অনেকেই বলেন, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা মানে যেন বাবা-মায়েদেরও পরীক্ষা! জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা বা মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সে কথার ধার-ভার আরও বাড়ে। বেশির ভাগ বাবা-মা উৎকণ্ঠায় বিনিদ্র রাত কাটান। অনেকেই অফিস ছুটি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসেও থাকেন। ছেলে বা মেয়ে ঠিকমতো লিখতে পারছে কি না, প্রশ্ন জানা এসেছে কি না, এই সব ভেবে উদ্বেগেও ভোগেন। সব মিলিয়ে শরীর ও মনের উপর ধকল কিছু কম যায় না। তাই অভিভাবকদেরও উচিত শরীরের যত্ন নেওয়া। এই সময়টাতে শরীর আর্দ্র রাখা খুব জরুরি। তার জন্য কোন কোন পানীয় খেলে শরীর তরতাজা থাকবে, তা জেনে রাখা ভাল।
পরীক্ষা হলের বাইরে অপেক্ষা করার সময়ে পর্যাপ্ত জল তো খেতেই হবে, পাশাপাশি ঘরে তৈরি কিছু ‘ডিটক্স’ পানীয় সঙ্গে রাখতে পারেন। রাস্তায় বিক্রি হওয়া জল, লস্যি বা রঙিন শরবত ভুলেও খাবেন না। বরং বোতলে করে বাড়িতে তৈরি পানীয়ই নিয়ে যান সঙ্গে। নিজেও খাবেন এবং সন্তানকেও খাওয়াতে পারেন। তেমনই কয়েকটি পানীয়ের হদিস রইল। কী ভাবে বানাবেন জেনে নিন।
শসা, লেবুর রস এবং পুদিনা

শসা, লেবুর রস এবং পুদিনার ডিটক্স পানীয়। ছবি: ফ্রিপিক।
বড় একটি কাচের পাত্রে একটি গোটা শসার কুচি, খোসা-সহ পাতিলেবু, কয়েকটি পুদিনাপাতা দিন। তার পর জল ঢেলে রাখুন অন্ততপক্ষে ঘণ্টা দুয়েক। সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে পারলে ভাল হয়। সকালে সেই পানীয়ই ছেঁকে নিয়ে বোতলে করে নিয়ে যান।
সারা দিন ধরেই এই পানীয়ে চুমুক দেওয়া যায়। শরীর আর্দ্র রাখতে, হজমশক্তি এবং বিপাকহার বৃদ্ধি করতে দারুণ কাজ করে এই পানীয়টি।
ফলের ‘ডিটক্স’

ফলের ‘ডিটক্স’। ছবি: ফ্রিপিক।
বড় মুখের একটি জার বা কাচের বোতল নেবেন। এ বার সেটি জল দিয়ে ভর্তি করে, তাতে খোসাসমেত ছোট ছোট টুকরো করে কাটা ফল ফেলে দেবেন। মরসুমি যে কোনও ফল নিতে পারেন। এ বার জলে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে জারের মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। সারা রাত ফ্রিজে রেখে দিলে ভাল। পর দিন সেই জল ছেঁকে অল্প অল্প করে খান।
ফলের রস ও ফাইবারে সমৃদ্ধ এই জল খেতেও সুস্বাদু। ফলের ‘ডিটক্স’ পানীয় সন্তানকেও খাওয়ান। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
ডাবের জলের শরবত

ডাবের জলের শরবত। ছবি: ফ্রিপিক।
শুধু ডাবের জল না খেয়ে তার সঙ্গে আরও কয়েকটি উপকরণ মিশিয়ে নিন। ২ গ্লাস মতো ডাবের জলের সঙ্গে ১টি গোটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে তাতে কয়েকটি পুদিনা পাতা ফেলে দিন। এ বার একটি কাচের জারে এই জল ঢেলে রাখুন। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা রেখে খেতে পারেন। এই জল শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করবে, ক্লান্তিভাব কমাবে। রোদে ঠায় বসে থাকতে হলে এই জল খুবই উপকারে আসবে।
তরমুজের ‘ডিটক্স’ পানীয়

তরমুজের ‘ডিটক্স’ পানীয়। ছবি: ফ্রিপিক।
পানীয় বানাতে প্রয়োজন ৭-৮ টুকরো তরমুজ, লেবুর রস। একটি কাচের জারে তরমুজের টুকরোগুলি দিয়ে তাতে লেবুর রস যোগ করে, পরিমাণমতো জল ঢালুন। পুদিনা পাতাও মেশাতে পারেন। তার পর সেই পানীয় ফ্রিজে রেখে দিন কয়েক ঘণ্টা। তবে ফ্রিজ থেকে বার করেই ঠান্ডা পানীয় খাবেন না। বোতলে ভরে সঙ্গে রেখে দিন। সারা দিন অল্প অল্প করে খান।
পুদিনা-ধনেপাতার জল

পুদিনা-ধনেপাতার জল। ছবি: ফ্রিপিক।
পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, মশলার মধ্যে আদা, দারচিনি, গোটা হলুদ, লবঙ্গ ইত্যাদি ভিজিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। এই পানীয়ে এত বেশি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চারদিকেই নানা সংক্রামক অসুখবিসুখ হচ্ছে। তাই এই পানীয় নিজেও খেতে পারেন ও সন্তানকেও খাওয়াতে পারেন। এতে শরীর সুস্থ ও তরতাজা থাকবে।