Advertisement
E-Paper

মোবাইলে আসক্তি কি অবসাদের কারণ হয়ে উঠছে? বিপদে কমবয়সি মেয়েরাই, কী বলছে নতুন গবেষণা?

মোবাইলে আসক্তির সঙ্গে অবসাদের সম্পর্ক কী? কেন কমবয়সি মেয়েরাই এর শিকার? বর্তমান প্রজন্ম কতটা বিপদের মুখে রয়েছে, তা জানালেন গবেষকেরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:০৩
Excessive screen times can increase depression among children, new study says

মোবাইলে আসক্তি থেকে কি গভীর অবসাদে যাচ্ছে তরুণীরা? ছবি: ফ্রিপিক।

ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে বেশি ‘লাইক’ না পড়লেই মুখ ভার হয়ে যায়। দিনভর বারে বারে স্ক্রল করে দেখা চলে, যে ঠিক ক’টা লাইক বাড়ল, কমেন্টে কে কী লিখল। তার মানে কি ছবিটা সুন্দর ওঠেনি? মোবাইলের ফিল্টারে আরও কয়েক পরত রং চাপিয়ে ঠিক তারকাদের মতো সৌন্দর্য আনার চেষ্টাও চলে। তরুণীরাই বেশি রয়েছেন এই তালিকায়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, কমবয়সি ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মোবাইলে আসক্তি অনেক বেশি। আর এই আসক্তিই অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

স্মার্টফোনের ‘স্ক্রিন টাইম’ চোখের ক্ষতি করে ঠিকই, কিন্তু তা মনের রোগেরও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এমনটাই দাবি করেছেন সুইডেনের গবেষকেরা। ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা দীর্ঘ সময়ে ধরে কমবয়সি মেয়েদের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে দাবি করেছেন, রাতের পর রাত জেগে মোবাইলে স্ক্রল করা, সমাজমাধ্যমের প্রতি আসক্তি এক দিকে যেমন স্বাভাবিক ঘুমের প্রক্রিয়াকে নষ্ট করছে, তেমনই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বহু গুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। পড়াশোনায় মনোযোগ কমছে, আপনজনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে, সামাজিক নানা বিষয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজের আলাদা জগৎ গড়ে তুলছেন তরুণীরা। কয়েক বছর আগে ‘ব্লু হোয়েল’ নামে এক অনলাইন গেমের দৌলতে বিশ্ব জুড়ে বহু তরুণ-তরুণী আত্মহননে প্ররোচিত হয়েছিলেন, তার ঢেউ আছড়ে পড়েছিল এ দেশেও।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন’, যার সঙ্গে অবসাদের গভীর সংযোগ রয়েছে বলেই দাবি করেছেন গবেষকেরা। জানাচ্ছেন, অল্পবয়সি মেয়েরা শুধু সমাজমাধ্যমই নয়, নানা অ্যাপভিত্তিক ও অনলাইন গেম, পর্নোগ্রাফিক ভিডিয়ো-সহ নানা বিষয়ে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এক সময়ে এই আসক্তি ছিল শুধু শহুরে সমস্যা। এখন কিন্তু তা শহরতলি, এমনকি গ্রামেও ছড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট মানসিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, আত্মকেন্দ্রিক করে তুলছে, নিরাপত্তাহীনতার কারণও হয়ে উঠছে।

এই বিষয়ে মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকারের মত, “অতিরিক্ত স্মার্টফোন, ট্যাব ব্যবহার খেলাধুলার অভ্যাস কমায়। ফলে স্থূলত্ব বাড়ে। মানুষের সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হতে হতে লোকজনের মাঝখানে নিজেকে গুটিয়ে রাখার মানসিক সমস্যাও তৈরি হয়।” শর্মিলা জানাচ্ছেন, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর যখন পড়াশোনায় ক্ষতি হয়, তা থেকে মনের চাপ বাড়ে। বিশেষ করে সে মোবাইলে যা দেখছে তা অন্য কেউ বুঝতে পারছে কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। মা বা বাবা বকাবকি করলে তাতেও মনের চাপ বাড়ে। সব মিলিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রাত ন’টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত চ্যাট করছে অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা। শরীর ভেঙে পড়ছে। সম্পর্কের নানা ওঠাপড়া থেকেও গভীর অবসাদ তৈরি হচ্ছে।

জীবনের বহু ক্ষেত্রেই স্মার্টফোন এখন বড় সহায়। কিন্তু তাকে কতটা ব্যবহার করা হবে, আর কতটা তার দ্বারা ব্যবহৃত হতে হবে, সেই রাশটা অনেক সময়েই নিজের হাতে থাকে না। আসক্ত হতে হতে নিজের জীবনের লাগামটা চলে যায় প্রযুক্তির হাতে। তাই সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ার পর তার যথাযথ ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ব্যাপারে লক্ষ রাখা অভিভাবকের কর্তব্য।

Screen Time anxiety Deep Depression
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy