পুজোর ক’দিন অনেকেরই বেশ অনিয়ম হয়েছে খাওয়াদাওয়ায়। এর পাশাপাশি ঘুমও হয়নি সময় মতো। শরীরচর্চাতেও ছিল ক’দিনের বিরতি। সব মিলিয়ে অজান্তেই অনেক ডায়াবেটিক রোগীর সুগারের মাত্রা বেশ খানিকটা বেড়েছে কয়েক দিনের মধ্যেই। ডায়াবিটিসের সমস্যায় যাঁরা কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা নিয়মিত ত্রিফলা খেতে পারেন। ত্রিফলা অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে টাইপ-টু-ডায়াবিটিসের রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রোগ-ব্যাধিকে ঠেকিয়ে রাখতে ত্রিফলার গুরুত্ব অনেক। আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা— এই তিন ফল শুকিয়ে তাদের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় ত্রিফলা। এই তিন ফল পৃথক ভাবেও আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী।
আমলকি ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এই ফল পেটের সমস্যা দূর করে। শরীরে জমে থাকা টক্সিন জাতীয় পদার্থ বার করে দিতেও আমলকি বেশ উপকারী। তা ছাড়া, রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেও আমলকির জবাব নেই। হরিতকিতেও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এর ব্যবহার করা যেতেই পারে। অন্য দিকে, বহেরা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, পেশির জোর বাড়াতে আর হাড় মজবুত করতেও বহেরা বেশ উপকারী।
বিভিন্ন গবেষণায় ত্রিফলার একাধিক গুণাগুণ উঠে এসেছে। কী কী গুণ রয়েছে ত্রিফলার?
১) মেদ ঝরিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই মিশ্রণ। বিপাকহার বাড়াতে এই মিশ্রণ দারুণ কাজ করে। গরমে হজমের সমস্যায় কমবেশি সকলেই ভোগেন। বদহজম দূর করতেও নিয়মিত ত্রিফলা খেতে পারেন।
২) রোজের অনেক অভ্যাস আমাদের শরীরে ক্যনসার বাসা বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্যানসারের মতো মারণরোগ ঠেকিয়ে রাখতেও সাহায্য করে ত্রিফলা। রোজ নিয়ম করে ত্রিফলা খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
৩) সারা ক্ষণ মোবাইল, কম্পিউটারের সামনে থেকে চোখের বারোটা বাজছে। ত্রিফলা কিন্তু চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল। ত্রিফলা চোখের সমস্যা, যেমন ছানি, গ্লকোমা, কর্নিয়াল ডিস্ট্রোফিস, কনজাঙ্কটিভাইটিস এবং প্রদাহ নিরাময় এবং প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৪) ত্বকের নানা সমস্যার দাওয়াই হতে পারে ত্রিফলা। নিয়মিত এই মিশ্রণটি খেলে ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি, ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতেও সাহায্য করে এটি।
৫) অনেকেই কেবল বর্ষাকালে নয়, সারা বছরই কমবেশি চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। নিয়মিত ত্রিফলা খেলে চুলের গোড়া মজবুত হয়, চুলের স্বাভাবিক রং বজায় থাকে, চুল পড়ার সমস্যা থেকেও রেহাই মেলে।
কী ভাবে খাবেন ত্রিফলা?
বেশ কিছু নামী সংস্থার ত্রিফলা বড়ি পাওয়া যায়। সেই ট্যাবলেট খেতে পারেন। এ ছাড়াও ত্রিফলা চূর্ণ পাওয়া যায়। এক চামচ ত্রিফলার গুঁড়ো এক কাপ জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে সেই জল খেতে হবে।