খাবার খেতে খেতে জল খাওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনই প্রাতরাশে পাউরুটি বা ডালিয়া-ওট্সের সঙ্গে ফলের রস খাওয়াও স্বাস্থ্যকর নয়। খাবার খেতে খেতে মদ্যপানও করেন অনেকে। এই অভ্যাসও কি ভাল? শরীর সুস্থ রাখতে দিনে পর্যাপ্ত জল খেতেই বলা হয়। ফলেরও রসেরও নিজস্ব পুষ্টিগুণ আছে। কিন্তু ‘ফুড কম্বিনেশন’-এর নিয়ম বলছে সব খাবারের সঙ্গে সব রকম তরল ঠিক পেটে সয় না। তাই এই বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি।
ভাত বা রুটি খাওয়ার মাঝে জল খেলে তা কখনওই হজম হবে না। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর কথায়, খাবার খাওয়ার পরে তা লালারসে মিশে পাকস্থলীতে পৌঁছয়। সেখানে হজম হতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগে। এ বার সেই খাবার কোলনে গিয়ে সেখান থেকে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। পৌষ্টিক তন্ত্রের একটা স্বাভাবিক তরল-কঠিন সাম্য রয়েছে। যদি খেতে খেতে কেউ বেশি জল খেয়ে ফেলেন, তা হলে পৌষ্টিক রসগুলির সঙ্গে সেই জল মিশে গিয়ে গোলমাল বাধাবে। ফলে খাবার হজম হতে অনেক দেরি হবে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা তৈরি হবে। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, খাবর খেতে খেতে যাঁরা বেশি জল খান, তাঁদের বাড়তি ক্যালোরি পোড়ে না। ফলে স্থূলতার সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বাড়ে।
আরও পড়ুন:
প্রাতরাশের সময়ে খাবারের সঙ্গে ফলের রস খাওয়ার অভ্যাসও আছে অনেকের, যা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ পাচক রস অম্ল, আর এর সঙ্গে যদি লেবু বা কোনও টক জাতীয় ফলের রস মিশে যায়, তা হলে শরীরে অ্যাসিডের আধিক্য হবে। যে কারণেও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ‘ফুড কম্বিনেশন’-এর নিয়ম মেনে চললে লেবু, কমলালেবুর মতো ফলের রসের সঙ্গে কলা বা শুকনো ফল একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এতে বদহজম, মাথা যন্ত্রণার সমস্যা বাড়বে। আবার কলার সঙ্গে তরমুজের রস, আমের সঙ্গে আনারসের রস অথবা পাকা পেঁপে খেয়েই তার পরে লেবুর রস খেলে হিতে বিপরীত হবেই।
খাবারের সঙ্গে মদ্যপান করলে তা পেটে গিয়ে বিষক্রিয়াও করতে পারে। বিশেষ করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বেশি নুন দেওয়া খাবার, বার্গার বা পাউরুটি জাতীয় খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলেই তা পেটের গোলমালের কারণ হবে। চিজ়, আইসক্রিম জাতীয় কোনও খাবার মদ্যপানের সময় কিংবা আগে-পরে খাওয়া উচিত নয়। অ্যালকোহল ও দুধ একসঙ্গে খেলে পেটে সংক্রমণ, পেটে ব্যথা এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।