, ধূমপান করা যাবে না। সে সব দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।

অনেক মায়েদের শরীরে আবার দুধের উৎপাদন বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে স্তন ভারী হয়ে যাওয়া, স্তনে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যায় ভোগেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে মায়েরা স্তন্যপান করানোর পর কী ভাবে বাকি দুধ বার করে দেবেন, চিকিৎসকের কাছ থেকে সেই প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। স্তন্যপানের সময় শিশুদের আচরণের কারণে স্তনবৃন্তে আঘাত লাগে, সে ক্ষেত্রে মায়েদের মলম লাগাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parenting Tips
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE