শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা যথাযথ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ঘুম ভাল হয়। চিকিৎসকেরা বলেন, শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা থেকে ফুসফুসে রোগ ও হৃদ্রোগ হতে পারে। তা ছাড়া পরিবেশে দূষণ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এই সময়ে তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে রাখা উচিত। বিশেষ করে ফুসফুসের জোর বাড়ানো খুবই জরুরি। ব্রিদ ট্রেনিংয়ের সাহায্যে সঠিক ভাবে বাতাস টেনে নেওয়া ও ছাড়া আয়ত্তে আসে। এর ফলে শরীরের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক হয়, শরীরে জমে থাকা নানান দূষিত পদার্থ সহজে বেরিয়ে যায়।
ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের কথায়, শ্বাসপ্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম আছে, যা রোজ করলে ভাল। বিশেষ করে ঘুম থেকে ওঠার আধ ঘণ্টার মধ্যে শ্বাসের অন্তত তিনটি ব্যায়াম করতে পারলে ফুসফুসের জোর বাড়বে। হাঁপানি বা সিওপিডি-র সমস্যা থাকলে, খুবই কার্যকরী হবে এই শ্বাসের ব্যায়াম। শ্বাসকষ্টের সমস্যা ভোগাবে না।
শ্বাসের কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম আছে যা অভ্যাস করলে শ্বাস নেওয়া শ্বাস ছাড়া সঠিক ভাবে আয়ত্তে আসে। একে বলে ‘ব্রিদ ওয়ার্ক’। কী ভাবে করবেন?
আরও পড়ুন:
১) শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে পিঠ সোজা করে পদ্মাসনে বা সুখাসনে বসতে হবে। চোখ বন্ধ রেখে মনোনিবেশ করতে হবে শরীরে শ্বাসবায়ুর প্রবেশ এবং বেরিয়ে যাওয়ার উপরে। নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস নিন। সাধ্যমতো কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। তার পর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। পুরো পদ্ধতিটি সাত-আটবার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাভি যেন বাইরের দিকে ঠেলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়ার সময়ে যেন নাভি ভিতরের দিকে ঢুকে যায়।
২) আরামদায়ক কোনও একটি আসনের ভঙ্গিতে বসুন। মাথা ও মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শ্বাস নিন। শ্বাস ছাড়ার সময় পেটের পেশীর উপর চাপ দিতে হবে। দ্রুত শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। প্রতিটি সেট অন্তত দশ বার করে করতে হবে। পাঁচটি সেটে সম্পূর্ণ হয় এই প্রাণায়ামের অভ্যাস।
৩) পিঠের মেরুদণ্ড টানটান করে প্রথমে মুখ দিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফুসফুসের সব বাতাস বার করে দিতে হবে। আবার গভীর শ্বাস নিয়ে যতটা সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ভরে নিতে হবে। এর পর যতক্ষণ সম্ভব শ্বাস আটকে রেখে আবার মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। অর্থাৎ নাক দিয়ে শ্বাস টেনে তা কিছু ক্ষণ ধরে রেখে মুখ দিয়ে ছাড়তে হবে। এতে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।