প্রায় রোজই বাথরুমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এই নিয়ে হাসি-ঠাট্টা, কখনও বা অভিযোগ শুনতে হয়। এই অভিজ্ঞতা কম-বেশি প্রায় সব বাড়িতেই আছে। এরই মধ্যে মলের সঙ্গে রক্ত দেখেই বুক দুরু দুরু! কিন্তু অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য বা অর্শের সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন। অথচ মলের সঙ্গে রক্তপাত এবং মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন কোলন ক্যানসারের বা মলাশয়ের ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ষাটোর্ধ্বদের মধ্যে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি দেখা গেলেও ইদানীং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বাড়তি ওজন, টাটকা খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার খাওয়া ও অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে অল্প বয়সে কোলোরেক্টাল ক্যানসার হানা দিচ্ছে মানুষের শরীরে। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সাহায্যে মলদ্বার ও অন্ত্রের ক্যানসারকে জব্দ করা যায়। তাই প্রাথমিক উপসর্গ দেখা গেলেই ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন:
যদি মাঝবয়সে মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কিছুতেই সারতে না চায়, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ক্যানসারের উপসর্গ হিসাবে অনেক সময় মলের সঙ্গে তাজা রক্ত বেরোতে পারে, বেশির ভাগ মানুষই যা পাইল্স বলে ভুল করেন। তাই সতর্ক থাকুন। অর্শ রোগীদের ক্ষেত্রে যে রক্তপাত হয় তা সাধারণত লাল। অন্য দিকে, কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই রক্ত কালচে রঙের হয়। কালচে রং দেহের অভ্যন্তর থেকে নির্গত রক্তের সূচক।
এ ছাড়া আর কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন?
১) তলপেটে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা এই রোগের উপসর্গ হতে পারে। অর্শের ক্ষেত্রে কিন্তু পেটে তেমন ব্যথা অনুভূত হয় না। কোলন ক্যানসারে গ্যাসের ব্যথার মতো যন্ত্রণা, পেটে মোচড় দেওয়ার মতো সমস্যাগুলি লক্ষ করা যায়।
২) কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে অন্ত্র থেকে রক্তপাত হয়, তাই রক্তাল্পতা তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। রক্তাল্পতা ডেকে আনে ক্লান্তি।
৩) দিনে কত বার মলত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হয়, আচমকা তার তারতম্য ঘটা কোলন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পেট পরিষ্কার হওয়ার পরেও বার বার মলত্যাগের অনুভূতি হয়।
৪) সারা ক্ষণ বমি বমি ভাব, গা গুলিয়ে ওঠা, ওজন কমে যাওয়াও কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
৫) কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে মলত্যাগের সময় সাধারণত অর্শের মতো যন্ত্রণা হয় না। তবে ক্যানসার বাড়াবাড়ি পর্যায় পৌঁছে গেলে কিন্তু এ ক্ষেত্রেও মলত্যাগের সময় তীব্র যন্ত্রণা হতে পারে।