Advertisement
E-Paper

জরায়ুতে সিস্টের সমস্যা হলে বিগড়ে যায় হরমোনের ভারসাম্য, ৬ কৌশল মানলেই হতে পারে সমাধান

‘পিসিওএস’-এর সমস্যা থাকলে হরমোনের ভারসাম্যেও তার প্রভাব পড়ে। কী ভাবে জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণে এমন অসুখ বশে রাখা যায়, জেনে নিন ৬ কৌশল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১১:২৬

—প্রতীকী চিত্র।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বৃদ্ধির মতো লক্ষণ মহিলাদের ক্ষেত্রে কিছু নতুন নয়। নানা রকম আলোচনা, চর্চায় অনেকেই জেনে গিয়েছেন এগুলি পলিসিস্টিক ওভারির উপসর্গ হতে পারে।

পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজকেই ছোট করে ডাকা হয় ‘পিসিওডি’। ‘পিসিওএস’-এর পুরো কথা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম। পিসিওডি এবং পিসিওএস দুই ক্ষেত্রেই সমস্যাটি হরমোনের তারতম্যের হাত ধরে ঘটে। সাধারণত একটি বয়স অতিক্রম করার পর মেয়েদের ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসেই ডিম নির্গত হয়। নিষেক না ঘটলে সেই ডিম দেহ থেকে বেরিয়ে যায় রক্তের মাধ্যমে।

পিসিওডি-র ক্ষেত্রে এই ডিম নির্গত হওয়ার নিয়মটি সঠিক রীতি মেনে হয় না। কখনও অপরিণত ডিম, কখনও বা আংশিক সম্পূর্ণ ডিমে ভরে যায় ডিম্বাশয়। এই অপরিণত ডিমগুলো জমে সিস্টের আকার ধারণ করে। পিসিওসের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় পুরুষ হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ডিম্বাশয়ে ধার ঘেঁষে ফোস্কার মতো সিস্ট জন্ম নেয়। এতে ডিম্বাশয় ভারী হয় তো বটেই, সঙ্গে মেল হরমোনের বাড়াবাড়ির দরুন শরীরে পুরুষালি বৈশিষ্ট্যও চোখে পড়ে। শরীরে রোম বাড়ে। গোঁফের রেখা দেখা দিতে পারে। ওজন বাড়ার কারণে নানা জটিলতা আসে।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ক্যালোরি মেপে খেয়েও ওজন বৃদ্ধি, মহিলাদের শরীরে গোঁফের রেখা দেখা দেওয়া— এমন অনেক কিছুই পিসিওএসের উপসর্গ। পিসিওএস হলে লিউটিনাইজ়িং হরমোন এবং ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের মাত্রারও হেরফের হয়, যার ফলে ভাল মানের ডিম তৈরি হতে পারে না। ওষুধপত্র থাকলেও চিকিৎসকেরা পিসিওএস বা পিসিওডির মতো অসুখে জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণেও জোর দেন।

কী ভাবে হরমোনের ভারসাম্য বশে রাখা সম্ভব?

চিকিৎসকেরা বলেন, পিসিওএস-র সমস্যার সমাধান করতে হলে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে রাশ টানা প্রয়োজন। নিয়ন্ত্রিত যাপন শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

১। পুষ্টিকর খাবার এবং কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ভারসাম্যই শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে হলেও পুষ্টির ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। শাকসব্জি, ফল, প্রোটিন নিয়ম করে এবং পরিমাণমতো খেলে ওজন যেমন বশে থাকবে তেমন ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বজায় থাকবে। এই হরমোনের হেরফের হলেও শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। ওজন বেড়ে বা কমে যেতে পারে।

২।শরীরচর্চার মধ্যে থাকলেও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। পিসিওএস-এর সমস্যা থাকলে নিয়ম করে হাঁটা বা দিনে ১৫-২০ মিনিট যোগাসন করা ভাল। এতে শরীরের প্রতিটি প্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকবে, ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা কমবে।

৩। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি। দিল্লির স্ত্রী রোগ চিকিৎসক রীতা বক্সী জানাচ্ছেন, ঘুমের অভাব হলে ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’-এর সমস্যা আরও বেড়ে যায়, কর্টিসলের হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যা পিসিওএসের উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। ঘড়ি ধরে ঘুমোনোর অভ্যাস, বেশি রাত না করে শোয়ার মতো অভ্যাসগুলি স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

৪। নিয়ম করে জল খাওয়া প্রয়োজন। শারীরবৃত্তীয় কাজ ঠিকভাবে হওয়ার জন্য জলের দরকার। জল কম খেলেও শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘পিসিওএস এর সমস্যা পুদিনা চায়ের মতো ভেষজ পানীয়ে চুমুক দিলে উপকার মেলে।’’

৫। মানসিক চাপ হরমোনের হেরফেরের অন্যতম কারণ। দু্শ্চিন্তা, মানসিক চাপ পুরোপুরি ছেঁটে ফেলা সম্ভব না হলে যতটা সম্ভব মনেরও যত্ন নেওয়া দরকার। যোগব্যায়াম, ধ্যান, প্রাণায়ামে মন শান্ত হয়। মানসিক চাপও কিছুটা কমে। এই ধরনের শরীরচর্চার অভ্যাস পরোক্ষে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৬। মুখরোচক খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার পিসিওএসের সমস্যার নেপথ্যে কারণ হতে পারে। এই ধরনের খাবার নুন, চিনি বেশি থাকে। ক্যালোরির পরিমাণও বেশি। নিয়মিত এই ধরনের খাবার স্থূলত্বের মতো অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যা থেকে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।

PCOS Hormone Imbalance Health care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy