কফিও খাওয়া হবে আবার ক্যাফিনও শরীরে ঢুকবে না, এমনটা কি সম্ভব? কফি বিন্স থেকে যে কফি পাউডার তৈরি হয় তাতে ভরপুর মাত্রাতেই ক্যাফিন থাকে। যতই দুধ-চিনি ছাড়া কফি খান না কেন, ক্যাফিন শরীরে ঢুকবেই। হার্ট, ডায়াবিটিস বা ক্যানসারের রোগীদের তাই কিছু ক্ষেত্রে কফি খেতে বারণই করা হয় বা খেলে খুবই পরিমিত খেতে হয়। কিন্তু এমন এক ধরনের কফি আছে, যা বানাতে কফি বীজের প্রয়োজন নেই। তাই সেই কফিতে ক্যাফিনের ছিটেফোঁটাও নেই।
কী সেই কফি?
খেজুর বীজ থেকে তৈরি কফির স্বাদ ও পুষ্টিগুণ আরও বেশি বলেই জানানো হয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ হোম সায়েন্স’-এ। গবেষণাপত্রটিতে দাবি করা হয়েছে, খেজুর বীজ থেকে যে কফি তৈরি হয়, তাতে বিন্দুমাত্র ক্যাফিন থাকে না। এই কফি খেলে কোনও অসুখবিসুখ হওয়ার ঝুঁকি নেই। হার্টের রোগ, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সাধারণ কফির বিকল্প হিসেবে খেজুর বীজের কফি খেতেই পারেন।
আরও পড়ুন:
এ দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর একটি গবেষণাপত্রেও খেজুর বীজের কফির উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, এটি সাধারণ কফির থেকে অনেক হালকা, খেতেও সুস্বাদু। এর স্বাদ অনেকটা বাদামের শরবতের মতো। শুধু বা দুধের সঙ্গে খাওয়া যাবে এই কফি। এর সঙ্গে দারচিনি, লবঙ্গ বা অন্য কোনও মশলা মিশিয়ে খেলেও উপকার হবে।
কী ভাবে বানানো হয় এই কফি?
খেজুর বীজ ভাল করে শুকিয়ে নিয়ে তা রোস্ট করে নেওয়া হয় কফি বিন্সের মতোই। ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৩০-৪০ মিনিট রোস্ট করলে খেজুর বীজের রং বদলে কফি বিন্সের মতোই কালচে খয়েরি হয়ে যায়। তার পর একই রকম ভাবে তার থেকে পাউডার তৈরি করে নেওয়া যায়।
খেজুর বীজের কফি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন আছে। এই কফি খেলে হজমের সমস্যা দূর হবে, শরীরে প্রদাহ কমবে এবং রক্তাল্পতার ঝুঁকিও কমবে। অতিরিক্ত ক্যাফিন খেলে যেমন ঘুমের সমস্যা, মাথাযন্ত্রণা হয়, এই কফি খেলে তা হবে না বলেই দাবি গবেষকদের। বরং এই কফি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাবে, কিডনির স্বাস্থ্যও ভাল রাখবে। গবেষকেরা আরও জানাচ্ছেন, খেজুর বীজের কফি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাই হার্টের রোগীরাও খেতে পারবেন এই কফি।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। খেজুর বীজের কফি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। সকলের শরীরের জন্য এই কফি উপযোগী হবে কি না, তা নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।